বৃষ্টির নিজস্ব সংলাপ
চিরঞ্জীব হালদার
১
এক উদ্ভিন্না ষোড়শী পরে নিয়েছে বৃষ্টি বসন।
তার নিষিদ্ধ কথন মেঘেদের ডানা হয়ে উড়ে যেতেদেখলে
তুমি কি ঝুল বারান্দায় উদাস নক্ষত্রের নিভু আলোয়
নিজস্ব ব্রনদের কাছে জমা দেবে আত্মহত্যার কাহিনী।
না এই সব ষোড়শ সর্গে লেখা থাকেনা।
লেখো কালিদাস লেখো---
মশারীর বাইরে অসতর্ক কোলাহলের রোজনামাচা।
কোলবালিসের ভেতর মৃতপ্রেমিকদের হাড় থেকেজন্মনিচ্ছে
অসতী কথন।
২
মেসোপটেমিয়ার সেই মেয়ে যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে
বৃষ্টির রূপরেখা পাঠ করে।
মোঙ্গোলিয়ার সেই পানপাতাধর্মী সুবালিকা
বৃষ্টির মধ্যে তার তুমুল বিনুনী বাঁধা যার অসামান্যকার্যক্রম।
যাকে তুমি নিষিদ্ধ রূপোর কৌটোয় উপহার দিয়েছিলেফোঁটা ফোঁটা অনৃত কথন।
সেই অপ্রেমিকা যার গুপ্ত অস্ফুট সংলাপ
পাহারা দেয় এক অক্ষৌহিনী মেঘ।
মেফ্লাওয়ার রোডে এরা সবাই এক যুবার সন্ধানেবেরিয়ে ঘরে ফেরেনি।
চিল্কা হ্রদে এদের দেখা গেছে তিন তিনটে পানসিতেচড়ে বসতে।
এরা কি জানতেন সরোবরজলের গতিধর্ম।
এরা কি জানতেন পাইলট পানসিতে সেইস্বপ্নেররাজপুত্রটি
তাদের নিয়ে চলেছে বৃষ্টির অনির্নেয় গন্তব্যে।
আমরা শুধু দেখে যাই আকাশের মরুদ্যানে
কলহপরায়ন মেঘের সিদুর খেলা।
এস ঋতু, স্বমহিমায় দুয়ারে দাঁড়ালে
সম্বোধন খোলামকুচি।
ভিতরে ভাল্গার স্তুপ বাহিরে অদৃশ্যকথন।
এসো বর্ষা এসো পতিত জল
প্রতি রোমকূপে এসো।
এসো বসতভূমির সততপুরাণের পাতায় পাতায়।
কি ভেজাবে ধর্ম না ধারক।
কোন জলছবি দিয়ে এঁকে দেবে বিমূর্ত প্রেমের কথন।।
শ্রাবণের পরিত্যক্ত পাতারা এসো
এসো কুলোর বাতাস অধার্মিক আলো
জলের বর্নণায় ভেজার প্রকৃত আরন্যক মন থেকে
যে পেঁচা উড়াল দিলো
তার শিকারভূমিকে সাক্ষি রেখে ভিজিয়ে দাও চরাচর।
আজ জলের জন্মদিন।
জাইগোটে জাইগোটে শ্রাবণের কেকাধ্বনি।
এসো শ্রাবণ প্রনম্য ঔরসে।
নিহিত কার্নিশের স্মৃতি ভাসিয়ে
জেগে ওঠো গুপ্ত পুরাণে।
৪
জাদুবিদ্যার গূঢ়কথন গুলোর মতো বৃষ্টি শুরু করলোসেই ভঙ্গিমা।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিকণার মন্ত্রধ্বনি
কাটা মুন্ডুর আবেশী তান্ডবে ভেসে যাচ্ছে পান্ডুলিপি।
তুমি কি মিথ্যে ভেসে যাও।
উপদ্রুত অক্ষর তুমি কি বাজার ফেরতা অটোচালকেদাঁড় করিয়ে
কোন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক গাড়িতে নিরুদ্দেশ।
পান্ডুলিপির সব অক্ষর কোন জাদুদন্ডে
নিথর শুয়ে আছে শবের মতো।
কোন পাখির শিষ নেই
শঙখ কুমারী নেই
হে বারিষকণা তুমি কি জন্ম শত্রুতায়
আমার ধর্মপত্নীর অর্ন্তবাস ভিজিয়ে
এক দুর্যোগতম নিশা উপহার দেবে।
এসো সাদা পৃষ্ঠা পান্ডুলিপির বিদেহী অক্ষরে।
এই সিঁদুরে টিপ পরে
আমি তো প্রস্তুত হাঁড়িকাঠে।
আর কত ভেজাবে এই সিক্ত ধর্মে নিষাদ মোহনায়।
No comments:
Post a Comment