Showing posts with label বাংলাদেশের কবিতা. Show all posts
Showing posts with label বাংলাদেশের কবিতা. Show all posts

Tuesday, August 3, 2021

 ফারহানা রহমানের কবিতা

কবিতা করিডোর



 

সূর্যাস্তের পর


আরও কিছুক্ষণ জেগে থাকো

দ্যাখো এখনো রয়েছে 

শ্রবণের দীর্ঘ অপেক্ষা! 

প্রেমের শীতল বৃত্তের মতো যতিচিহ্ন হয়ে ঝুলে আছে 

এখনো হাজারো শব্দময় বার্তা,

আরেকটু জেগে থাকো

চলো ওই অদৃশ্য গন্তব্যের দিকে হেঁটে যাই

জন্মাবধি পিপাসার্ত প্রেমিক হৃদয়ে

পাওয়া না পাওয়ার নিদারুণ এক ধন্দ রেখে চলে গেছ বহুদূর 

আর দেহ থেকে হৃদয়কে ছিন্ন করেছ

নিপুণ কৌশলে, হয়তো সেভাবেই রাস্তার ধুলোয় গড়াগড়ি খায় 

ভেঙে যাওয়া পুরনো আয়নার টুকরোগুলো।

আমিও এখন অবিরাম বেদনায় বৃত্তাকারে ঘুরে বেড়াই একটি ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদের মতো

আর কোনো অভিযোগ নেই 

নেই কোনো অভিমান 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে 

ক্লান্ত, অবসন্ন আমি। অনুতপ্ত হয়ে ফিরে গেছি পরিশুদ্ধ হবো বলে 

পাথর যখন মোহ সৃষ্টি করে 

শেকড়ের গভীরে ব্যথার নৈঃশব্দ্যের আরাধনা শুরু হয় 

আর ভালোবাসা মরে গেলে বাসি অনুভূতিগুলো থেকে চারিদিকে শুধু দুর্গন্ধ ছড়ায়...


 মিলটন রহমান-এর কবিতা




বিভ্রম


কাবেরী নদীর তীর থেকে পাখিগুলো

ঠোঁটে রোদ নিয়ে চলে গেলো পশ্চিমে

জলের কার্ণিশে রেখে যাওয়া পালকের 

তুলট ছায়ায় জেগে আছে মরাল স্মৃতি

বহুদিন হলো স্মৃতির মাস্তুলে জেগেছে

আমাদের বহু বর্ণের শোক ও সন্তাপ

আচ্ছা-

একে একে মানুষ বাতাসে মিলায়ে গেলে

কোথাও কি জেগে থাকে দীর্ঘ কোন ছায়া?

করুণ শ্বাসের মতো কোন কিছু কি থাকে

ভেসে কাবেরী জলে?

ওই পাখিগুলো ঠোঁটে করে যে রোদের রঙ

নিয়ে চলে গেলো,

তা এই মানব বসতির কত ভাগ?

কিংবা কখনো কি কিছু নিয়ে যাওয়া যায়?

নাকি নেওয়ার নাম করে বিশেষত আমরা

নিজের সবকিছু ফেলে চলে যাই

দৃশ্যত পাখিরা যে রোদের ছায়া ঠোঁটে

উড়ে চলে গেছে, তারা রোদের তাপে 

গেলে গেছে, কেননা

ওরা কোথাও যায় নি, সবকিছু বিভ্রম!

সবাই বহুদূর যেতে চায়, অথচ

যেতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশের আগেই

সবাই নাই হয়ে যায়!


এখানে এখনো গড়িয়ে পড়ছে অন্ধকার

ক্ষীণ আলো চড়ুই পাখির মতো চেয়ে আছে

শূন্য করপুটে জেগে ওঠা বিহঙ্গ কালের দিকে

কোন একদিন এইখানে নদী ফুড়ে উঠে যাবে

আলোর টাওয়ার, ঠিক নিরস্ত্র যোদ্ধার মতো...

সেইদিন হয়তো জেগে উঠবে আলো

যোদ্ধারাতো কখনো মুষ্টিহীন হয় না!


মানুষ কি কখনো হেরে যেতে চায়?

নাকি মহানুভবতার চিমনিতে 

বিশুদ্ধতার তকমায়

কালো বিষন্ন 

ধোঁয়া উগরে 

পায়ুপথ পরিষ্কার করে 

আবার নেমে যায় জলজ অন্ধকারে?


উড়াও অশ্রু


বেহিসাবে কাটানো জীবনইতো আসমানের মতো বিশাল

হিসেব করতে গেলেই খাতাবন্দি জীবনের দোযখ যাত্রা

বলে ক‘য়ে কি আর প্রিয় উদ্যানে ফুলের সুগন্ধি নেয়া যায়

যার জন্য কোন বাক্য বিনিময় ছাড়াই দু‘গন্ড বেয়ে নামে অশ্রু

সে কে

      তার সাথে কি সম্পর্ক

                       কোন কিতাবে লেখা আছে

                                                               তার নাম

কালা পাথরের গা ঘেমে-নেয়ে যে অশ্রু নেমে আসে তার কি হিসেব

কোন হিসেব টিসেব নেই

                       নেই কোন বেদ-বাণিজ্য

                                           আছে তার জন্য এক নাম

আসমানের সিরায় সিরায় লেখা সে নাম কোন হিসেব ছাড়াই কাটা

জগতে এই নাম বেহেস্তি খুশবো ছড়িয়ে উড়ছে পায়রার পালকে

ফোটা ফোটা জল

               অশ্রু সজল

                       ভেঙে অর্গল

                               সরিয়ে পাথর জগদ্দল

                                               বেহিসেবের পাপড়ি  মখমল

তুমি খুলে দাও বেহিসেবের সমুদ্র বিহার

হিসেবের জীবন পিঁপড়ের হয়

বর্ষার সঞ্চয় তোমার নয়

না খেয়ে মরে যাও

না পেয়ে মরে যাও

এই বিহেসেবি মৃত্যুর জন্য

কত যে মৃত্যু জেগে আছে

তা জানতে হলেই হয়ে যাও বেহিসেবি

বন্ধু বেহিসেবি হও, মরে যাও, পান করো প্রিয় আশ্রু! 

                                      




আশ্চর্য বেহালা


গাধার পিঠেও বেজে উঠছে আশ্চর্য বেহালা

গর্ভবান পুরুষেরা খালাসের তাড়ায় ছুটছে

ঘাট-আঘাটায় ফেলে যাওয়া থোক থোক

বীর্য থেকে একে একে উঠে দাঁড়াচ্ছে

আশ্চর্য সুন্দর সব খচ্চর

এমন সৃষ্টির প্রনোদনায় তল্লাটে চলছে

অনির্দিষ্ঠ উৎসব

এই বুদ্ধিদীপ্ত ফলবান সময়ে দুলে উঠছে

দুধেল গাভীর ওলান

খচ্চরেরা সারি সারি উঠে এসে পান করছে

পুরুষ্ঠ কালো দুধের নহর!


এখন এমনি অসঙ্গিতির সময়

গাধার পিঠে বেহালা বাজার সময়। 


নিমন্ত্রণ



ভাঙা ডাক বাক্সে প্রতিদিন অগুনতি চিঠি আসছে

                                       নিমন্ত্রণ

বংশ পরম্পরায় এমন চিঠি আসাই নিয়ম

তবে প্রতিদিন ডাক বাক্স উপচে পড়া এমন

                                      নিমন্ত্রণ

আগে আসেনি কখনো, আমার পিতামহের কালেও


এই প্রত্যন্ত গাঁয়ে ক্ষীণ পুলিন্দা কাধে পিয়ন আনতো

                                       নিমন্ত্রণ

বছরে হাতে গোনা ক‘টি মাত্র চিঠিই ছিলো নিয়মে

অথচ এখন প্রতিদিন চিঠি আনছে অচেনা ডাক হর্করা

                                        নিমন্ত্রণ

কূয়াশার সাদা কাপনে মোড়া লোবানের গন্ধে মৌতাত!


আসমান ফুঁড়ে অসংখ্য মানুষ ছুটে যাচ্ছে হাতে পাওয়া

                                         নিমন্ত্রণে 

ভাঙা ডাক বাক্স থেকে গড়িয়ে পড়ছে মৃত আক্রোটের দানা

বুলেটের মতো একে একে বিঁধে যাচ্ছে অগুনতি পাঁজরে

                                           নিমন্ত্রণ

একে একে অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে যাচ্ছে শেষ এক্সিটে!


অস্পৃশ্য


নদীর নাভীমূলে        ঈশারায় হাত রাখি


কিছু কি আছে তাতে, কিছুই তো বুঝি না


ওই যে দূরে দেখি      ফেনিল দু‘টো গাঁথা


ওগুলো কিছুই নয়, বলবো কি করে?


কি করে পাবো তবে     ঈশকার টেক্কারে


মাঝ রাতে কে রাখে হাত, বিদিশায়


তোমার খোঁজে নড়ে      আমার দিনাসন


থাকে না কোন গান, কোন রাগাসন


বললে কেবল আজ     তোমার জমবে বাজ


মালা গাঁথার দিন আজ হলো তাই


আমি যে কোন কালে        মানুষ হয়ে যাবো


তুমি হবে সমুদ্র সহচর


তফাৎ নেই রাত দিন        বাজে একই বীণ


এর বেশি কোন রীতি নেই


আমার শুধু চেয়ে থাকা     মনের বাঁক বাঁকা


ফেনিল গাঁথা রেখে ঘুমিয়ে থাকা।

 

 


মেঘ অদিতি

জে ব উ ন্নি সা

যাও চিঠি উড়ে যাও , বিদ্যুতের আগে। বলো তাকে- এত প্রত্যাখান যদি, পথমাঝে কেন তবে ডেকে নিলে দিলরুস কন্যা তুমি! সব ছিল রঙিন খেয়াল! রেশমী রহস্য জালে কত আর পুড়ে যাবে কাতর প্রণয়!


শায়েরির সুর থেকে সুরা জন্ম দিলে সেই নাম মুখ আনা পাপ? নাকি মনের সন্তাপ! 

এভাবেই পুড়ে যায় সহস্র সতেজ গাছ। অভিমান জ্বেলে দেয় তামাদি কিস্সায় প্রখর আগুন। বিদ্দ্যুচ্চমকের ভয়ে প্রেমিক পালায়! 


তুলনা ফুলের সাথে! তাচ্ছিল্যের শ্যেনচোখ হাসে। মুহূর্তের মোহ সব, আহা! জেবউন্নিসা…

কোনোদিন দগ্ধ প্রেমিকের দিকে চেয়ে দেখ- করুণ সে মৃত্যু তোমার কবিতা জুড়ে কীরকম ছায়া ফেলে গেছে..



ন হন্যতে


“কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন

মা কর্মফলহেতুর্ভূমা তে সঙ্গোহস্ত্বকর্মণি “


একটা ‘না’-হয়ে ওঠা প্রাণে আর নির্যাস লাগছে না 

একটা ‘হ্যাঁ’-এর ভেতর 

ঘুমিয়ে পড়ে সম্পর্কে বাজছে না কোনো শঙখ 

থেকেথেকে কেবল মার্বেল হয়ে উঠছে ব্রহ্মা-


অর্থ পালটে গেলে—

ব্যক্তিগত রঙিন দৃশ্যে লাগে রঙহীন আলবিদা 

মুহূর্তে মুহূর্ত জাগে, জেগে ওঠে সময়ের দর্পণ 


জলের তলে দুলতে থাকা অবিনাশী এক পেন্ডুলাম 

দেখতে দেখতে সামান্য দূরে 

চকখড়িতে লিখে রাখি, কর্মই প্রকৃত শান্ত দিন..





ব্রহ্মপুত্র গাঙ


নির্বিষ জীবন থিকা ফিরাই যে চোখ- সে চোখে ভর করে বেশুমার ক্রোধ।

ক্রোধ নাকি ভালোবাসা? ছোট্ট গাছেরে জিগাই। গাছ থাকে স্থির, গাঙ বয় নিরুত্তর, ধীর। শেষকালে এই প্রশ্নে আসমান-জমিন এক হইয়া কান্দে মন উথালি-পাতালি। সাথে কান্দে আমাগোর রোগাভোগা ব্রহ্মপুত্র গাঙ। 


আমি পরি। জন্ম নির্বিকার। জীবনের পাকে পাকে জমে জানি পাপ। জানি আরো, পাঁকেই জন্মে আবার পদ্ম লহড়ি, জোড়া পদ্ম হার.. গয়না নৌকা ওগো, বলি যে তোমারে- তোমার কি পড়ে মনে, মাঝিদের হাঁক ওই বদর বদর? ব্রহ্মপুত্র, শৈশব বিধৌত আমার গাঙ.. নৌকার ছইয়ের মইধ্যে বসা এক যুবতী কৈতর য্যান আমাগোর মা হরিতকি মুখে দিয়া ডাকে কাছে হাত তুইলা ইশারায় কয়, ওই যে যায় দেখা, শুশুক.. 

ভুস কইরা উইঠা ফের জলেতে লুকায় , দ্যাখ পরি দ্যাখ.. দ্যাখ.. 


আমি পরি অবলা বেঘোর, আচানক দেখি- আসমানের চান্দ ক্যাম্নে নাইমা আসে নৌকার গলুইয়ের ভিতর। চান্দের লাহান রূপ নিয়া কে যে ওই সমুখে দাঁড়ায়। মায়েরে জিগাই, মা গো অত রূপ, অত রং একি সেই চান্দ সওদাগর? 


আচানক খালুইয়ের মাছ এই প্রশ্নে করে খলবল। আসমানে তারাগুলা নিভে জ্বলে। আর দুই চাইরটা চামচিকা গোল হইয়া ওড়ে মান্দারের মাথার উপর..


অন্ধকার

সীমাহীন ক্ষোভ-তাপ, বিষাদের লীন অন্ধকারে 

হৃদয়ে ক্ষরণ যত তারো বেশি ফুটেছিল ক্ষত 

প্রেমের ওপারে রাখা ঘৃণাগুলো নীল কষাঘাতে 

হাওয়া বেড়ে প্রতিরাতে, হয়েছিল প্রবল জোয়ার 

রোষানল? অনিবার। ছিল আরো প্রগাঢ় সন্দেহ 

পেরেক বল্লমে তাই নিজেদের শান দেয়া জোর 

হাড় মজ্জা ফালাফালা হৃৎপিণ্ড ফ্যালে ছিঁড়েফুঁড়ে

আগুনেরে ডাকে তবু দু’দিকেই নীল হিমবাহ 

বিষম বিষাদে মিশে সময়ের আয়ুক্ষয় হলে 

দুটো পথ চলে যায় বিচ্ছেদের সীমানা ছাড়িয়ে

অন্ধকারে তবু আজো বাঘিনীর চোখ উঠে জ্বলে

ব্যাঘ্রটিও তাকে খোঁজে দুর্নিবার মশাল জ্বালিয়ে


শূন্যের ভেতর ভাসে স্বপ্নহীন ছায়াহীন স্মৃতি

মুছে যায় এইবেলা জীবনের সব রণনীতি



রন্ধ্র জুড়ে তীব্র হাহাকার


তখন —

আলোতে গানের ধুম 

অতটা ধূসর নয় দিন

ভিক্ষাপাত্র হাতে সেই কিছুদিন থাকা


ভিজে রাত উঠানে আমার

কলার মান্দাস ভেসে চলে

ঝরাফুল, হরিৎ পাতার ঘুমে

বিশাখা সখীরা পৌরাণিক বিদ্যুৎ হানে

সারারাত শিশিরের সাথে সেটুকুই

মাধুকীর নেশা


তারপর গজারোহী

তারপর রন্ধ্র জুড়ে তীব্র হাহাকার

নীলাভ শোণিতে বিঁধে তুরপুন

বনপ্রান্ত দিয়ে এক অচেনা শ্রমণা হেঁটে যায়


একটি আত্মঘাতী ফুল তোমাকে

কীভাবে মাঝরাত রাস্তা পারাপারে সেতুবন্ধ হয়

চেয়ে দেখো-


জেব্রাক্রসিং পেরিয়ে এগিয়ে আসছে 

শ্বেতাভ এক ষাঁড় 

সামান্য এগোলে জেগে উঠবে তোমার চাবুক শরীর

এমন দৃশ্যের অপেক্ষায় বহুদিন জেগে ছিল চোখ

এবার কাচের ভেতর লাফিয়ে নামলো বেড়াল 

বেপরোয়া ধ্বংসযজ্ঞে 

ডানা খসে গেলো তোমার-আমার 


এভাবেই হিংস্রতার দিনে লেখা হয়ে যায় 

ছবি ও ছায়াদের আখ্যান


সারারাত পাথরের গায়ে পাথর ক্ষয়ে যায়

ফুঁসে ওঠা পৌরুষে লাগে প্রজননক্ষোভ

শরীরে ফুঁসছে আজ ড্রাগন 

 

ধরো দু’-চার ফোটা পারদের

ওঠা-নামা

নামা-ওঠা

সার্কাস ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে ক্লাউন

বুড়ো নেউলের লালায়

পটাপট ছিঁড়ে যাচ্ছে নাইন ও ক্লক

কড়িকাঠ ছাপিয়ে জমে উঠছে সার্কাস


পথে পথে জেগে আছে আশ্চর্য চোখ

একটা পুরনো বাইসাইকেলের চাকায়

ফিরে আসছে পরিচ্ছন্ন দুপুর

 

যেসব দিনে শঙ্কাহীন ঘুমিয়ে পড়তাম

তাদের দিকে ঝুঁকে পড়ছে  সাদা চন্দ্রমল্লিকা

শুধু সমতল রাতগুলো এবার স্বভাব সাবলীলতায়

সেতুবন্ধ ছিঁড়ে তুলে আনবে গোলাপের হাতছানি


কোথাও কি অক্ষর পুড়ে যাচ্ছে খুব?


ব্ল্যাকহোল

কোন এঙ্গেলে ধরলে 

সব রং শুষে নেয়া রংটিকেও ভাল লাগে 

তা বুঝতে বুঝতেই আঁকা হলো ব্ল্যাকহোল


সমসাময়িক প্রবাহে চোখ না রেখে 

খবরের কাগজ পেতে 

দিব্যি নিপুণ রুটি গড়ালো রমাপিসি

কেবল আমি দেখতে পেলাম—

খবরের কাগজ থেকে বেরিয়ে আসছে 

ছোট্ট একটা শরীর ..

বুঝতে না বুঝতেই তার শিশুশিশ্নটি 

বুলেটের মত আমার মাথা ভেদ করে 

উড়ে গেল মহাকাশের দিকে



মৈত্রীগুণ

তোমার হাতের পাতায় পরছিদ্রান্বেষী রেখা

খুলে যাচ্ছে প্রাচীন দরজা

আমি কি সুপর্ণ জাতক?

অমন পালিয়ে গেলে

মনে হয় অক্ষরেখায় ফুটেছে কামুকঘাতক


বরং ঘুমাও—

চাঁদ হেসে গলে যাক মেঘের আড়ালে

পর্ণকুটিরে জাগুক নদীমুখ

স্নান সমাপন শেষে

বোধিসত্ত্ব শিখিয়ে দিলে মৈত্রীগুণ


ফুটবে সারারাত অজস্র তারার সাথে..


Sunday, August 1, 2021

 বর্ষায় বর্ষায় 

মনিরুজ্জামান প্রমউখ 
রচনা- ২১-০৬-২০২১ 



আষাঢ়ে'র পূর্ব-পশ্চিম নিয়ে, দিল শান্ত তাঁজা ৷ 
ভেতরে'র অঙ্গে, তার যতো থাক- ভেজা ভেজা ৷ 

ফাঁক দিয়ে, রোদ্দুর যদি- উঁকি মারে আকাশে জ্বারা ? 
ভালো লাগে, তার- অলি গলি আর- ক্লান্তি সারা ৷ 

কে আছে রঙ্গীন, কে আছে প্রবীণ সুখ-তারা ? 
মুছে দেবে- স্যাঁতসেঁতে জমিন আর- বৃষ্টি'র পিপাসা ? 

ঘর-কুনো হয়ে থাকা- বছরে'র কোনো এক ঋতু-বেলা ৷ 
স্বাস্থ্য, মেধা আর- মননে'র উত্তম বীজ বিত্ত-বাড়া ৷ 

কে দেখে- ভূমি, কে দেখে- রবি শীতল পারায় ? 
মন-বৃদ্ধি আর- ধ্যান-বৃদ্ধি উষর বানে, বর্ষায় বর্ষায় ৷৷ 

Tuesday, June 22, 2021

দ্য লাস্ট ডে’জ অফ দ্য কনডেমড।। 

ফারহানা রহমান 




কোনো তৃষ্ণাই কি মেটে
আনন্দ, বেদনা কিংবা বিশুদ্ধ সৌরভের?

এ হৃদয় তো এক কোমল পাখি  
কখনো বা বন্দি থাকে খাঁচায় ; 
কখনো উড়ে যায় আকাশে 
আবার মাঝেমাঝে বুনোহাঁসের মতোই 
কুয়াশায় ডুব দেয়,
.  
দ্যাখো অঝরে যে বৃষ্টি ঝরছে 
আনন্দ নগরীর ঝলমলে উচ্ছ্বাসে    
সেখানেও কোথাও কোথাও থাকে 
কবরের অন্ধকার 
আর তখনই বহুদূর থেকে ভেসে আসে স্মৃতি।
এক একটি আঁচড়ই তো এক একটি ক্ষত 
এই পৃথিবী ধারণ করে চলেছে সেইসব ক্ষয় 
ওখানেও থাকে মন ছটফট করা দুপুর 
উদাস করা গোধূলির মায়াময়ী আলো 
আমি মোসাফির হয়ে যাই 
.   
এ এমনই এক আশ্চর্য মৃত্যুর মতো অনুভূতি 
যা আমার চলাকে পিছনে ফেলে চলে যায় 
আর চোখের সামনেই
আরও জোরে এগিয়ে চলে 
জনশূন্য মালভূমি।  

কাল সারারাত একটি পাখিকে বুকে নিয়ে ঘুমাতে চেয়েছিলাম বলেই কি
আমাকে এভাবে শবের মিছিলে ফেলে চলে গেলে?