গল্প :
রঞ্জিত
রঙ্গন রায়
বাড়িটাকে দেখে ভালো লাগেনি রঞ্জিতের। শহরের একেবারে শেষ প্রান্তে ফাঁকা জায়গায় থাকা বাড়ি সমন্ধে কারোরই খুব একটা ভালো লাগা থাকেনা। কিন্তু কিছু করার নেই। ক্যুরিয়ারের পার্সেলে এই বাড়ির ঠিকানাই রয়েছে।
এখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এটা শেষ ডেলিভারি। এরপর বাড়ি।
কলিংবেল বাজাতে গিয়ে রঞ্জিত দেখলো কলিংবেল বলে কোনো বস্তু বাড়ির দরজায় নেই। এবার সে ফাঁপরে পড়লো। ভেতরের লোকদের ডাকবে কী করে? গোটা বাড়িটাই প্রায় ফাঁকা মনে হয়। সন্ধ্যা হওয়াতেও কোনো আলো টালোর বন্দোবস্ত নেই। এতো মহা সমস্যা! চিৎকার করবে? কিন্তু গলা দিয়ে তো শব্দই বেরোবেনা। গতকালই তো . . .
হঠাৎ বাড়ির ভেতরে একটা আলো জ্বলে উঠলো বলে মনে হল। এবং একটু পরেই একটা দরজা খুব যন্ত্রণা মিশ্রিত শব্দে খুলে গেল। একটা থুত্থুরে বুড়ো। বয়সের গাছ পাথর আছে বলে মনে হয়না। রঞ্জিতের বুড়োটিকে দেখা মাত্র অস্বস্তিটা আরোও বেড়ে গেলো। এ লোকটা যেন ঠিক লোক নয়।
- কী এসেছে পার্সেলে?
রঞ্জিত বুড়োটার ঘর্ঘরে কন্ঠে এই প্রশ্ন শুনে চমকে উঠলো। সে একেবারেই প্রস্তুত ছিলনা যে কেউ এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ক্যুরিয়ার বয়কেই উল্টে প্রশ্ন করবে।
- আজ্ঞে , পার্সেলে কী আছে তা কি করে বলি বলুন! ওটা খোলার তো এথিকস্ নেই আমাদের।
- তা বটে। আসলে আজ অনেক বছর পর কোনো পার্সেল এভাবে ক্যুরিয়ারে এলো কি না।
- ও , আচ্ছা। নিন স্যার , এই কাগজ টাতে একটা সই করে দিন।
- আরে , আগে ঘরে তো এসো। সন্ধ্যে বেলায় এসেছো , তাও কদ্দিন বাদে একজন স্বজাতীর মুখ দেখলাম। এমনি এমনি ছাড়ি কি করে। ঘরে এসো।
স্বজাতী? কি বলছে কি বুড়োটা? সে তার স্বজাতী হবে কি করে? না না , এই বুড়ো নির্ঘাৎ উন্মাদ। তাই জন্যই বাড়িটাকে ভালো লাগেনি রঞ্জিতের। সে নেগেটিভ এনার্জি ফিল করতে পারে।
- সরি স্যার , আমাদের রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনে কাস্টোমারের বাড়িতে বসবার কোনো নিয়ম নেই।
- আহা! নিয়ম তো তৈরিই হয় নিয়ম ভাঙার জন্য।
- না স্যার , নিয়ম ভাঙতে পারবোনা , আমার চাকরি চলে যাবে। প্লিজ এখানে সই করুন আর আমাকে রিলিজ করুন।
- আরে বাবা তুমি বুঝতে পারছোনা। তুমি তো রিলিজ হয়েই গেছো। আর তোমার চাকরিরও প্রয়োজন নেই। বরং অযথা যে মানুষের নিয়ম গুলো অভ্যাসের বশে পালন করে চলেছো সেটাও তো ভাঙতে হবে না কি!
- মানে টা কী? কী উল্টোপাল্টা বকছেন!
- তোমায় দেখেই চিনেছি , ওই তো গলায় এখনো চাকার দাগ রয়েছে। না হে বাপু মানুষ চিনতে ভুল হলেও স্বজাতীকে চিনতে আমি ভুল করিনা কখনো। ওই চাকার দাগটা তো কালকেরই , তাইনা?
রঞ্জিত
রঙ্গন রায়
বাড়িটাকে দেখে ভালো লাগেনি রঞ্জিতের। শহরের একেবারে শেষ প্রান্তে ফাঁকা জায়গায় থাকা বাড়ি সমন্ধে কারোরই খুব একটা ভালো লাগা থাকেনা। কিন্তু কিছু করার নেই। ক্যুরিয়ারের পার্সেলে এই বাড়ির ঠিকানাই রয়েছে।
এখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এটা শেষ ডেলিভারি। এরপর বাড়ি।
কলিংবেল বাজাতে গিয়ে রঞ্জিত দেখলো কলিংবেল বলে কোনো বস্তু বাড়ির দরজায় নেই। এবার সে ফাঁপরে পড়লো। ভেতরের লোকদের ডাকবে কী করে? গোটা বাড়িটাই প্রায় ফাঁকা মনে হয়। সন্ধ্যা হওয়াতেও কোনো আলো টালোর বন্দোবস্ত নেই। এতো মহা সমস্যা! চিৎকার করবে? কিন্তু গলা দিয়ে তো শব্দই বেরোবেনা। গতকালই তো . . .
হঠাৎ বাড়ির ভেতরে একটা আলো জ্বলে উঠলো বলে মনে হল। এবং একটু পরেই একটা দরজা খুব যন্ত্রণা মিশ্রিত শব্দে খুলে গেল। একটা থুত্থুরে বুড়ো। বয়সের গাছ পাথর আছে বলে মনে হয়না। রঞ্জিতের বুড়োটিকে দেখা মাত্র অস্বস্তিটা আরোও বেড়ে গেলো। এ লোকটা যেন ঠিক লোক নয়।
- কী এসেছে পার্সেলে?
রঞ্জিত বুড়োটার ঘর্ঘরে কন্ঠে এই প্রশ্ন শুনে চমকে উঠলো। সে একেবারেই প্রস্তুত ছিলনা যে কেউ এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ক্যুরিয়ার বয়কেই উল্টে প্রশ্ন করবে।
- আজ্ঞে , পার্সেলে কী আছে তা কি করে বলি বলুন! ওটা খোলার তো এথিকস্ নেই আমাদের।
- তা বটে। আসলে আজ অনেক বছর পর কোনো পার্সেল এভাবে ক্যুরিয়ারে এলো কি না।
- ও , আচ্ছা। নিন স্যার , এই কাগজ টাতে একটা সই করে দিন।
- আরে , আগে ঘরে তো এসো। সন্ধ্যে বেলায় এসেছো , তাও কদ্দিন বাদে একজন স্বজাতীর মুখ দেখলাম। এমনি এমনি ছাড়ি কি করে। ঘরে এসো।
স্বজাতী? কি বলছে কি বুড়োটা? সে তার স্বজাতী হবে কি করে? না না , এই বুড়ো নির্ঘাৎ উন্মাদ। তাই জন্যই বাড়িটাকে ভালো লাগেনি রঞ্জিতের। সে নেগেটিভ এনার্জি ফিল করতে পারে।
- সরি স্যার , আমাদের রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনে কাস্টোমারের বাড়িতে বসবার কোনো নিয়ম নেই।
- আহা! নিয়ম তো তৈরিই হয় নিয়ম ভাঙার জন্য।
- না স্যার , নিয়ম ভাঙতে পারবোনা , আমার চাকরি চলে যাবে। প্লিজ এখানে সই করুন আর আমাকে রিলিজ করুন।
- আরে বাবা তুমি বুঝতে পারছোনা। তুমি তো রিলিজ হয়েই গেছো। আর তোমার চাকরিরও প্রয়োজন নেই। বরং অযথা যে মানুষের নিয়ম গুলো অভ্যাসের বশে পালন করে চলেছো সেটাও তো ভাঙতে হবে না কি!
- মানে টা কী? কী উল্টোপাল্টা বকছেন!
- তোমায় দেখেই চিনেছি , ওই তো গলায় এখনো চাকার দাগ রয়েছে। না হে বাপু মানুষ চিনতে ভুল হলেও স্বজাতীকে চিনতে আমি ভুল করিনা কখনো। ওই চাকার দাগটা তো কালকেরই , তাইনা?
No comments:
Post a Comment