Wednesday, April 7, 2021

 

গুচ্ছ কবিতা


খরিদ্দার কথন
চিরঞ্জীব হালদার

আলতাকে মনোহরণ ভাবিবার অনেক কারণ আছে।
দর্পণ  ভাবেনি তিনিও মনের সমাহার।


উঠোনে না ফোটা বেলি
আমার থেকে সে মনকে কিঞ্চিৎ চেনে।
সুদখিনা এসো এসো
দর্পণে দেখে যাও করবী সভ্যতা।
আহো বউপাখি কতদিন দেখিনি তোমায়।
হে তন্বী ঋতম্ভরা আরো জোরে পাঁচালীর পাঠদান
মনের সমীপে।

কুসুম তোমার মন নাই
ওই দেখো উদিত কলঙ্ক চন্দ্র
গৃহী ও তাপস ।
দুজনেই পারদর্শী তোমার খেয়ালে।

ওহে মনিহারী দোকান
আমাকে একশত আলতা ও মন দিতে পারো।


৩1-3-21

প্রথা অসিদ্ধ কবিতা
চিরঞ্জীব হালদার

কেমন আছেন ফ্রিডা।

রাতের নিভৃত বাতিদান পোষা বিড়ালের মত
লোমশ লেজ দোলাতে দোলাতে  এক গুচ্ছ
জাফরানি অন্ধকারের মধ্যে হাতড়ে চলেছে
তেরোই ফেব্রুয়ারী।
এসময় স্কুল ফেরত ছায়া কার সাথে জরুরি বিনিময় সেরে নেয়।
 স্যাঁতস্যাতে সিঁড়ি ঘর উবু হয়ে বুঝতে চায় অরক্ষণীয়ার আবলুসি তরঙ্গ।

শীত কাপড়ের কোন আন্তরিকতা ছাড়াই কেটে যাবে
উনিশ শো ষাট।
হে গর্ভবতী জিরাফ বোবা আকাশের ভরনপোষন দিয়ে বুনে নেবেনা  কারুকার্য।

কেমন আছো একথা শোনার মাত্র ফ্রিডা
তার সোহাগ কৌটোর সব পাখিদের
আয় আয় চৌ চৌ।
আর কী আশ্চর্য জানা হয়নি 
আপনি আমার থেকে বসত করেন
দু'বিঘত দূর অচলায়তনী।
এমন নক্ষত্র বিভার সন্ধিক্ষণে আমাদের দেখা
হবেনা তাই কি হয়।


৩১-৩-২১
একটি নিরামিষ কবিতা
চিরঞ্জীব হালদার


বাঁদিকে গোলপার্ক ছাড়িয়ে হাঁটতে থাকুন চমৎকার পুরুষ ।

তিন'শ বছর আগের এটা কোন সারপেন্টাইন জলাধার নয়।
কোনও এলি-তেলী ষোড়শী আপনার প্রেমিকা হতে 
না পেরে জলে ঝাঁপ দিলে জল পুলিশ ডাকবেন।

বাদলা পোকারা আসবে পাল্কী চেপে  ।
সমবেত ড়ানা খোয়ানোর  আগে পংক্তিভোজে ভিড়ে যাবে।

অভিপ্রেত বিরহের হরিণ পুরুষ।
মুগ্ধ নক্ষত্রের কাছে বিষাদের হলফনামা গচ্ছিত রেখে রচনা করো বিবাহের লঘু সঙ্গীত।

২৯-৩-২১

 
অতীন্দ্রিয় শবাধারে রচিত হোক তোমাদের
 প্রথম মিলননিশি।
 


কতটা পান্ডিত্য তার পাল্কী জানেনা।

কাহারদের মখমলী স্বর সোনালী ঘাসের নিচে
শুয়ে আছে পিরামিড সম।
যবুথবু প্রান্তীয় যুবা নভর

আপনাকে
চিরঞ্জীব হালদার

কুরিডন ট্যাবলেট কেন খেতে হয়েছিল। 
কুড়ি বিঘের যে বাস্তবতা তার সরল সাযুজ্য থেকে 
যে বিশ্বাস তৈরি হয় তা আপনার পাঁচ-পাঁচটি বিনিদ্র রজনী।
বসন্ত ঝামরে পড়লে প্রেম আর পরিণয়ের ভেতর এক অদৃশ্য হাইপেন হয়ে ওঠে
 মিথ্যে ঘটকালির এক একটি প্রক্রিয়া।

যে ছায়া দেখে 
মানুষ জেনে যায় রাষ্ট্র কীভাবে চালাকি গুলোকে বিশ্বাস যোগ্য করে তোলে ।
কিভাবে এক তরুণ তার প্রাণভোমরা পান্ডুলিপিকে
বালি ব্রীজ থেকে জলের গর্ভে নির্বাসিত করায়।
দু'চারজন বন্দি জোটাতে না পারলে
কারারক্ষীর শুকতলাও হাঁচি দিতে দিতে 
আত্মহত্যার ব্যাকরণ মুখস্থ করবে।
আরও সত্যি কথা হলো অতিরিক্ত রাত্রি  আপনাকেই ব্যায় করতে হবে হাভাতে ঠগীদের সমাজ কল্যানে।

 হাড়-মাংসের কাঠামো  খুলে  দাঁড়িয়ে আছে দরদীয়া
সড়ক।
তার প্রতিটি বাতিস্তম্ভ থেকে চুঁইয়ে পরা শব্দের নাম
আপনি।

২৯-৩-২১


আপনাকে
চিরঞ্জীব হালদার

কুরিডন ট্যাবলেট কেন খেতে হয়েছিল। 
কুড়ি বিঘের যে বাস্তবতা তার সরল সাযুজ্য থেকে 
যে বিশ্বাস তৈরি হয় তা আপনার পাঁচ-পাঁচটি বিনিদ্র রজনী।
বসন্ত ঝামরে পড়লে প্রেম আর পরিণয়ের ভেতর এক অদৃশ্য হাইপেন হয়ে ওঠে
 মিথ্যে ঘটকালির এক একটি প্রক্রিয়া।

যে ছায়া দেখে 
মানুষ জেনে যায় রাষ্ট্র কীভাবে চালাকি গুলোকে বিশ্বাস যোগ্য করে তোলে ।
কিভাবে এক তরুণ তার প্রাণভোমরা পান্ডুলিপিকে
বালি ব্রীজ থেকে জলের গর্ভে নির্বাসিত করায়।
দু'চারজন বন্দি জোটাতে না পারলে
কারারক্ষীর শুকতলাও হাঁচি দিতে দিতে 
আত্মহত্যার ব্যাকরণ মুখস্থ করবে।
আরও অতিরিক্ত রাত্রি  আপনাকেই ব্যয় করতে হবে
হাভাতে ঠগীদের সমাজ কল্যানে।

 হাড়-মাংসের কাঠামো  খুলে  দাঁড়িয়ে আছে দরদীয়া
সড়ক।
তার প্রতিটি বাতিস্তম্ভ থেকে চুইয়ে পরা শব্দের নাম
আপনি।


২৯-৩-২১



দোকানির নাম রাধা।
মুঠো মুঠো গুলাল নয়।
জামবাটিতে যেন থরে থরে সাজানো আছে
' হিত 'প্রত্যয়।
আমার প্রেমিকার নাম ১৩ ই চৈএ
 আনলাকি সান্যাল।

২৯-৩-২১
পক্ক কদলি ও দোল সমারোহ
চিরঞ্জীব হালদার

রসালো ও টলোমলো গোঁসাই।
শুরু হোক খেলা।
গাছে গাছে অর্ধপক্ক কদলির সমারোহ।
পরন্তু কিছু পক্ষিও আছে আশেপাশে।

গোঁসাই হে শুরু হোক শিমুলে পলাশে।
খঞ্জনির পিপাসা পেলে ভেজা হাত ভোজবাজি জানে।
এসো দায়বদ্ধ আনন্দবীনা।
উড়ন্ত ছায়া থেকে সংগ্ৰহ করো টোপা কুল মধু।

বেলা বহমান।
আমরাও কদলির মত অপারক রয়ে যাবো অসীম ভবনে।
শুরু হোক শিমুলে পলাশে।
না রঙের দোল সমারোহ।

২৯-৩-২০

সেতু অথবা সার্কাস
চিরঞ্জীব হালদার

যে সেতু প্রায়ই নিজেকে ভুলে যায়।
 তার মগজে ভিড় করা তারাদের কাছে হাঁটু গেড়ে
প্রার্থনা করে সেই সব মহৎ মানুষের জন্য।
রাষ্ট্রনৈতিক ধ্যান ধারণা একটা  অন্তর্লীন চোরাস্রোত। 
তার সুলভ সঙ্গতকার ব্ল্যাক কফি আর ভিজে বিড়ির নাদান স্মোক রিং।
একজন যখন তুমুল নীল বর্ণ
 অন্যজনা সূর্যমুখী ক্ষেত থেকে তুলে আনা নকশীকাঁথা।
সেই সব মহৎ মানুষেরা যাদের  গোড়ালি
কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে আসার পর
শেষ চালে কিস্তিমাত করবেন
যার বন্ধুতালিকায়  বিপরীত কালসাপের তন্বী প্রেমিকা।

ধরে নিন প্রতিরাতে  বৃষ্টি মেলে দেয় নাভিগন্ধ।
সেতু ভুল করে ঢুকে পড়েবে ভবিতব্য সার্কাসের তাঁবুতে।
তখন
রিং মাস্টার বাঘের খাঁচায় আর স্মৃতি ফিরে পাওয়া
ক্ষুধার্ত পশুদের নীল জলাধারে নামার অনকন্ট্রোল তোড়জোড়।

তখন কী আর্কিমিডিসের বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে সেতুটা আবার ঘুমিয়ে পড়বে।




বউঠাকুরানী হাটের ঘড়ি যে আমার হতে পারে
কে জানতো।

উদ্ভট কবিতার অবতারনা
চিরঞ্জীব হালদার

এক বাস্তববাদী ফাইলে
জরুরি অসত্য  গুলো ভিলুকআপ মারার পর
দেখা গেল  বুকের বাঁদিকে  আমফানে বয়ে য়াওয়া   সব ত্রাণ কর্মীরা রাতারাতি বামনে পরিণত।

সাপ্লাই চেইন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যুৎ এক অশরীর আত্মা ।
তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে হ্যাংওভার কাটাতে
আপাতকালীন দ্বীপে পাঠান হয়েছে।
তড়িঘড়ি ব্যাকআপ ফাইল কারককে ডাকতে গিয়ে দেখি
সে  প্রেয়সীর ওড়না অনুসন্ধানে নিরুদ্দেশ।
তেনার আবার নীলনয়না হিসাব বেশ নামডাক ছিল।
সেখানে কয়েকটা মাছরাঙা শবের মৌরুসিপাট্টা।

এখন আমার সিস্টেমে আঁশ গন্ধ জরুরি।
ম্যারেজ রেজিষ্টার এর পাশে ঘুর ঘুর করা
পি ডি এফ ফাইল গুলো কনভার্টার এর
অপেক্ষায় ঝিমোচ্ছে।

আমার বিশ্বস্ততার নাম হরিচরন।
তার জল গামছার খুঁটে ভেলীগুড় আর ন্যতানো
মুড়ি ।
তারা এখন শূন্য থেকে অনন্ত শূন্যের ঝাপসা
মরুহিংলাজ।

24-3-21

মূর্খ

চিরঞ্জীব হালদার

এক বান্ডিল প্রলম্বিত মূর্খামির দাম কত হতে পারে। ভেবে বলবেন ভদ্রমহোদয় ।

 মাছি ও নীল রং  ভুল করে ঢুকে গেছে তদ্ধিত প্রত্যয়ে।
শ্রমিক মানুষ আর ক্ষুধিত শয্যা প্রত্যেকেই উদিত হন। 

চাইলে জেন্ডার ঘটিত গন্ডোগোল
অকৃতদার ঘুম আর গৃহী সারস কে নিয়ে রচনা লিখবেন ভদ্রমহোদয়।

21-3-21


উপবিষ্ট যদি কোন সমাস হতো।

উপবেশন মুদ্রা ঘিরে মিথুন মেঘ
চৌষট্টি বর্ণে কলতান শুরু করেছে
হে বসন্ত তুমি তার নিষিদ্ধ আপেল।

অপরিসর বান্ধব লুব্ধক তারাদের জামা পরে
হরিনের নাভি বরাবর যেতে যেতে
মটর ক্ষেতে মিলিয়ে যাচ্ছে 

হারিয়ে যেও না নিলাম্বরী

ইতিহাস
চিরঞ্জীব হালদার

কথা বলো লুডোর ঘনক।
তোমার স্বীকারোক্তি শুনে কেঁদে ওঠে সরল মানুষ।
তুমি কি দেখোনি জিরো সঞ্চয়ী কেমন জিতে যায় ।

শূন্য মাধ্যমে আলো ও প্রকৃত খেলোয়াড় তোমাকেই প্রতিদ্বন্দী ভাবে।

শোক প্রস্তাব বলে কিছু নেই।
হেসে উঠো যেভাবে হেসে ওঠে হেরে যাওয়ার পর বসন্তের জ্যোৎস্না সরণি 
২১-৩-২১

অন্ধ
চিরঞ্জীব হালদার

যেখানে কোন তিলের অস্তিত্ব নেই।
বেসামাল লন্ঠন  কথা বলে।
আমরা কেহ কখনো বমি করবো না এই শর্তে
অন্ধ নাকচাবি ফিরে পাবো।

পুড়ে যাওয়া অন্তর্বাস কথা দিয়েছে
ফিরিয়ে দেবে পুঁথি পাঠিকার নোলক।

বেসামাল লন্ঠন নিভে যাওয়ার আগে
ভুল মানুষীর থেকে ছিনিয়ে নেয়
মুগ্ধ লিপ্সা।

আসলে লন্ঠন বুঝতে পারেনা
অন্ধকার তার প্রকৃত প্রণয়ী।
২১-৩-২১

লন্ঠন
চিরঞ্জীব হালদার

যেখানেই যাই না কেন ঝাড়লন্ঠন সঙ্গ ছাড়ে কই।

ওই যে দারুপাত্র ঘিরে নিভের্জাল ভিতু সমাহার।
পাঁচজন এক হলে জ্বলে ওঠে মদ্যপ আলো।

আহা সেই কবে কেটে গেছে  সবার লিলিথ।
চূড়ান্ত রমনের আগে ভাস্বরতা বাজি রাখে
ঢালু পথ।

নিভৃত আলোর নিচে নিবৃত্ত মানুষ সেজেছে লন্ঠন।

১৪-৩-২১

পুঁচকে মেয়ে কুঁচকে থাকে
সুচকে বলে ঝাঁটা
কুল গাছকে ভুল করে সে
বলবে সজনে ডাঁটা।

নাভি
চিরঞ্জীব হালদার

নাভির কোন কার্যক্রম নেই।
নিস্পাপ গ্ৰহনের হেতু স্মিতভাষী।

প্রতিহারীর পোষাকে গাঢ় সে এক নাভি বান্ধবী। ।
চেতনা ও শরীরের পিঙ্গল সংশ্রবে ওঠে নামে তন্ময় পিপাসা।

অনাদি চরণ এঁকে চলে বেতস নাভির পাশে  
গাভী ও মানুষের ভ্রমর বৈভব।

কোন পাপ নেই যা আছে তা জানে চরাচর।
কথা বলো নাগ ও অর্জুন 
কুমারসম্ভবে।

১৪-৩-২১

নলকূপ
চিরঞ্জীব হালদার

অনেক গুলো দেবালয় পার হওয়ার পর বোঝা গেলো নলকূপ ও মিথ্যা বলে।

যদিও পুরুষজল স্বভাবে তৃষ্ণা বান্ধবী।

সেজে ওঠো বিষকন্যা ।
তোমার ও সন্তান আছে
জাগাও নলকূপ।

মিথ্যা বলার আগে মনে রেখো বিদুর তোমার সন্তান।

১৪-৩-২১
আয়না
চিরঞ্জীব হালদার


একা গর্দভ আয়না কে জিজ্ঞেস করে
তার রূপ সম্পর্কে দু'চার কথা বলতে।

এক গুঞ্জাইস নাইন এম এম জিজ্ঞেস করে
তার তলপেটে সমুদ্রের নাকছাবি লুকানো।
দু'চারটে ভালো ঘুম পাড়ানীয়া গান শেখাতে পারো।

এক তোতলাকে বলা হয়েছে
এই দুজনের মনোরঞ্জনে 
জাতীয় সঙ্গীত গাইতে।

ডিনার টেবিল থেকে শুনতে পাই
অট্টহাসিতে আয়না টা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।

১৩-৩-২১


সাজান চিতা তুমি বলো।
 কোন স্বর ছাড়াই নির্মিত হয় ঘাট।
তার স্তরে স্তরে কারা লুকিয়ে রাখে লুটেরার হৃদয়ের অতিকথন।
তাকে পলাশ বালিকা বললে হেসে উঠবে চোদ্দুই ফেব্রুয়ারি।

আমাদের অবদমিত মিলনের ইতিহাস 
আরাবল্লীর কদম শাহের শানিত দোপাট্টার উপর প্রবাহিত শতাব্দী প্রাচীন স্বপ্নেরা এখন গুনগান শুরু করলে উঠে আসবেন মোনালিসা।

ভালোবাসার কোন বংশধর হয়না 
তাজমহল হয় না 
যা আছে তা দিয়ে দুচোখের পয়ার লিখে পাঠিয়ে দিও মণিকর্ণিকা ঘাটে। 
মৃতকন্যার অভুক্ত লিপি বাহক এসো
মাঝি ও পালহীন অলৌকিক জলযান
সব শোক ভাসিয়ে ফিরে যাব কৃত্তিনাশায়।








রুক্সিনি বাউল তুমি সব জানো।

 তুমি সব জানো আট কুঠুরি।
কোথায় কোকিলের ডাক কোথায় শৃগালের হাই।
তোমার সাজগোজের ভিতর আটপৌরে নদীর  ছলাৎ ছল।

বিকল্প কলাকৌশল ও সময়ের ভেতর প্রগাঢ় তিতির ডেকে চলে।
কে কাহার প্রকৃত মিত্র।

অযুত শাসনের পর হরিণ শাবক থেকেও হাই আর ওঠেনা।
অজিত বর্ণমালা
এই বিবাহ বাসরে আমাদের লক্ষ্যভেদ নিমিত্ত মাত্র।

10-3-21


অবসন্তের কবিতা
চিরঞ্জীব হালদার

মা বলেছে 'থুন' এর আগে ' মি' বসানো বারন।
আছে নাকি উপযুক্ত তেমন কিছু কারন।

সিগমুন্ড এক দাড়িওলার ভারিক্কি যে ঋষি
জার্মানিতে থাকেন ছেলে মায়ের কোন পিসি।

দ্রাবিড় লিপি লিখতে গিয়ে লেখা হলো 'লিবি'
কে যে কখন  'ডো' বসালো টের পায়নি বিবি।


হতাশ ব্রা'য়ের দিগন্তে রূপ শঙ্খ খিটিমিটি।
নদীকে লেখা অষ্টাদশীর প্রাচীন 8 চিঠি।

মেঘ করলে আকাশ জুড়ে  যেসব বলা বারন
বসন্ত জাগ্রত দ্বারে বলেনি ভবতারন।
৭-৩-২১

আর কি
।ঠম

বলো তিতির সমাচার ।
বলো কড়িকাঠ 
নিষিদ্ধ নেউলের কথা কিছু বলো।।
কি বলবে বলে ফেলো ব্রিগেডিয়ার।
বলো ঘুমন্ত পিস্তল
বলো পাগল ছেলের মা
নুসরাত জাহান ।
ঈর্ষাকাতর মেঘ
কিছুই বলবে না যদি কেন স্তব্ধ মোবাইল ফোন আকন্ঠ মাতাল।
নিষিদ্ধ ছবির আত্মপক্ষ সমর্থনে বলো।
না
্ বলো
 কেন ছিদ্র রেখেছিলে বেহুলা বাসরে।


৫_৩-২১

কোন কবিতা লিখবো না বলে ডালিমের কাছে যায়নি।
পরিতোষ  তোমার প্রাচীন পুঁথিতে জলের তন্তু।
বঙ্গীয় ভীটের পশ্চিম দিকে যে অদ্ভুত পুষ্করিণী
তার টলটলে দেহে তোমার সুপুরিবনের মেধা
 ভেসে থাকে কলা পাতার নৌকায়।
তোমার না বলা বর্গের সমকোণে কারা যেন বনভোজন শুরু করেছে ।
সেই সমাবেশ আর চিৎকারের ঋদ্ধিময়তা দিয়ে যে অন্নের আয়োজন
তার শুভ্রতা ধার করে রমনার গাছেরা হেসে ওঠে।

তোমার ক্যাথোড জুড়ে একুশ  দর্পণ।
যদি হৃদি ভেসে যায়
পরিতোষ ধার দিও নিহত শরনার্থীর মেক আপ।

৫-৩-২১




না কবিতার প্রস্তাবনা
চিরঞ্জীব হালদার


চিন্তার শ্রুতিলিখন আঁকতে আঁকতে
হেলিকপ্টার অদৃশ্যবাদীদের দলে ভিড়ে গেলে
সকাল তার অন্তর্বাস পরে নেওয়ার অপেক্ষায়।

রাতের আবলুসীময়তা না কাটিয়ে  ফড়িংটা
ভিজে পাতাদের বাক্যালাপের ভেতর গুনগুন শুরু করেছে।

পরাজিত পোশাকের  থেকে বেরিয়ে আসা
এক গণিতকুশলী কে দেখি ফুল না আসা উচ্ছে
ক্ষেতের পাশে ঝিমোচ্ছে।

হামানদিস্তার সাথে উত্তর নামেলা অঙ্কগুলো
প্রায়ই বিতন্ডা লাগে।

এমন এক সকালের নাছোড় ঘ্যান-ঘ্যানানি গুলো
বুকের বাঁ দিকে জমায়েত শুরু করার আগে 
অচেনা নাম্বারের কলব্যাক গুলো ঝালিয়ে নিতে হবে।

অবলুপ্ত বাসরুটে দুঃস্বপ্ন গুলো খালাস করতে না পারলে খেলনা দোকানী  তোমাকে ধারও দেবেনা। 

জানো দিদান কেন যে এনারা সবাই কাকতাড়ুয়াকে ভয় পায়।

৪-৩-২১


বসন্তের কবিতা
চিরঞ্জীব হালদার

সুপ্ত লাটাই থেকে গলগল হৃদি উড়ে যায়।
হাতে- হাত সহচরী ডেকেছে বসন্ত।

ক্ষুধার্ত পিচকারী।
কার্যত নাবালিকা ।
আব্বুলিস খেলাঘর 
প্রেমিকে প্রেমিক।
শ্মশান ভরদ্বাজ তুমি আজ তুঙ্গ ফাল্গুন।

সব দেহ সুপ্ত শামুক।
মানুষের পদশব্দ শুনে গুটিয়েছো পিঙ্গল সমীপে।

দৃশ্যত লাটাই থেকে গলগল হৃদি উড়ে যায়।

৩-৩-২১


মধুবাতা
চিরঞ্জিব হালদার


দিকে দিকে আয়োজন।
ফুলেরা নিরোধক পরে ফুটে আছে।

মানুষ ও মানুষীর তদ্রুপ মোহ।
সাজানো ক্যনভাস ও ক্যনেস্তেরা।

কুয়াশা ও গর্ভবতী।
তার ও সন্তান কিছু কাজ জানে।


ময়দানে আজ কাহার আয়োজন।
মোড়ক বহির্ভূত ফুল ও বীজধান তোমাদের গুনগান করে ঋতায়তে।

৩_৩_২১

যাও পাখি
চিরঞ্জীব হালদার

লার্ক পাখির মতো।
অবগুন্ঠিত বন্দর তার
এক একটি পালক।
খসে পড়ে জলের গোচর।

তেমন জাদুবয়ান নও।
তোমার আজ্ঞাবাহী যাত্রাপথ
করুণ ফুলের গুনগানে চেয়ে থাকে।
রোদের অস্ফুট সংলাপ মাতৃসদনে ঢুকে পড়লে
বেদগানে ভিজে ওঠে চরাচর।

যাও পাখি শূন্যতা জয় করা ক্রান্তদর্শী দিন
ঠোঁটে নিয়ে ফিরি করো
ভাসমান মঙ্গল।
আমরা বাহক মাত্র।
এসো খোদিত হও সলাজ সদন।

২-৩-২১

অনভিপ্রেত খনিজে  বৃষ্টি হয়।
বৃষ্টি ও তার পতন  সুচারু সাজিয়ে রেখো ডিভান বিন্যাসে।
খনিজেরা প্রথাগত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে ফিরে আসে ।
মৃত্যুও পতিত হয় ।
অন্ধকার পতিত হয়। 
অনভিপ্রেত গ্লেসিয়ারে বৃষ্টি হয়।
পতনের মধ্যে হয় ।
 আবাদ  মানুষ।

মানুষে মানুষে বৃষ্টি হয় ।
সিক্রেট কথন গুলো নিভৃত ভিডিওতে ভিজে উঠে।
 ডেকে আনে পরামানিক  ।
চুল ও চলন।
ধ্বনির ভেতর ধ্বনি পতিত জমিন।
বৃষ্টিও আনত অভিপ্রায়ে।
ম্যাটফিনিশ টপনট ছড়িয়েছে  ধীরে ধীরে।

কোন কারন ছাড়াই হাই তোলে ।
বৃষ্টিও ঝুমকো দুল পতনের কথা বলে পারস্পরিক।

১-৩-২১

 দলছুট 

 প্রবীর রায়


অচেনা লাগে যখন অন্যরকম ব্যবহৃত হয়ে
গড়িমসি খেলায় রয়েছো
শহরের অনেকগুলি খোপে ঘর পালটে
আর কতবার ঘুরেফিরে  আস্কারা

পথে নামার কথা ছিল
পথেই থাকার কথা ছিল
তবু

 



আর কোন সভায় ডেকোনা
মানিক সাহা

নিজেকে সমস্তকিছুর থেকে সরিয়ে নিয়েছি
আকাশ, মাটি, জল, বাতাস নিয়ে আমার সংসার

যে নদীর পায়ে ঘুঙুর বাঁধা আছে
তার পাশে বসে আমি গান গাই

ভেজা বাতাসার মতো মন
অল্প জলেই গলে জল হয়ে যায়

আমি এই আকাশ, মাটি, জল ও বায়ুর মধ্যে 
নিজেকে সমর্পণ করেছি
দয়া করে আর কোন সভায় আমাকে ডেকোনা।

 জলের কালিতে লেখা

দেবাশিস মুখোপধ্যায়

১.
ভুলেরা লুকোচুরি লিখছে আনাচে কানাচে
জোরাজুরিতে জ্বর আঁকা হলে
শিশু বেলা মুঠো ভরে রূপকথা
কিশলয় বেশ খিলখিল
খিলিপান মুখে বুকের আপেল রচনায়
ডাক দিলে নৌকা হারিয়ে যেতে লকআউটে
অ্যাম্পেয়ারের সংকেতে শূন্য আমবন
জ্বলছে বিষন্ন সামার ক্যাম্পফায়ারে
ফালাফালা সে ডাগর ফলবতী অকূল দরিয়ায়

২.

এই রাস্তার আয়নায় 
তালগাছ আকাশ চাদরে

বৃষ্টি-গ্রামের  দিকে ঈশ্বর হেঁটে যেতে যেতে
অঙ্গের জাদু প্রদর্শন করে

 ছায়ার ভাষায় জড়িয়ে আছে
 ‎কয়েকটি গাছের  ভালোবাসা

আলো মাখবার পর
বসতিগুলি জলকেলি করে

বাচ্ছা জলের উছ্বাস
কল কল করে

৩.
নৈশকালীন অভিযানে নদী
কালী
তার ধারালো সাদা দাঁতে
খিলখিল হাসি যতদূর চোখ  যায়

লণ্ঠনের আলো জানে 
মেঘের আড়ালে ঠিক ইন্দ্রজিৎ

মাছ ধরছে ভূতগ্রস্ত দেশে

 পরগাছা 

নীলাদ্রি দেব 

মিথ্যে একটা আনন্দ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে
                                        অভ্যাসবশত 
জীবন কি আদৌ রুটিন? 
জীবন কি অ্যালার্ম ঘড়ির সাথে 
              একই অনুপাতে চ্যানেল বদল? 
এসব প্রশ্ন ও উত্তরের মাঝে কিছু নীরব কালখণ্ড
                         অনুচ্চারিত দীর্ঘশ্বাস রেখে যায়
দুটো সমান্তরাল হাইওয়ে আঁকতে গিয়ে 
            হাইটেনশন তার এঁকে ফেলেছি 
আমাকে মার্জনা করুন, ধর্মাবতার 
কিছু খুচরো বিষ লেগে আছে ফেলে আসা অক্ষরে 
ঠোঁট ক্রমে রংবদল করছে, চারপাশ... 
এরপরও আপনার সুনজর কাড়বে না 
           বাকি থেকে যাওয়া গল্পের প্লট? 
খেলা এখন এক্সট্রা টাইমে গড়িয়েছে, ব্রাদার 
সাইডলাইন ধরে ছুটে চলছে নির্দিষ্ট রংয়ের পোশাক
অথচ বল ও বোল্ডারের পাশে যাবতীয় কানাঘুষো,
                     আস্ত একটা প্রজন্মের পাশে পরগাছা

         দংশন

           শোভন মণ্ডল

শেষ হয়েও শেষ হয়না

দরবার খুলে যায় হাট করে

গোপন আজুবা শুধু মেলে থাকে মধ্য গগনে


প্রায়শই দংশন ক্ষতগুলো এভাবেই এভাবেই

জাগিয়ে রাখে কেবল পুরনো আদরের ঘ্রাণ

তুমি কেন তবে শরমে মরো মিছে


সেই কবে হুল ফুটিয়ে গেছে তোমায়

                  ঘরকুনো বিষাক্ত বিছে...

 অনুবাদ গল্প 

জড়িবুটি

অমৃতা প্রীতম

অনুবাদ – বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়  


প্রভাতী আমাদের পাড়ার কোন একটি বাড়িতে কাজ করে। বহুদিনের পুরোনো চাকর। তার নতুন বউয়ের সাথে আমার সদ্য পরিচয় হয়েছে, ওর নাম অঙ্গুরি। মাঝবয়সী প্রভাতীর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। পাঞ্জাবী ভাষায় দ্বিতীয়বার বিয়ে করা পুরুষকে দুহাজু বলে।দুহাজু কথার অর্থ দ্বিতীয় জীবন। বছর খানেক হল অঙ্গুরির বিবাহিত জীবন শুরু হয়েছে। তাকে সবাই নতুন বউ বলে ডাকে। অঙ্গুরি মাঝে মাঝে আমার কাছে এসে গল্প করে। তার জীবনের কথাগুলো বলে, আমি শুনি।

বছর পাঁচ আগে প্রভাতীর প্রথম বউ মারা যায়। ওদের গাঁয়ে ওর বউয়ের শেষকৃত্যের সময় প্রভাতীর কাঁধে রাখা ভেজা গামছা হাতে নিয়ে নিংড়ে তার জল ফেলে দিয়েছিল অঙ্গুরির বাবা। 

“ কাঁদতে নেই বাবা, যে চলে গেছে তার পথ পিছল করে দিও না, এই গামছায় লেগে থাকা তোমার শোকচিহ্ন আমি নিংড়ে দিলাম। যে জায়গা ছেড়ে চলে গেছে তোমার বউ, সেখানে আমি অঙ্গুরিকে দিলাম তোমার কান্নাভেজা গামছা নিংড়ে আবার নতুন করে শুরু হোক জীবন।”

এটা পুরোনো একটা নিয়ম। চলে যাওয়া বউয়ের জন্য পুরুষেরা কেউ কেউ কাঁদে,কিন্তু এতখানি অবশ্যই কাঁদে না যে গামছা ভিজে যাবে। তবু যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই নিয়ম। মৃতা স্ত্রীর সৎকারের সময় মৃতার স্বামী জলে গামছা ভিজিয়ে কাঁধের উপর রাখে। যদি কোন মেয়ের বাবা সেই গামছা নিজের হাতে এসে নিংড়ে সমস্ত জল ফেলে দেয়, তাহলে বুঝতে হবে এই পুরুষের হাতেই সে তার মেয়েকে সমর্পণ করবে। এভাবেই প্রভাতীর সঙ্গে অঙ্গুরির বিয়ের ঠিক হয়। ওর মা বাত ও অন্যান্য অসুখে ছিল সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী। ফলে ঘরের সব কাজ অঙ্গুরিকেই করতে হত।বিয়ে দেব দেব করেও তাই বছর পাঁচেক দেরি হয়ে যায়। 

 বিয়ের পর প্রভাতী একদিন তার মনিবকে বলল সে নতুন বউকে নিজের কাছে এনে রাখতে চায়, অনুমতি দিলে ভালো নইলে তাকেই নিজের গাঁয়ে অন্য কাজ দেখতে হবে। মালিক খুব কৃপণ। একটা বাড়তি পেটের খোরাক জোগাড় করা মানে বেশ কিছু টাকার অপচয়। তাই প্রথমে সরাসরি না বলে দিলেও প্রভাতী যখন বলল, তার বউয়ের খাবার সে নিজেই জোগাবে, শুধু একটা ঘর দিলেই হবে তখন মালিক রাজী হল। অঙ্গুরির শহরে আসার ইতিহাসটা এরকম। 

নতুন বউ অচেনা জায়গায় এসে ঘোমটার আড়ালে লুকিয়ে রাখত নিজেকে। মেয়েদের সাথেও বিশেষ কথা বলত না প্রথম প্রথম। মাস খানেক পর তার লজ্জা লজ্জা ভাবটা যখন কিছুটা কাটল তখন ঘোমটাটা উঠে গেল অজান্তেই। খুব কম সময়েই সে এই পাড়ার সকলের কাছের মানুষ হয়ে উঠল। সে যখন হাঁটত , নূপুরের সুন্দর শব্দ বেজে উঠত তার পায়ে। এই শব্দ শোনার জন্য কমবয়সী ছেলেরা বেরিয়ে আসত রাস্তায়। কিন্তু সে তো সামান্য সময় মাত্র। দিনের বেশিরভাগ সময়ই কাটত ছোট্ট একটা ঘরে। বাইরে এলে তার রিনিঝিনি নূপুরের শব্দের মতোই হাসিতে ভরে উঠত চারপাশ। এই মিষ্টি হাসির আওয়াজেই ফিরে তাকালাম ওর দিকে- পায়ে কী পরেছো অঙ্গুরি?

কেমন মেয়ে গো তুমি নূপুরও চেনো না।

আমি হাসলাম- পায়ের আঙুলে ওগুলো কী?

এগুলোকে আংটি বলে।

বাঃ, বেশ। হাতে এটা কী? দারুণ সুন্দর তো।

কাঁকন।

কপালে ?

আলবিন্দা। 

কোমরে বিছা কই তোমার ?

অঙ্গুরির মুখটা খুশিতে ভরে উঠল- আমার বিছেটা খুব ভারি, পরলে কোমরে ব্যথা করে তাই পরিনি। তবু কাল তোমার জন্য আমি পরব। গলার হারটাও পরতে পারিনি ওর চেইন ভেঙে গেছে বলে। 

অঙ্গুরি তার রূপোর গয়নাগুলো পাড়ার সবাইকে দেখায় বেশ আনন্দের সাথে। বলে- আমার মায়ের গয়না। 


সময় থেমে থাকে না। শীত পেরিয়ে গ্রীষ্ম আসে। ছোট ঘরটার মধ্যে সারাদিন থাকতে কষ্ট হয় অঙ্গুরির। তাই মাঝে মাঝেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গাছের ছায়ায় এসে বসে। একদিন আমি বাগানে বসে বই পড়ছি, অঙ্গুরি এসে দাঁড়াল আমার পাশে – কী পড়ছো ভাবিজি?

বই পড়ছি। পড়বে? অক্ষর থেকে চোখ তুলে ওকে জিজ্ঞেস করি।

আমি লিখাপড়া শিখিনি যে।

 শেখার বয়স তো পেরিয়ে যায়নি। শিখে নাও আমার কাছে।

 না। 

 কেন?

 মেয়েরা বই পড়লে পাপ লাগবে।

 আর ছেলেরা যদি পড়ে?

ওদের পাপ লাগে না। ওদের লিখাপড়া করা দরকার।

তারমানে তুমি বলতে চাও আমি পাপ কাজ করছি?

না ভাবিজি। শহরের মেয়েদের বই পড়া দরকার। শুধু গাঁয়ের মেয়েরা বই পড়লে পাপ হয়। 

আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলাম। আমার হাসি দেখে সেও হাসল। 

মানুষ যদি তার বিশ্বাস নিয়ে বাঁচতে চায়, বাঁচুক না, ক্ষতি কী। ভুল ধারণা আঁকড়েই যদি কেউ সুখী হতে চায় ,কী দরকার সেই সুখের ঘরটাকে ভেঙে দেওয়ার। আমি তার হাসিমুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম অনেকক্ষণ কোথাও কোন মালিন্য লেগে নেই। গায়ের রঙ চাপা, সুগঠিত শরীর।সুন্দর মাখানো আটার তালের মতো নরম যৌবন ,কোথাও বাড়তি মেদ নেই। অঙ্গুরির দ্বিগুণ বয়সী প্রভাতীর কুঁচকানো চামড়া, ঝুলে পড়া চোয়াল, আধভাঙা শরীর। সে কি পারবে এই আটার শরীর বেলে ঠিকমতো রুটি বানাতে? নিজের এই ভাবনায় নিজেরই খুব মজা লাগল। নারীশরীরকে আমিও আটার তালের মতো ভাবছি কেন?

ধীরে ধীরে অঙ্গুরির সাথে আমার সম্পর্কটা আরও সহজ ও আন্তরিক হয়ে উঠল। আমি তার গ্রামের খোঁজখবর নিলাম। তার বাবা মা ভাইবোনের কথা জিজ্ঞেস করলাম। সে তার গাঁয়ের সবুজ মাঠের কথা বলল যেখানে সে গোল্লাছুট খেলতে খেলতে বড় হয়েছে। সেই নদীর কথা বলল যার জলে সাঁতার কাটতে কাটতে সে ফেলে এসেছে তার বিয়ের আগের দূরন্ত দিনগুলি। 

আমি জিজ্ঞেস করলাম তোমাদের বিয়ের নিয়মকানুন কী?  

সে বলল- খুব ছোটবেলাতেই আমাদের গাঁয়ের মেয়েদের বিয়ে শাদী হয়ে যায়। মেয়ে পাঁচ ছ বছর হলেই তাকে পুরুষের কাছে অর্পণ করা হয়।

এটা কীরকম ?

মেয়ের বাবা থালায় করে ফুল টাকা পয়স আর বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে ছেলের বাড়ি যায়, তারপর ছেলের পায়ের কাছে এই থালা নামিয়ে বলে আমার মেয়েকে গ্রহণ করো।

এখানে মেয়ের ভূমিকা কোথায়? তার বাবাই তো সব।

বাবাই তো মেয়ের জন্মদাতা। 

তা হোক, তবু ছেলেকে না দেখেই তোমাদের বিয়ে হয়ে যায়?

হ্যাঁ। তবে যারা ভালোবেসে বিয়ে করে তাদের কথা আলাদা। তারা দেখেশুনেই করে।

ভালোবেসেও গাঁয়ের মেয়েরা বিয়ে করে?

হ্যাঁ। তবে খুব কম। কারণ ভালোবেসে বিয়ে করলে পাপ হয়।

তাহলে কেউ কেউ পাপ করে কেন?

এতে ওদের কোন হাত নেই। কোন পুরুষ মানুষ ওদের কিছু খাইয়ে দেয়। তখন ওরা পুরুষ মানুষের প্রেমে পড়ে যায়।

কিছু মানে ? কী খাওয়ায়?

জড়িবুটি। পান বা মিষ্টির সাথে মিশিয়ে এটা খাওয়ানো হয়। তখন যে খাওয়ায় সেই পুরুষ মানুষটিকে ছাড়া দুনিয়ার আর কোন মরদ লোককেই তার ভালো লাগে না।

এরকম হয় নাকি? ভারি মজার ব্যাপার তো? 

খুব হয়। আমি নিজে দেখেছি।

সত্যিই দেখেছো?

আমার এক সই ছিল, সে আমার চেয়ে লম্বা আর খুব সুন্দর।সবার নজর ছিল তার দিকে।

তারপর?

তারপর আর কী? সে একদিন একটা লোকের জন্য পাগল হয়ে গেল।তার সাথে পালিয়ে গেল গাঁ ছেড়ে।

তুমি কীকরে বুঝলে ওকে জড়িবুটি খাওয়ানো হয়েছে?

নইলে কি কেউ মা বাপ ছেড়ে ভাইবোন ছেড়ে গাঁ ছেড়ে সবাইকে কষ্ট দিয়ে এভাবে চলে যায়।

কোথায় পাওয়া যায় এই জড়িবুটি? কোন গাছ থেকে? তুমি দেখেছো কখনও কেমন দেখতে হয় জিনিসটা?

দেখিনি। শুনেছি দূরের জঙ্গলের গাছ থেকে তা সূর্য ওঠার আগেই নিয়ে আসতে হয়। তারপর পান বা মিষ্টির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হয়। এর নাম মোহিনী বশীকরণ। মেয়েদের তখন নিজেদের আর কিছু করার থাকে না।   আমাকে খুব ছোটবেলা থেকেই মা নিষেধ করে দিয়েছিল কোন ব্যাটাছেলের হাত থেকে আমি যেন মিষ্টি বা পান না খাই।

তুমি খাওনি ভালো করেছো। কিন্তু তোমার সখী কেন খেয়েছিল?

 কেন খেয়েছিল জানি না। কিন্তু এই পাপের ফল তাকে ভুগতেই হবে।

কথাগুলো সে বলল বটে কিন্তু মনের ভেতর সেই বান্ধবীর জন্য বুকের ভেতর গভীর গভীরতর অনুভূতি তার রয়ে গেছে আজও। মমতা মাখানো ছায়া পড়ল তার উদাস চোখে- বেচারার চেহারা দেখলে তোমার কষ্ট হত ভাবিজি।চুল আঁচড়াত না। খেতেও ভুলে যেত।শুধু কাঁদত। কাঁদতে কাঁদতে দিন রাত কেবল গান গাইত।

কান্না মেশানো গানের ভেতর দিয়ে গল্পটা আরও অনেকদূর যেত। আমি তাকে থামালাম। 

এরপর কয়েকদিন অঙ্গুরির সাথে আর আমার দেখা হয়নি।আজকাল তার নূপুরের শব্দ পাওয়া যায় না।তার হাসির খিলখিল আওয়াজ ভেসে আসে না। চুপচাপ বই পড়ছিলাম। নিঃশব্দে কে এসে দাঁড়াল পাশে। অঙ্গুরি তো এভাবে আসে না। অন্য কেউ হবে বোধ হয়। বই থেকে চোখ সরিয়ে তাকালাম- অঙ্গুরি। 

ওর চোখ ম্লান,বিষন্ন। ‘ আমাকে লিখাপড়া শেখাবে ভাবিজি? 

‘কেন? পাপ হবে না?’

‘হলে হবে।’

‘এখন আমার কাজ আছে। পরে শেখাবো’ 

তখন দুপুরবেলা। নিমগাছের তলে একটা খাট পেতে বসে আছে অঙ্গুরি। আমি কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠলাম। বিকেলে বেরিয়ে দেখি সে গাছতলায় মুখ বুজে তখনও বসে আছে সে।আমি চুপিচুপি তার পিছনে এসে দাঁড়ালাম। বুক কেঁপে উঠল তার গান শুনে। 

‘ তোমার গুণের মায়া কত তার তাপ

 তোমার রূপের লাগি পুড়ে যায় চোখ। 

ও সখী তোর মতো বিষ খাব, পাপ

 যদি হয় তবে এ জনমে বার বার হোক। 

আমার পায়ের শব্দে শুনতে পেল অঙ্গুরি।সে গান থামিয়ে আমার দিকে তাকাল।

কী সুন্দর তোমার গলা। দারুণ গাও তো তুমি। 

সে মুখ ফিরিয়ে নিল অন্যদিকে। বুঝলাম কান্না লুকোতে চাইছে।একটা আধভাঙা হাসি জোর করে ঠোঁটের উপর রেখে বলল- একে কি আর গান বলে? মন চাইল গাইলাম। এই যেমন এখন যদি বলি- ‘চার মাস যায় গরম হাওয়ায়, পায়ের বালি তাতা। চার মাসের বাদল হাওয়া ভিজায় শুধু মাথা। চার মাস শীতের কাঁপন ঝরায় মনের পাতা।’

গান থেমে গেলে অঙ্গুরি আমার দিকে চাইল। ওর চোখে জল। ভেতরের উথাল পাথাল বেরিয়ে আসছে নদী হয়ে। আমার খুব ইচ্ছে করছিল জানতে- তোমাকে কি কেউ জড়িবুটি খাইয়েছে? মনের ভেতরেই থেকে গেল এই  নিরুচ্চার জিজ্ঞাসা। আমি ওর শুকনো মুখের দিকে তাকিয়ে মাথায় হাত রেখে স্নেহসিক্ত গলায় প্রশ্ন করলাম- আজ তুমি কিছু খেয়েছো অঙ্গুরি?

কিছু? ওর জিজ্ঞাসায় কেঁপে উঠলাম আমি নিজেই, না মানে সারাদিন তোমাকে রান্না করতে দেখিনি তো তাই?

আজ রান্না করিনি এখনও।

চা খেয়েছো সকালে ?

চা! 

তুমি চা খাও না সকালে?

খাই, রোজই খাই। কিন্তু আজ খাইনি।

কেন?

প্রতিদিন রামতারা দুধ দিয়ে যায়। কদিন ও নেই। দুধ পাইনি তাই চা খাওয়া হয়নি।

আমাদের এই কলোনির পাহারাদার রামতারা। আমরা সবাই তাকে চাঁদা তুলে বেতন দিই। কম বয়সী হাসিখুশি ছেলেটিকে দেখে আমার খুব মায়া হয়। সারারাত সে রাস্তায় টহল দেয়। সকালে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমিয়ে থাকে আমতলায়।অঙ্গুরি আসার আগে অবধি এটাই ছিল তার রোজকার রুটিন। কিন্তু এখন সে গোয়ালার কাছ থেকে দুধ নিয়ে এসে অঙ্গুরিকে দেয়। অঙ্গুরি চা বানায়। সেই চা খেয়ে আমতলায় প্রভাতী আর রামতারা আড্ডা দেয়। নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করে। কদিন হল রামতারা ওর দেশের বাড়িতে গেছে।

তার মানে তুমি তো তিন চারদিন চা খাওনি অঙ্গুরি?

 সে বোবার মতো চেয়ে থাকল আমার দিকে তারপর ধীরে ধীরে মাথা নেড়ে বলল- হ্যাঁ। 

শুধু কি চা? নাকি কিছুই খাওনি এ কদিন?

এবার সে কোন উত্তর দিল না। তার মুখই বলে দিচ্ছে আমার অনুমান সত্য।

আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলাম। রামতারার আকৃতি ভেসে উঠল আমার চোখের সামনে লম্বা চেহারা, হাসি মুখ, গোলগাল চেহারা, চোখে মায়াভরা আলো। অঙ্গুরির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম আলতো করে। ওকে নিজের বুকের কাছে টেনে নিলাম – সত্যি করে বলো, তুমি কি কোন জড়িবুটি খেয়েছো কারোও হাত থেকে?

সারা পৃথিবী কেঁপে উঠল প্রবল ঝাঁকুনিতে। যেন একটা ভূমিকম্প হয়ে গেল এইমাত্র। ওর ভেতরে জমে থাকা বাস্প বেরিয়ে এল ফোঁপানো কান্নায়- বাপের কিরা নিয়ে বলছি ভাবিজী, আমি মিষ্টি খাইনি, পান খাইনি, শুধু এক কাপ চা খেয়েছিলাম রামতারার হাতে। ওতে কি সত্যিই কোন জড়িবুটি মেশানো ছিল ভাবিজী?...... 


আমি আর কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না, ওর পরের শব্দগুলো ভেসে যাচ্ছিল কান্নার স্রোতে। 



সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

কবি কথাশিল্পী প্রাবন্ধিক অমৃতা প্রীতমের জন্ম ১৯১৯ সালের ৩১ অগাস্ট অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালায়। কবি ও শিক্ষক বাবা কর্তার সিং হিতকরির অনুপ্রেরণায় খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁর লেখালেখি শুরু।মাত্র ষোল বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ অমৃত লেহরেঁ।দেশভাগ এবং দাঙ্গা তাঁকে প্রবল ধাক্কা দেয়। নারীর স্থিতি, সংগ্রাম আর স্বপ্ন তাঁর সাহিত্যে নতুন এক ভূখন্ড নির্মাণ করেছে। দেশভাগের পর তিনি চলে আসেন দিল্লীতে।উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে কাগজ তে ক্যানভাস, পিঞ্জর, কোরে কাগজ,আদালত, উঞ্চাস দিন , নাগমণি, রসিদি টিকেট প্রভৃতি।ইংরেজিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর সাহিত্যসম্ভার। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক পুরস্কারসহ ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্যপুরস্কার জ্ঞানপীঠ। এছাড়া সাহিত্য আকাদেমী, পাঞ্জাব রতন সহ রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী ও পদ্মবিভুষণে সম্মানিত হয়েছেন। ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর দীর্ঘ অসুস্থতার পর এই কিংবদন্তী সাহিত্যিক অমৃতলোকের পথে যাত্রা করেন। 

এই গল্পটি অমৃতা প্রীতমের জংলি বুটি গল্পের রূপান্তর। 

























 খোঁজ

অনিরুদ্ধ দেব

হারিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই
চোখের সামনে ভেসে ওঠে তিনটে ধূসর প্রেক্ষাপট -
ঝাপসা কুয়াশা, গাঢ় লাল রাত্রি আর সমান্তরাল রেল লাইন
তারপর..........
শুঁয়োপোকার গুটি কাটে শুভ্র প্রজাপতি
একটা সোনালী রোদ্দুর ছুটে যায় শ্মশানের দিকে
নতুন ভোরের খোঁজে

 পাখি বিষয়ক দু'টুকরো

                          -তন্ময় ধর 

১।
হাওয়ার গভীরে পাখির দাগ স্পষ্ট হচ্ছে
বৃত্ত আঁকতে আঁকতে তীব্র কেশে উঠছে আমাদের খিদের চামচ
রক্তের ছিটে থেকে সরে যাচ্ছে আঙুলের ভারসাম্য
আমার নখ বাড়ছে, তোমার ঠোঁটে লবণাক্ত মৌনতা

যৌনতা আসলে শুধু আঁশ
অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন থেকে কাঁটা বিঁধে যাচ্ছে আমাদের গলায়
স্থলপদ্মের রঙে আকাশ ভিজিয়ে দিচ্ছে অভিনয় 
চাপা বরফের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে শূক

শূকপাখি থেকে মায়া অপসারিত করতে করতে
আমাদের উড়ান থেকে নেমে যাচ্ছে অপূর্ণ মাংসের দল
আর ধারণে অক্ষম এক জলের অতলে
ছায়া ফেলছে কালপুরুষের ধূসর আলজিভ

২।
ধরো, অদৃশ্য এক বর্শাফলকের শব্দ খুব আস্তে ফুটো করে দিচ্ছে পাখিজন্মের অহঙ্কার
পাখির খাবার খুঁজতে এসে শক্ত হয়ে উঠছে আলোসন্তান 
তুমি শস্যক্ষেত্রের ছায়া, আমি নীলকন্ঠের চোখ
আমাদের দারিদ্র্যের ভেতর সাপের চোখে নীল রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছেন অন্ধ শিল্পী

খাঁচার ভেতরে সুন্দর করে সাজানো আমাদের প্রেম, খাদ্য ও জল
সতীর খন্ডিত শরীর থেকে কমলা রঙ নিয়ে আমাদের সুখের ওপর ফেলে দিচ্ছে অচিন পাখি 
শূন্য খাঁচার ভেতর থেকে তুলাপিঞ্জি ধানের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে
হালকা হচ্ছে অভিনীত লালাগ্রন্থি  

উড়তে সক্ষম হচ্ছে অভিনয়
উরুর মাংস থেকে আগুন নিয়ে যাচ্ছে এক অদৃশ্য জাদুকর
আমি শূন্যতা, তুমি দিনরাত্রিচক্র
আমাদের ক্ষতস্থান থেকে মরণাহতা রাজকন্যার রঙ নিচ্ছেন অজন্তার শিল্পী

 বাড়তি চাল

উত্তম চৌধুরী 

একটু বানিয়ে বলা ভালো 
আড্ডার আকাশে এতে মেঘ জমে, বৃষ্টি হয়।

একটু ঘুরিয়ে বললে উৎকর্ণ কান
এবং চোখ থাকে বক্তার ঠোঁটেই।

একটু বেঁকে চললে রাস্তাগুলো সোজা হয়
না হলে সোজা রাস্তায় ঢুকে পড়ে গলি।

একটু ছাড় দিলে একালীন বিপণনে
চৈত্র সেল বেশ জমে ওঠে।

একটু রহস্য থাকা চাই 
না হলে দিনযাপন, শিল্পকর্ম বিস্বাদ লাগে।

 ইস্তেহার

সুবীর সরকার

মৃত্যু তো শোকতাপের মত সর্বাঙ্গ জড়িয়ে রাখে
মৃত্যু আসলে একটা হ্যাঙার
হ্যাংওভার স্ট্রিট ধরে হেঁটে যাওয়া পিয়ানো
                                           বাদক
নীল চোখের নারীরা এসব জানে
দোয়াস মাটির দেশ একথা জানে
ডান হাতি খালের জনপদে ম্যাজিকের মত
                                         সন্ধ্যে নামলে
নখ ও দর্পণের মধ্যেকার সব বিরোধ মিটে 
                                                      যায়