চিরঞ্জীব হাললারের গুচ্ছ কবিতা
তারাপদ
তারাপদ কে অনেকদিন দেখিনি
তার জবুথবু শালটা আর কতকাল আমার অনিরুপিত জিম্মেদার
কোন অতিরিক্ত সংযম ছাড়াই মেয়ে পশুটা তার নৌকা পাহারা দিতো
বর্গবীমা মন্দিরের সুদর্শনা কেন তাকে বাপজান ডাকে
পাঁচটা ছাপান্নো লোকালের কারশেড ড্রাইভার বলেছিল সতীনাথ এর ঢোঁড়াই নাকি তারাপদর দোস্ত
জেগে জেগে যেসব কথা বলতো অঘ্রানের অন্ধকার শর্বরীর গা চুঁইয়ে সেই সব অতিস্বপ্নরা
এখন সাবস্ক্রাইবার খুঁজতে খুঁজতে মহানগরীর মাদক আলোয় নিরুদ্দেশ তুমি তার কতটুকু জানো
আহা তারাপদ তুমি এক
নিয়তি নির্ধারিত অভুক্ত টায়রা পুরুষ ।
২৬-১২-২১
গল্প
ক'দিন থেকে লোকটা জ্বালিয়ে মারছে
তার এক কুৎসিত দর্শন বান্ধবী দরকার
হাড়ে হাড়ে শয়তানী তকমাটা এই সুযোগে
কোন এক চতুর আমার চরিত্রে সেঁটে দিয়ে
বান্ধবী ভ্যালির দালাল হয়ে উঠবে এই ভেবে চেপে যাই
আমার দিন এক নশ্বর প্রজাপতির উপঢৌকন
প্লেটোর না লেখা নোটবুকের অ্যনাটমির
আকাশটা গজদন্তী হরিনের মত
টের পাই কে যেনো নাভির ধূসর কোষে আত্মগোপন করে আছে
এক একটি উপসংহার যেনো ননডায়নামিক সময় বমি করা ঘড়ির কাঁটা
লোকটা আজ ও এসেছিল
তার বউ তাকে খেতে দেয়না তবু তার সুখি মস্তিষ্ক
খুঁজে চলেছে ফিরিওয়ালাকে
যার কাছে সে এক খুবসুরত দিগন্তের গল্প শুনতে চেয়েছিলো
২৬-ডিসেম্বর-২১
ভ্রম
এক মতিভ্রম বিদূষক
মাঝে মাঝে গুলিয়ে দেয় সব
'প' য়ের আগে 'ভ' ছিল
না 'ভ' কে বিশেষ প্রাধান্য দিতেন এটা
বিবেচনাপ্রসুত বিদ্যাসাগরীয় ত্রুটি
যাত্রা পথে কোন মাঝিহীন নৌকোর দেখা পেলে
বলতে হবে তার মাঝি কখন আনবাড়ি থেকে ফিরবে
সে বিধাবা বিবাহের পক্ষে না সত্যবতীউত্তর সমস্ত
পরিচ্ছদের কোন এক মহান চরিত্র
ভ্রমজনিত স্বাস্থ্যকর মেঘেরা তোমাকে অসময়ে ভিজিয়ে দিলে বাড়ি গিয়ে কি উত্তর দেবে
এটা বলার সময় বিদূষক ও তোতলাতে পারে
আপনি ভেবে রাখুন তার সম্ভাব্য ফ্যালাসি গুলো
২৪-১২-১২
তম
কাঁঠাল আর সজনে ডাঁটার মধ্যে কে ভীষন প্রতিভাবান
হালিসিনা হান্নু বা সতেকাই
দুজনেই মৃত্তিকার সম্পর্কে কতটা হিংসুটে
একজন বিজ্ঞানে ছাত্র আর একজন ফ্যালাসিবিদ
তারা উভয়ে শারীরিক পঙ্গুত্বকে বাজী ধরে
চরম সুন্দরী এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর সামনে হাঁটু মুড়ে গোলাপ চাষের উপযোগীতা বুঝে নিতে নিতে হারিয়ে ফেলেছিলো অন্তর্দহন এর নোটবুক
আপনি হাঁচি দিতে দিতে গ্ৰন্থনা করছেন এক মৃত্যুর ধারাবিবরণী
আর এক জন হাঁচি দিতে দিতে ঢুকে পড়ছেন শুয়ো পোকাদের মোক্তারনামায়
আসলে সবটাই বীজ
এখন দেখার কে কার মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে
সক্রেটাসের উত্তরীয় হয়ে উঠবেন
আসুন এই ইন্টারভালে
শ্বেতপাথরের থালায় কুমারী গাভীর দুগ্ধে
আচমন সেরে ফেলি
২২-১২-২১
ইন্দ্রনারায়ন এক
এইট্টি নাইন ও নাইন্টির মধ্যে
তুমি
আনআইডেন্টিফাইড অসংখ্য ফুটকি
কেন এত কুহক ভঙ্গিমায়
ত্রাণ ও ত্রাসের দোলাচলে
দুলে ওঠে মৃত মায়া গাছ
ইন্দ্রনারায়ন দুই
আয়তন আয়ত্ত করতে এসে তুমি এক অনড় কুহক
তোমার বজ্র থেকে উড়ে যাওয়া বাজ
ইয়োলো সাগর থেকে ঘনায়মান শূন্য স্পশে
কথা ছিল মুর সভ্যতার কোন অস্পষ্ট পাণ্ডুলিপি থেকে তুলে আনবে আমাদের জাগতিক পুতুল
তুমি এক কুহক
কুহক অতি সহজে ইন্দ্রনারায়ন
যদি আমরা কথা বলি
আমাদের ভাষা ও পাটিগনিতের মধ্যে ঢুকে পড়ছে
ট্রয়
যদি ভূমির কথা বলি নৈঃশব্দের পাতাগুলো কেঁপে উঠে
আমাদের একমাত্র স্থিতিস্থাপকতা
জাগতিক হ্রেষা থেকে তুলে আনবে একশ আটটা নীল
এস ইন্দ্রনারায়ন
মিলিত হয়ে আমরা হেঁটে যাই পরস্পরের তীর
রক্তাক্ত চাঁদের সেই তীব্র কুহকে
২১-১২-২১
হৃদয় থেকে বেরিয়ে আস্ত্রীর হৃদয়ে তুমি যেটা
ফেরা
কলহের অদূরদর্শী সঙ্গ নির্মাণের জন্য ধরা যাক আকাশের বয়স এক্স
বচনকে যদি সংহিতা ভবনের দোসর ভাবা যায়
তাহলে তাকে ওয়াই অ্যকসিস বরাবর ধার্য রাখুন
এখন খেলাঘরের ছবি আঁকা হবে
আকাশের অলিক ক্রন্দন থেকে তাথৈ জলকে
বসিয়ে দিন দরজা হিসাবে
অসীম আসবাব থেকে যে মিয়াও বেরিয়ে আসবে
তার গুগলি ডেলিভারী হাস্নুহেনার
আয়কর ভাবলে দেখবেন
আপনি অনির্ণেয় পৃথিবীর
একমাএ বালক
এমন একটি উল্লাসকে বোতলে ভরে মাতালটা ফিরে যাচ্ছে তার নিজস্ব আবাসভূমিতে
১৬-১২-২১
কলহ
ঘন হয়ে জেগে থাকে অসম্পর্ক
তাকেও শুভেচ্ছা পাঠাও
তার ও কিছু বন্ধু আছে
বছরকাল জলভরা রূপালী সন্দেশ
ভূপালি শোনায় কানেকানে
ভরা জলে কই মৎস্য পাঠায় আতিথ্য রগড়
মরছে পড়া হাতের কাতান হেসে ওঠে
এমন সম্পর্ক তুমি কতদামে করেছো খরিদ
বলো রূপালী বান্ধব বলো বলো
সম্পর্কের নিচে নদী বহমান কাঙাল হৃদি থেকে পূর্ণবীর্যে চেতনাতীত গুয়েতেমালা জেগে থাকে
অনড় স্থাপত্য
তার আজ আধিবাস
এসো পিরীতি হতধরাধরি অসম্পর্কের সুয়োরানি
এসো প্রেম কলহকথনে
১৪-১২-২১
চাঁদ নিয়ে দু'কলম
শ্যাওড়ার গাছে দোলে দুদিনের বাসিফুল
রজনীগন্ধা তাকে ভেবেছিলো আসিবুল
আকাশের ডালে বাঁসা চাঁদ নামে পাখিটা
গ্রহণেতে রেগে ওঠে ও বাড়ির কাকিটা
দিন ছিল ঘন কালো আকাশের আকাশে
আঁধারের খোলা চুলে পেত্নীরা কালহাসে
অদ্য সে আকাশে ভাসে চাঁদ পাখিটা
কবিতার মিল দিয়ে লিখো তুমি বাকিটা
১৩-১২-২১
কি
কে ধার দিলো অনন্ত মুদ্রা
নাম জানিনা
সে এক ধড়হীন সমুদ্র
আমিত্ব ছাড়াই আকাশের পাঠশালায়
নো এন্ট্রি' বোর্ড দেখে বায়না ধরেছে
তার উত্তরাধিকারের নাম জানতে
বলাবাহুল্য আমি নিরুত্তর
১৩-১২-২১
যাত্রা
একটা মিথ্যাকে গলায় জড়িয়ে সন্ধ্যা যাত্রা করল মহাশ্মশানে
সঙ্গে রয়েছে কিছু দুঃস্বপ্ন আর মহাবিশ্বস্ত কালোঘোড়া
তারা যখন পরস্পরের সাথে কথা বলে
দেয়াল ঘড়িটা কে বিচারক পাগল বলে সাব্যস্ত করেন
মৃত্যুর জন্য সময়কে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে
এটা কনফার্ম আমাদের সমস্ত বেল গাছে ফুল আসবে
দুর্গাকে বলবো যা তুই কতটা
বিধবার ভূমিকায় অভিনয় করতে পারিস
আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে নে।
এফিটাফ লেখার জন্য প্রকৃত কালি ও কলম কেনার দোকানটাকে খুঁজেতে গিয়ে দেখতে পাই কবিতার নায়ক একমনে ক্যাশবাক্স সামলাচ্ছে
১২-১২-২১
মিথ্যুক
ঠিকানা না লেখা চিঠির
সন্দেহ আদ্র ফ্যালাসিনামা
সব চৌরাস্তা পরে নিয়েছে নবীন পোশাক
চিনতে পারো ডাকপিয়ন
মেফেয়ার রোডের ঝুমঝুমিওয়ালা আমার নাম জানলো কি করে
নদী ও আজকাল চিরঞ্জীব চিরঞ্জীব বলে ঘন ঘন হাই তোলে
হতে পারে সক্রেটিসের বান্ধবীর নাম হেমলক
আরো কিছু ঘাস থেকে জন্ম নেবেন নিহত চেতনার
পিতামহী
এসো দৈবী সংকেত
অনুমানসিদ্দ ফ্যলাসিগহনা
কোথায় ঝোলালে একজনকেও মিথ্যুক মনে হবেনা
আমি
ভবতারিণী সন্ধ্যা নামল
আকাশের পিরান ভেদ করে নেমে আসা আঁধার
মিশে যাচ্ছে পলক থেকে খসে পড়ছে বিন্দু বিন্দু ক্লেশ
দেহের খোপ থেকে নেমে আসো আমি
রাতের মায়াবী চুলে জড়িয়ে থাকা জোনাকি
আঁধার কাবার করার সব ঋণ
কোন এক প্রহরে কাঠুরের অনাবিল সংগ্রহে মোরগের মত থেকে উঠবে
সেই সংগ্রহের নাম যদি আমি হই
ভবতারিণী চমকে উঠনা
১০-১২-২১
ঘুম
যদিও সংশোধনাগার ভরে আছে ঘুষলোভী অপরা
চাতকে
ঋষিদের অস্থি দিয়ে গড়া ধাতব বারুদ একজনও জেগে নেই
রাতের কোটরে অস্ফুটে আর্তনাদ ভরা প্রহেলিকা
সেইসব অশরীরী কলরব স্বাধীনতা দিবসে
ক্ষুধার্ত ব্যন্ড বাদকের পোশাকে ঝলমল করে উঠবে
তিরঙ্গা তোমাকে সেলাম
৯-১২-২১
ঈর্ষা
অভিমানে ফুলে ওঠা নদী
দেখেছো কি ধনাত্মক স্তব
বলে দিও বৃক্ষের ডালে
ফল রূপে দোলে অসম্ভব
এই এক সুললিত ভ্রম
নদী ও হাজির উপহারে
ঝুমকো দুলের ভাটি গানে
তোমাকে ভেজাবে বারে বারে।
অভিমানী মুখপুড়ী তার
দুই পাড় ধারা অলংকৃত
তাকে টানে চোরা ঘূর্ণি ঘুম
চুপি চুপি নদী চিঠি দিতো
তাকে শোনাও মীমাংসা কথা
নদী রাজি হতে উপহার
কোন পাত্রে তাহাকে ধারণ
কে বইবে এ মোড়ক ভার
দূরে জাগে বান্ধবী স্রোত
হিংসুটে জেগে থাকে টান
অভিমানী ফুলে ওঠা নদী
ক্ষণে ক্ষণে প্রেমিক হারান
৩-১২-২১
No comments:
Post a Comment