বাংলাদেশ বিভাগ
কবিতা করিডোর – বৈশাখী সংখ্যা ( এপ্রিল )
১. মুজিব ইরম
কবিবংশ
আদিপুস্তকোত্তর ১লা কুলজি
লিখিয়াছি কবিবংশ আদি সে-কিতাব, তবুও তো ধরে রাখি অতৃপ্তি অভাব। বংশ বংশ করি বেশ কেটে গেলো কাল, রক্তে জাগে সেই ভাষা যাবনী মিশাল। শ্রীকর নন্দীর বাণী দেশী ভাষা কহে, কবি শেখর এ-বংশে লৌকিক বিছারে। বঙ্গবাণী নাম ধরি আব্দুল হাকিম, ভাষাবংশে আদিগুরু আমি সে তো হীন। কী প্রকারে তার নামে প্রণামিব হায়, আতারে-পাতারে খুঁজি মনে ন জুয়ায়। সেই তো হয়েছে শুরু আমাদের দিন, ভুসুকুপা তস্য গুরু বাঙ্গালী প্রাচীন। আরো এক বংশবাতি সগীরের নামে, বৃন্দাবন দাস নমি চৈতন্য প্রচারে। বড়ুচণ্ডীদাস ভনে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, মুকুন্দ রামের নামে পরাই চন্দন। রামাই পণ্ডিত রচে পাঁচালি সঙ্গীত, প্রভুর চরণে মজে নিজ মত্ত চিত। সেই যে বাঁধিল গীত কানা হরিদত্ত, এ-মূর্খ রচিবে কী যে ভবেতে প্রমত্ত। বিজয় গুপ্তের নামে বংশবাতি পায়, ইরম মাগিছে দয়া বংশগরিমায়।
পরিশিষ্ট প্রণাম: প্রণামে-সুনামে গড়ি শব্দ-বাক্য-মিথ, পয়ারে-খেয়ালে শুধু গাই বংশগীত। অন্ধকার যুগে বাঁধি গয়েবি কামোদ, পটমঞ্জরীতে সঁপি সেই সুদবোধ। আমি যে বাঁধিবো তাল কুলিন রাগিনী, ভূর্জপত্রে নতজানু দয়া কী মাগিনী! তুমি কন্যা বেঁধো সুর মর্জি যদি হয়, এই বংশে জেগে থাকে চর্যাবিনিশ্চয়।
কবিবংশ
২য় ও সর্বশেষ কুলজি
সেই কবে ভাববশে ভুলিয়াছি ধাম, বিপ্রদাশ পিপিলাই ধরিয়াছি নাম। জয়দেব হয়ে রচি গোবিন্দের গীত, ছিটিয়েছি পুষ্পঢেউ কামের কিরিচ। রচিয়াছি চম্পূকাব্য কোনো এক কালে, বন্দনা করেছি কতো আনে আর বানে। আমিও শ্রীহট্টে জন্মে রাধারূপ ধরি, কবেই ছেড়েছি বাড়ি শব্দ শব্দ জপি। জৈন্তা পাহাড়ে ইরম দেখিয়াছি রূপ, বামেতে বন্ধুবাড়ি ডানেতে অসুখ। তবুও আলোর ডাক তবুও স্বপন, শ্রীহট্টে জন্মিয়া ভ্রমি বিস্তীর্ণ ভুবন। রচিতে প্রেমের শ্লোক তুচ্ছ করি কাম, বলেছি সহস্র বার নারীকে প্রণাম। জমিয়েছি দূরবাসে একজন্ম ঋণ, অকূল পাথারে ভাসি দলহারা মীন। সন্ধ্যাভাষা ভুলি নাই গুহ্য অন্তমিল, আমারও রক্তে ছোটে চর্যার হরিণ।
মোনাজাত: তুমি পুত্র কবিবংশের লোক...ধরিও বংশের খুঁটিÑ জন্মভিটা যেন আর না থাকে বিরান। তোমার তরিকা যেন সত্য হয় প্রেমÑ দি¦ধাহীন করে যেও বংশের বয়ান...পুত্র তুমি, পিতা তুমি, তুমি বংশের মানÑ তোমাকে স্বাগত বলি, জানাই সেলাম!
২. গিরীশ গৈরিক
আমি অভিজিৎ রায় বলছি
নিমগাছের সমস্ত শরীরজুড়ে তিক্ততারই ব্যাকরণ
অথচ নিমফুল মধু ডেকে আনে নীল প্রজাপতি
নৃ-মুণ্ডের অন্ধকারে এখনো যারা কাশফুল চাষাবাদ করে
এখনো যাদের চোখে শ্লোগানের পঙত্তি দাউদাউ করে জ্বলে
আমরা নিমফুল হাতে তাদের অপেক্ষায় আছি
সাদা কাকের কুহু কুহু রিংটোন ভাতের থালায় মেখে
কোকিলের প্রার্থনায় নত হলে-শকুনের আনাগোনা বাড়ে
কিংবা বিড়াল ও ইঁদুর এক খাঁচায় পোষ মানালে
শাকচুন্নি বাতাসে ডানা ভাঙা রোদ ফিসফিস করতেই পারে
এভাবে বেজিদের রক্তে কোবরা হত্যার এক প্রকার নেশা জন্মে
অথচ সাপ ও বেজির দ্বন্দ্ব এখন মানুষের রক্ত থেকে পবিত্র গ্রন্থে
নারিকেলের ভেতর জল শুকালে পচন ধরে
তেম্নি জলহীন নদীগর্ভ জনহীন মরুভূমি হলে
সেই মরুভূমির ইট চাপা ঘাসের কান্না সূর্য শুনতে পায় না
শ্লোক
এই অভিধানে গুড় জাতীয় কোনো শব্দ নেই
কেননা তার বাড়ির পাশে খুনি পিঁপড়েদের বসবাস
যৌনতাত কিংবা মহুয়াবসন্ত শব্দবীজ বুনতে পারে
কিন্তু কলসির তলা ফুটো হলে-কৌমার্য ঘুঙুর আর বাজে না
এ সকল বিষয় অধ্যয়ন করে বুঝেছিÑজন্মদাগ ঘষে ওঠানো যায় না
বিষয়টা বাহিরের নয়-ভেতরের
কপালের ভাঁজ গুনে জীবনের অর্থ না জানলেও
খেজুরগাছের খাঁজ গুনে বলতে পারি তার বয়স কত
কিংবা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চোখে চোখ রেখে বলতে পারি
কাঁদতে পারা মানুষের একটি বড় গুণ
যদিও আমি জন্মের সময় কাঁদিনি বলে-মা জ্ঞান হারিয়েছিলেন
যেমন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেÑব্যবচ্ছেদবিদ্যায় ব্যবহৃত ব্যাঙ
দুধের সর
তুমি বিষধর গোখরার মতো সুন্দর
অথচ সুন্দরবনের সুন্দরী বৃক্ষের মতো মমতাময়ী
তোমার ছোবল কিংবা শীতল ছায়া
কোনটা পেতে কোনটা হারাই
সে ভাবনায় তোমায় নিরাপদ দূরত্বে ভালোবাসি
যতটা দূরত্বে কোন ফল-ফুলকে ভালোবেসে
বড় হয়ে ওঠে
৩. তাহিতি ফারজানা
“চতুর দর্পণ”
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মদের ছিপি খুলে
একটি দর্পণ তুলে এনেছি আমি।
সব ভয়, সব বজ্রবিদ্যুৎ যে গিলে ফেলে জন্মান্ধ ক্ষুধায়।
যার ভেতর লুকিয়ে থাকে ইউরেনাস,
স্রেফ উত্তর দিতে অভ্যস্ত সে ক্রীতদাস
সব কৌতূহল জমা রাখে বিশ্বস্ততায়।
গৃহীত হাসি সে ফিরিয়ে দেয় আবার হাসবার জন্য
হতাশার হলুদ পাণ্ডুলিপি
পাঠিয়ে দেয় নায়াগ্রার তলদেশে।
ভীষণ ভান জানে সে, মনে হয় নিছক কাঁচ।
অথচ তোমার সম্মুখে দর্পণ,
তোমার ক্ষোভে ভেঙে পড়ে দেবতাসমেত।
“দূরের গান”
গাছের বাকল কেটে নেয়া ক্ষত থেকে রাত বাড়ে,
বাড়ে শহরের হৃদস্পন্দন।
ইমারত জুড়ে একে একে
বৈদ্যুতিক বাতির নিভে যাওয়া দেখি।
কোথাও প্রেম, কোথাও অনাহূত শোরে
খুন হয় নৈঃশব্দ্য-
সবাই ঘুমালে সেইসব দূরবর্তী সংসারেরা অবিকল মানুষ হয়ে
হাঁটাচলা করে।
দূরত্ব এক সর্বভুক পিরানহা
এ কথা ভেবে সর্বোচ্চ দূরত্বের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকি।
দূর তখন সূর্যের থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা রাবার বন
মহিষের কাধে ঝিম মেরে বসে থাকা কাক
জল আর তীরের বিভেদ মোছা কোন পরিসীমা।
ঘন রাতের পিঠে হাত রেখে
কাঠমিস্ত্রির মত দূরত্বকে বার্নিশ করি।
চকচকে আরও...
দূরে মুহুর্মুহু ভেঙে পড়ে দৃশ্য।
4. কুশল ইশতিয়াকের কবিতা
আলোর স্কুটার
আলোর স্কুটারে আমি মধ্যরাত বসে আছি
আলোর স্কুটার— আমাকে কোথায় নিয়ে যাও?
তোমার পায়ের নিচ থেকে রাস্তা সরে গেলে
তোমাকে দ্রুতই বুঝি ধরে ফেলে অন্ধকার
রাস্তা ছেড়ে তুমি কি এখন চলেছো আকাশে?
আমাকে কোথায় নিয়ে তুমি দিচ্ছো এ উড়াল?
শনি নাকি দূর বৃহস্পতি,— নাকি আরো পার
হয়ে বহুদূরে তোমার ঊজ্জ্বল বাড়িঘর?
ওখানে কি আমি রয়ে যেতে পারি চিরকাল?
মুমূর্ষু যে চাঁদ করে আছে অপেক্ষা আমার,
একদিন যাব ভাবি— মৃত প্রেমিকার বাড়ি
জ্যোৎস্নালোকে সে চিহ্ন আমি খুঁজে পাব নাকি?
ছায়াপথ নিহারিকা মিলেমিশে একাকার
দ্রুতই তোমাকে ধরে ফেলে বুঝি অন্ধকার
শনির বলয় ভেদ করে—চলো দেখে আসি
কোথায় লুকিয়ে তোমার আশ্চর্য বাড়িঘর!
রূপকথা
ছোটবেলা থেকেই আমি তুলার এক বালিশে
ঘুমাই
জন্মের আগেই আমার মা তা করে রাখছে
সেলাই
এই বালিশটা ছাড়া আমার আসতে
চায় না ঘুম
ভাবছি কবর কেমন হবে আন্ধার
নিঝুম
জগত সকল সম্পদ আমি ফিরায় দিতে চাই
কবর তলে রাইখো বালিশ— আপন কিছুই নাই
৫. ঈফতেখার ঈশপ
রেণুকা//
ফুয়াদ আল খতিব।শাদা পায়রাগুলো শুশ্রূষায় ব্যস্ত অসহায় কিছু করুণ মুখ।জানালায় খেলছে ইলশেগুঁড়ি আর রেলিং এ আমরা দু'জন।
ডুবোজ্বরে তুমি নাকাল। কপালে হাত রেখে বোঝা যাচ্ছে না তখনকার উষ্ণতা। তাছাড়া নেই কোন থার্মোমিটার; কি করা যায়....??
বুকে হাত দেয়া ভালো না,বুকে হাত দিলে পাপ হয়-রেগে যান ঈশ্বর! কি করা যায়...??কিভাবে মাপা যায় উষ্ণতা আর কিভাবে তোমাকে?
তারপর আলোগুলো নিভিয়ে দিলে;এলো অন্ধকার। ক্লান্ত কেউ কেউ তবু খোঁজে যাচ্ছে আঁধার ! আচমকা আমার দিকে এগিয়ে এলো একটা ত্রিভুজ আর দু'টো পাহাড়!
তারপর....
আর কিচ্ছু মনে করতে পারছি নে....
এতো সময় কোথায় ছিলেম??
৬. জাহিদ সোহাগের কবিতা
বিবাহিত কবিতা
বাকি আছে আমার শরীরে র্যঁদা টেনে সমান করে নেয়া। যাতে তোমার সাথে আমার ক্ল্যারিকাল প্রেম আরো সহজ হয়। তুমি ডালভাতে আর একটু আলুভর্তা মেখে নিতে পারো।
বাগানে পোষা ফোয়ারাটিকে দেখে দেখে ভাবতে পারো পদ্মাপাড়ের ছেলেও কেনো শহরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে!
আর তুমি সুযোগ বুঝে, র্যঁদা টেনে টেনে, প্রয়োজনে বাটালি দিয়ে নকশা কেটে, পেরেক ঠুকে দিও, যাতে তোমার সাথে আমার মহিমান্বিত দাম্পত্যের প্রদর্শনী হয়।
ইনসমেনিয়া
অথচ একটাও ওষুধ নেই পাকস্থলি থেকে লতিয়ে উঠবে ঘুমের ডালপালা,
আমি ভাবি, এইমাত্র পুনঃপুন ব্যর্থতা নিয়ে যে অটো স্টার্ট নিল,
তারও নির্ঘুম আছে
ফুটে থাকে তারও কয়েকটি বাতি; আর আকাশের শিশুরা ‘ওই তো, ওই তো খসে গেল’ বলে আঙুল তুলে দেখায় ছোট বোনকে, মানুষের নক্ষত্র।
ওষুধ পেলে এইসব গল্প গরুর চামড়ার ভেতর
লবণ দিয়ে রাখা যেত। আর অচেনা কেউ, দূরের বা কাছের,
কোনোদিন জুতা পায়ে ইটপাথর ভেবে, আকাশে, ঠুকে ঠুকে যেত
দেবশিশুদের চোখ।
৭. অপরাহ্ণ সুসমিতো’র কবিতা
১//
তোমার চিবুকের কাছে পড়ে আছে সোনালী ডিম,রাজ্যের আলসেমী
রিমরিম প্রতাপ জানাজানি কুসুম,মাখন বাটি সুর ঝালর মীড় উঁচু বাতি
আমি তোমাকে ছুঁয়ে রাখি আনমনা থাকি কেবল ডাকি কেবল ডাকি ।
কোনদিকে যাই আলুথালু রাত গাঁথা চম্পা মাখি
নোনা জল নেই কোথাও তোমার পায়ের ঝিনুকে এত ডানকানা মাছ
হেসে দাও ভোরের নীরব সুনসান আলো,ও শব্দ মহিমা ওলো নূপুর
ওলো পৃথিবীর মেয়ে দুপুর,তোমার শাড়ি চুমকি ..এসো নাচি এসো সাজি ।
কাছে যদি এই তমাল এই কানন তবু দূরে থাক রুপার গ্লাস
তোমার মায়ার বাহন খিলখিল অভিন্ন করিডোর,শীতের ভূবন পাখি
তুমি কি জানো না আমি প্রতিদিন চামচে তোমার নাক ফুল দেখি
আহ কন্ঠ জুঁই গালিচায় শুই তবু ডাকি তোমার নাম ধরে ডাকি ।
তোমার জমিন সমান আমি তোমার নাম নিয়ে বাঁচি ।
২//
সন্তাপে করজোড়ে মিনতি জানাই
দেহের মধ্যে মরিচের চারা লাগাই
তারে আতকা বে-দ্বীন জিগাই
যারে তুমি আগাছা বলো
আমি তার নামে ভাসান নামাই ।
কামিয়াবী মন্ত্র জানি না
অধম অপরাহ্ণ আমি
তীর্থ কারে ডাকি? মানি না
উপাসনার চাইতে আমি দামী
ঘরের পিছনে দাঁড়াইয়া থাকো মা
পাহারা দিয়ো আমি বা প্রথমা
তোমারে বিস্কুট কিনে দিব
দিয়ো পুরানা হাড়ি পাতিলের কটকটি
আমি মা তোমারে
আদর করে ডাকবো বিস্কুটি ।
ফাঁকা চেয়ারগুলো
তুহিন দাস
আমি উঠলেই চেয়ারটা শব্দ করে,
যেভাবে তুমি বলছো আরেকটু থাকো,
আরেকটু থাকো—তুমিও পাশে,
কিন্তু চেয়ারগুলোর একা বসে থাকা দেখে
নিজেকে আরো নিঃসঙ্গ লাগে!
নিজেকে আর কবি মনে হচ্ছে না
নিজেকে আর কবি মনে হচ্ছে না, যা লিখছি
তা ছাপতে দিতে পারছি না। আজকাল বেশ ঘুম
পায়, আকাশ থেকে নিদ্রাগুঁড়ো ঝরে পড়ে,
আমি সত্যিই বুঝতে শুরু করেছি এই লম্বাটে
দুপুরচক্র আর আসবে না; কোথাও কেউ নেই,
শুধু স্তব্ধতা ও মৌনতা গলা জড়িয়ে শুয়ে আছে
ফাঁকা খাটে, যেন দুই বোন। নিজেকে ঝরাপাতা ভাবি,
মনে মনে বলি: ঝরাপাতা নিয়ে বিষণ্ণতার কি আছে?
সে এখনও তার মতো করে দামী। শুনতে কি পাও
দূরবনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগাক্রান্ত বয়সী গাছেদের
আত্মচিৎকার? আমার কানে ভেসে আসে তা,
অতঃপর নদীর কাছে যাই শান্তি পেতে, সেখানে
সুউচ্চ ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে বুঝতে পারি প্রতিটি
প্রজাতির গাছ একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার পর বাড়ে না,
নামে দ্রুতবেগে সারি সারি অন্ধকার, খুঁজি না
গহীন-গোপন, জলের ধারার মতো সহজ জীবন
গড়ায়, বোধের পাহাড় হতে মাঝে মাঝে নামিয়ে
আনি ভারী সব পাথরখণ্ড; টোল খাওয়া জ্যোৎস্নায়
ঝাঁকে ঝাঁকে নীল মাছি উড়ে যায়।
চিত্রকর্ম : তুহিন দাস
অনেক ভালো লাগলো কবিতাগুলো
ReplyDelete