Monday, August 31, 2020

শৌভিক বণিক

 আলিপুরদুয়ার জেলা কবিতায় শূন্য দশক---


শৌভিক বণিক 



বাংলা কবিতায় মূলত শূন্য দশকেই প্রথম নগর-গ্রাম মিলেমিশে গেলো একসূত্রে। আরও একধাপ এগিয়ে দিল স্যোসাল মিডিয়া। 

স্যোশাল মিডিয়া সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে গেলো শূন্যের কবিরা ফলস্বরূপ তাদের কবিতা প্রকাশের জন্য, আর কোন প্রতিষ্ঠানে মুখাপেক্ষী হয়ে থাকার প্রয়োজনও প্রায় ফুরিয়ে এলো। এবং সেই সময় থেকেই ভাঙতে লাগলো প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। এই স্যোসাল মিডিয়া-র দৌলতেই একে অপরের স্বরের সাথে পরিচয় ঘটতে যেমন সহায়ক হয়ে উঠলো। তেমনি প্রচুর কবিতা পড়ার সুযোগও ঘটলো। অজস্র চিত্রকল্পের কোলাজেরও দেখা মিলে শূন্যের কবিতায়। শূন্যের কবিরা তাদের কবিতায় ঝরঝরে আর স্মার্ট শব্দ প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন, ও তার নিপুণ ব্যবহার ঘটিয়েছেন। ন'য়ের দশকের কবিতা প্রবনতা থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে ভাষা ব্যঞ্জনায় বহুমাত্রিকতার এক উন্মেষ ঘটেছে শূন্যের কবিতায়। আবার বিশ্বায়নের প্রভাবও পড়েছে বাংলা কবিতার আঙ্গিনায়। একদিকে সময়ের দাবী আর জটিল সামাজিক আবর্ত শূন্যের কবিদের প্রভাবিত করেছে নিঃসন্দেহে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই স্রোত থেকে উত্তরের কবিরাও মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারলো না।  



আলিপুরদুয়ার জেলা কবিতায় শূন্য দশক--- 


চাঁদ-নদী-ফুল-পাখি-আকাশ নিয়ে বাংলা কবিতায় যুগযুগান্তর ধরে বহু অনুসঙ্গ এসেছে...


শূন্য দশক তার ব্যতিক্রম নয় শুধু আঙ্গিক পাল্টে গেছে 


যেমন সুব্রত সাহা কবিতায় দেখি 

,ঘামে ভেজা হাত 

      রাত্তির স্ক্রিনে 

       নামা হাফখানা চাঁদ...,



,খিলান থেকে চাঁদ সরিয়ে নিতেই সফর শুরু,


,চাঁদ সরতে সরতে বামন হয়ে গেলাম, 


,চাঁদ = চন্দ্রিমা, 


,দেখা হলে অপেক্ষায় চাঁদ 

        বুকে মৌ বসে,




আবার বাবলি সূত্রধর সাহা লিখেন


'আলোর দাহ। অপলক চাঁদের ধস্;

 পরিত্যক্ত শব্দ ভাঙে বাতাস,

ঘুমের আবর্তে প্রোথিত

বিষাদের মিথ্।

স্যাটেলাইট স্বপ্নে ছকহীন যাপন।'


শুভংকর পালের কবিতায় 

দুঃখ নদী হয়


'নদী হয়ে ওঠার আগে বিরামহীন সেই শোকাশ্রু বয়ে যায়

আর রাতের শহরে জেগে ওঠা স্বপ্নের ভিতর 


উচু উচু প্রাসাদগুলো ছাপিয়ে যায় সেই কান্নারা,


আবার কখনো তার কবিতায় বলছেন স্পর্শের ভিতর নদী হয়ে ওঠার আহ্বান দেখি।


তার সম্পর্ক শিরোনাম কবিতায় লিখেছেন... 


'স্পার্ম টেস্ট টিউবে নোতুন নাবিকের

বাইতে বাইতে ইহকাল 

জামার ভিতর আমি 

কাঁহাতক কুরবান

জন্মের ভিতর আলো ভাঙ্গচুর 

বিসমিল্লার সানাই উঠে গেছে সম্পর্কে 

দস্তানা খুলে দিচ্ছে লেপের দুপুর 

দুঃখের নিচে ভাত ঘুম 

এখানেই আঁচল পেতে দেয় মায়ের আদর।' 


বাবলি সাহা, শুভংকর পাল, সুব্রত সাহা ছাড়াও আলিপুরদুয়ারে শূন্যের আরও কয়েকজন উল্লেখযোগ্য কবি 

মোনালিসা রেহমান, রামকৃষ্ণ পাল,

সোমা সাহা পোদ্দার, অম্বরীশ ঘোষ প্রমুখ...


নতুন দশক এসে তার পূর্ববর্তী দশককে  অতিক্রম করার চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। প্রথম দশক আবার ধ্রুপদী লেখার দিকেই বেশী বেশী জোর দিয়েছে...

No comments:

Post a Comment