Wednesday, September 2, 2020

আলিপুরদুয়ার জেলা শূন্য পরবর্তী দশক

 আলিপুরদুয়ার জেলা শূন্য  পরবর্তী দশক  

শান্তা ভৌমিকের জন্ম আলিপুরদুয়ার শহরেই ।স্কুল , কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় এই উত্তরবঙ্গে ; বর্তমানে আলিপুরদুযারের বাসিন্দা । স্কুল জীবন থেকেই কবিতা লেখার সূত্রপাত শুধুমাত্র নিজের ভালোবাসা লেখা বলেই । প্রথম লেখা বের হয় 'উনিশ কুড়ি ' ম্যাগাজিনে ।তারপরে অনেকটা বিরতি , পড়াশোনা শেষ হবার পরে আবারো পথ চলা শুরু কবিতাকে সঙ্গী করে ...অন্য নিষাদ , উত্তরের কবিমন , অপরাজিত এবং উত্তরবঙ্গ সংবাদের পাতায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে

মেয়েদের নিয়ে এবং সমাজের কিছু বদ্ধ মানসিকতার বিরুদ্ধে মানুষের সূক্ষ্ম অনুভূতি গুলো নিয়ে লিখতে আগ্রহী।



আলাদা পৃথিবী


শান্তা ভৌমিক 



ঘুম থেকে উঠে রোজ জানালা খোলার মধ্যে ভালোলাগা তৈরি হয়েছে ;


বাইরের  পৃথিবীর ধ্বংস কাহিনীর সাথে আমার পৃথিবী কথা বলে ...


মাঝে মাঝে মনে হয় আকাশের আলাদা কোনো রং নেই;


বৃষ্টির আগে যেমন সব কিছু গুলিয়ে যায় ,


দেহাবশেষের মধ্যেও তো অভিমানের রঙ নিশ্চিত ভাবে খুঁজে পাওয়া যায় ।


কতোগুলো অনুভূতি শুধুমাত্র সময় হলেই আসে ...


দিনের শেষে আমাকে আলসেমি গ্রাস করলে মনে হয় সব স্বাভাবিক ;


হারিয়ে যাওয়া ; অচেনা হয়ে থাকা ।


ভালোবাসা লাস্য সমেত মিশে গেছে শঙ্খচিলের আস্তানায় ...


জন্ম ও জন্মস্থান : ১১ মার্চ, ১৯৯১। কোচবিহার 

আত্মপ্রকাশ : প্রথম প্রকাশিত কবিতা 'সুখের সন্ধানে'। মোহনা, ২০০৮

আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার, রায়ডাক ও সংকোশ, পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম লাগোয়া ন্যাশনাল হাইওয়ের পাশেই  বাস ও বাড়-বাড়ন্ত। পালের ভেড়া নই তাই তথাকথিত অসামাজিক, একঘরে একলাটি..


দে ব জি ৎ

কোয়ারেন্টিন


যাদের এখন অনেক রাতের বাহানা তাদের মুছন্ত স্মৃতিগুলো ইচ্ছামৃত্যুর অপেক্ষায়।
আমরা বাঁচাতে পারছি না যেমন পারিনি মাইকেল জ্যাকসন কিম্বা রাজপুত সুশান্ত।

তখন পুকুরভরা মাছ, জ্যোৎস্নাঝরা রাত।
গিটারে ঢেউ বাজালে তোমার সমুদ্র পেতো।
রাতগুলি সার্থক ছোটগল্পের উপসংহার।

'অনেক রাত।                                         ঘুমোবো।'

তোমার ভূমিকা লিখে চলে যাওয়া রাতের পূর্ণতা দিচ্ছি।
পরিচিত মেয়েটির লকডাউনে আটক বিবাহবাসরের স্বপ্ন ডানা পাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপে।
প্রেমে বিজি বন্ধুর ফোনে আমি থার্ডপার্সন।
এক ভদ্র মাতালের স্টেপ জানান দিচ্ছে কিভাবে মিলিয়ে যায় কিছু কিছু ইয়ে।

জানা ছিলো না বাহানার অন্য নাম অজুহাত, ঘুমের অন্য নাম অনিচ্ছা..

কবি পরিচিতি :--

সন্জু কুজুর , পিতা - শ্রী ঁজোয়াকিম কুজুর , মাতা- শ্রীমতি বেলশ্রী কুজুর l গ্রাম - ছোট পুখুরিয়া , পোষ্ট - তালেশ্বরগুড়ি , থানা - শামুকতলা , জেলা - আলিপুরদুয়ার l স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির শুরু l 'মেগাছ ' কবিতা দিয়ে প্রথম আত্মপ্রকাশ ২০০৭ সালে "অথবা" ( বাংলা ) পত্রিকায় l সেই থেকেই বিভিন্ন বাংলা এবং সাদরি পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি চলছে l সম্পাদিত পত্রিকা "মাঠের কাগজ" ( ২০০৭ )



অক্সিজেন ও রক্ত 
            - সঞ্জু কুজুর 
১.       
প্রথম প্রথম অনুভূতিটা কাঁচা ছিল  
তাঁর জলরঙের মৎস্য চোখ ভেসে উঠতো 
আর কেঁপে উঠতো আমাদের শহর  
          
তিস্তার অন্ধকামাখা জলছবিতে আশার জ্বলে ওঠে 
আড়াল-আবডালে বেজে ওঠে পাখির গান 
এই তো সেদিন হঠাৎ তুই থেকে তুমি হলে 
                                    পরে শেষে হলে জান । 

২.       
চেনা আশৈশব জুড়ানো খোলামেলা পৃথিবীটা আর থাকে না 
চলাফেরার পরিধিও ধীরে ধীরে 
            নির্দিষ্ট ও বৃত্তায়িত হয়ে আসে  

তোর উপস্থিতিকে অক্সিজেন মনে হয়  
তোর কথারা দিনে দিনে ক্রমশঃ ধমনীর রক্ত হয়ে ওঠে 
আজ বালিয়ারিতে কান পাতি আর শুনি তোর নূপুরের  আওয়াজ ।


পরিচিতি : খুরশিদ আলম এর জন্ম ১৮-ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯২, আলিপুরদুয়ার জেলার দক্ষিণ পারোকাটা গ্রাম। পিতা বুলবুল ইসলাম এবং  মা জামিলা বিবি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক পরবর্তীতে কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় (উত্তর প্রদেশ )থেকে  স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে যাচ্ছেন। প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ"তোমার শরীর ছুঁয়ে "



কলঙ্ক 
        খুরশিদ আলম 

যাবতীয় কলঙ্ক নিয়ে ডুবে যেতে চাই 

বিষাদ ছুঁড়ে যেভাবে ছুটে আসে হরিণ

সেখানে নির্বাসন বলে কোনো কিছু থাকে না

যাকে তুমি আকাঙ্খা বলে ভাবো সে আসলে মায়া অথবা মোহ 

আগুনে পোড়ার ঠিক আগে 

অন্তত একবার তোমাকে ছুঁতে চাই


উপশম
শুভদীপ ঘোষ


সান্স ক্রিমের বিজ্ঞাপন থেকে মুখ ঘুরিয়ে দেখি
               দীর্ঘ ছায়ার ভিতর ক্লান্তি জমে আছে

 জীবনের গভীরে ভালোবেসে নিয়েছি
                        ম্যাজিসিয়ানের টুপি 
 
হাতের দাগ মুছে  যায় নরম তোয়ালায় 

প্রেক্ষাগৃহের অন্ধকারে
      জোনাকি ক্ষেতের ঘুম নিয়ে আসে ফ্যান্টাসি

গ্রিভেন্স বাক্সে ফেলে এসেছি 
                    চিরকুটে লেখা কবিতা




শুভদীপ ঘোষ
আলিপুরদুয়ার জেলার ছোট্ট চাবাগান ঘেরা জনপদ জটেশ্বরে বেড়ে ওঠা ও স্কুল জীবন।
পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে।
২০১৯ ও ২০২০ তে দু'টো কাব্যগ্রন্থ বের হয় যথাক্রমে *ধ্বংস চুমু আঁক*  ও *প্রেমিকজন্ম ও হাঁসুয়া চাঁদ*
২০১৪ সালে *মুজনাই সাহিত্য পত্রিকা* থেকে লেখার আত্মপ্রকাশ ঘটে।


জন্ম ১৯৯১ সালে, উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার শহরে। পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আসা। ২০১১ সালে কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকার সময় ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রথম কবিতা প্রকাশ। বাংলা কবিতা নিয়ে গবেষণা করেছেন। পেয়েছেন বর্ণালী স্মৃতি পুরস্কার, উড়ালপুল পুরস্কার, সৌমেন বসু পুরস্কার এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার।  চারটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে— ‘সবুজ পাতার মেঘ’(২০১০), ‘দিনান্তের ভাষা’(২০১৫), খামখেয়ালি পাশবালিশ (২০১৮) স্নিজার সঙ্গে জোড়াসাঁকোয় (২০২০)। পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমির ট্রাভেল গ্র্যান্ট।



মিথ
অরুণাভ রাহারায়

ঠিকমতো আঘাত পেলে দূরে সরে যাব।
দাঁড়িয়ে হেলান দেব আকাশের গায়ে

এতটা নীরব তুমি? এতটা গভীর...
সামান্য জল হয়ে নীচে পড়ে আছো।
এই জল আজ
জলঙ্গী নদীতে নেমে কুড়িয়ে নিলাম।

আকাশে দাঁড়িয়ে আমি তোমাকে বোঝাবো--
তুমি জল!

বাঁকানো কাকের মতো মাটির কলসিতে
একটা একটা করে নুড়ি ফেলে দিয়ে
তোমাকে ওপরে তুলে আনবো একদিন।

তুমি জল...



পরিচিতি:

কাব্য: ‘মদীয় ফ্যান্টাসি’ (সৃষ্টিসুখ, কলিকাতা), ‘ব্লিডিং বরষে হৃদি’ (প্রকাশিতব্য, শাঙ্খিক, কোচবিহার)

সম্পাদক: ইবলিশ

 

যোগাযোগ:

গ্রাম: দেওগাঁও। পোদেওগাঁও। থানা: ফালাকাটা।

জেলা: আলিপুরদুয়ার। পিন: ৭৩৫২১৩। মো৭৬৯৯২২০৯৫৪।

ই-মেলrahebulrahe@gmail.com

 


রাহেবুল এর কবিতা

 

তাড়ুয়া           

 

সাদা রুমালের স্যাঁতস্যাঁত ভেজা, গলানো নাকের কথা মনে করায়।

উঁকিটুকু কেটেছেটে উসপার। রুমালের মুখে চিকচিক সুরম্য গৃহস্থালি

 

বেখবর এক বাউদিয়া আর তার অগোছালো পাড়বাঁধ ... 

 

তখন পাওয়া যায়না রেলেকাটা মুণ্ডু।

তারপর সমঝোতা এল, পাকাচুলের সূর্যাস্ত নাগাদ

জরুরি মনে করে শেখা সঙ্গে সিঁদুরে আহ্লাদ, পারাপারের ব্রিজ-কোর্স

 

 কুংয়ের ফুঃ তে পা হড়কাই মুঁই। সাধ্বী হয় সই।

 

ধানের শিষ, তার ওপর বসা সুঠাম শিশির। কেমন যেন সার্ধনারীশ্বর জল্পনা করি।

তাতে দু-বিন্দু গরম হাওয়ার ধারণ, ঠেলে বেরিয়ে আসে, টিপটিপ নিচু।

গায় তার তোমার গতরের গন্ধ।

 

সবে বিস্মরণ; ঘাম-ভেজা চুড়িদার ঢলে কাকতাড়ুয়ার গায়ে

 

[রচনাকাল: ০৬.১০.২০১৭]



উচ্চারণ কর
তাপস দাস



তোমার ঠোঁট থেকে আমার জীবন পড়ে নষ্ট হয়ে যায়
যেন সে ব্যকরণহীন
ফ্যাকাসে,  অথবা
কয়েদখানার সুখ থেকে বিতাড়িত হয়ে
একা একা ঘুরে বেড়ায়!
প্লিজ,  আরো একবার আমাকে উচ্চারণ কর
শরীরে আরো খানিকক্ষণ জ্বলে থাকুক
পূণ্যফলের চিতা...

.........
আমি

১.
আমি খুব গরীর। একেবারে স্যাতসাতে গরীর।
শরীরের ওপর একপ্রকার ছত্রাক জন্মে যাচ্ছে, একপ্রকার
মাছির সাথে বন্ধুত্ব হচ্ছে, ছত্রাকের পুরো শরীরই ফুলের
মতো,  সবাই দেখতে আসছে,  মাছিদের অনেক চোখ,
মাছিদের চোখ দিয়ে তাদের দেখছি। স্বপ্ন দেখা মানুষের
চোখে সমুদ্র আর পাহাড়ের হাসি...

২.
বাবার বয়সি গাছেদের  সাথে গল্প করি। বাবার বয়সি
ছায়ায় বসে কবিতা লিখি। গাছ আমাকে ঘর বানিয়ে দেয়।
অক্ষরের ঘরে বসে ছেঁড়া মানচিত্র জোড়া দিই। কোন যুদ্ধ
নেই কোথাও, কোথাও নেই বারুদ শিল্পীর সংবিধান...

৩.
তল কোথায়, কোথাও তল নেই। বোতল আছে
স্তন পানের বোতলে মা লিখে দিই আঙুল দিয়ে, পাঁচটা
আংগুল দিয়ে পাঁচ প্রকার মা লিখতে পারি আমি।
পাঁচবার নামাজ পড়ার মতো পূণ্যলাভ হয়।
..................................................................
প্রথম দশকের শুরুতেই তাপস দাসের লেখালেখি। জন্ম তারিখ- ১৫/০১/১৯৯০, থাকেন তপসীখাতা বসটারী, আলিপুরদুয়ারে।
কাব্যগ্রন্থ- ঈশ্বর পেয়েছি এক বুক, ভাতের কস্টিউম, মৃত্যুতে ছায়া থাকবে না।
সম্পাদনা করেন "চা পাতা" ওয়েব সাপ্তাহিক। ঘুরে বেড়ানো, গান শোনার পাশাপাশি কবিতা চর্চায় মগ্ন।


দীপান্বিতা রায় সরকার, জন্মদিন- ৫.১.৮৩, থাকেন আলিপুরদুয়ারে। শিক্ষকতার সাথে যুক্ত।
কাব্যগ্রন্থ- গান হবে তোর নৈঃশব্দ্য, যারা যাপনে নেই।
ভালোলাগা - লেখালেখি, গান শোনা, রান্না করতে।
........................................................



প্রিয়তা
দীপান্বিতা রায় সরকার

আমি আমার প্রিয় ফুলগুলো দিব তাকেই,
জানি প্রিয়তা মানে সুগন্ধি বিশ্বাস।
ঢালু পথে ফিরে এলে ,যারা বুকে দরবেশ রাখে,
যারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় খেয়ালী  আবেগ।
নতজানু প্রেমে হয় না তো সম্মত,
প্রিয় ফুল শুধু তাকে দিব।

দ্বিধাহীন ভাবে মেলে দিবো রাত,
ভরে দেবো তার শূন্য আখর  গোপনে।
স্বঘোষিত কোন পাশার যূপকাঠে,
পণহীন সমর্পণের রেখে যাব হৃদয়।

এই সুর গুলো শুধু তাকেই দিব,
যে আমায় দিয়ে যাবে গান, আগামীর সম্বল
নিষিক্ত  চুম্বনে রেখে যাবে গৈরিক জয়
বলে যাবে প্রিয়তা মানে সুগন্ধি বিশ্বাস।



অভিষেক মল্লিক 
জন্ম ডুয়ার্সের মধ্যমনি শহর অলিপুরদুয়ারে। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনার পর বর্তমানে ভূমি এবং ভূমি সংস্কার বিভাগে কর্মরত। মূলত কবিতা আর গল্পের সুবর্ণরেখা ধরেই অগ্রসর হচ্ছে জীবনের সন্তোষপূর্ণ মুহূর্ত। কাগজে ও পত্রিকায় সৃস্টি প্রকাশের অবকাশ হয়েছে বেশ কয়েক বার। অক্ষরশিল্প ছাড়া, সময় কাটাতে ভালোবাসেন বাংলা সিনেমা, গান আর বইয়ের হাত ধরে।



দস্তর

ওদের শরীরের দরজাগুলো, 
খুল জা সিম সিমের মতোই অবিকারী।
চাইলেও মানুষ বদলে দিতে পারছে না,
কোটি বছর পুরোনো রীতির শারীরিক ধাত।
দায়গ্রস্থতা ঠিক দাড় করিয়ে দিচ্ছে দ্বারদেশে।
পছন্দের মুদ্রায় বদলে যাচ্ছে মুদ্রার উমান।
অলিন্দে রাখা মুখগুলোতে,
উল্টে দেওয়া হচ্ছে দামী লিকারের মুখ।
ছয়ে নয়ে গোজামিল দিয়ে মিলিয়ে দিচ্ছে সব।
তবু ,চারটে দেওয়াল আর ছাদ মিলেও,
একটা ঘর হচ্ছে না কিছুতেই।
দরজায় কে যেন কড়া নাড়ছে আবার,
কে? কে ডাকছে?
কে আবার, কোনো মানুষই হবে।

তোমার জন্য এক ফালি রোদ

কৃষ্ণ দাস 



(১)
নিজের সাথে মস্করা করে
নিজের থেকে বেড়িয়ে পড়ি রোজ।
আমি তোমার মত হই।
তোমার সুরে সুর মেলাই।

আমার দুহাতে স্পর্ধা ভরে তুমি পালিয়ে যাও দূরে।
আমি শান্ত হয়ে শিবের মত,শবাসনে শায়িত হই।
আমার সমস্ত জুড়ে তোমার তান্ডব নিনাদ!
আমার আকাশ জুড়ে রক্ত শ্রাবন।
আমার মেদিনী ভরে ওঠে তোমার স্বেচ্ছাচারে..

(২)তুমি করুণ সুরে ডেকে ওঠো,
বারংবার ডাক দিয়ে বলো.....

আমারে সংবরণ করো,আমারে প্রেয়সী করো।
তুমি জানো না,দারুণ স্বেচ্ছাচারী নারী আমি....
তিলাগ্র প্রেম পেলে,আজীবন দাসত্বে রাজী!!

আমি তৃতীয় নেত্র খুলি...
ধ্বংসের নয়।নতুন সৃষ্টির!!
নব কুসুমের গুচ্ছ ভেঙ্গে,সাজিয়ে তুলি তোমার করবী।
তুমি তখন বৃষ্টি স্নাতা হয়ে এক ফালি রোদ্দুর!.....

কৃষ্ণ দাস, জন্ম ১৯৯৪।  ইংরেজিতে স্নাতক। বি.এড প্রশিক্ষনরত। লেখালেখি স্কুলজীবন থেকে। 'আকর' সাহিত্য পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক। আপাতত ইচ্ছে সুপাঠক হয়ে ওঠা।

 জন্ম আলিপুরদুয়ার জংশন , ভালোবাসি গাছ , নদী ,পাহাড় । কবিতার মতো কিছু লেখালিখির চেষ্টা করছি আড়াই তিন বছর থেকে।



স্বপ্ন, দুঃস্বপ্ন
অনিরুদ্ধ দেব

বৃষ্টি নামলেই মৃত নাবিকের বুকের ভেতর থেকে ভেসে আসে ভাঙা মাস্তুলের গান

করিডোরে মেঘের আনা আর তুমি পালক হয়ে ভেসে যাচ্ছ মায়া নগরীর দিকে

রমণীর নাভিদেশে সভ্যতার খিদে

অলংকার এঁটে বসে আছে কাঠের বেড়াল।


সেতু -১

-অভিষেক সাহা

 


বৃষ্টি ভেজা দিনে পাশে ছিলেম বলে

তোমাতে চুমু না খেয়েই উড়ে গেল পাখি

ফোন আসছে নাফোন যাচ্ছে না

ক্ষুৎপিপাসা নেই বিকেলবেলার

একটু বাদে মুখ ঘুরে শুয়ে থাকবে

নাভির নিচের ট্যাটু

 

শুষ্ক বাতাসএত স্নেহ !

সুজ্জাস্ত  তোমার ভেতর

অবিশ্রান্ত হুড়োহুড়িতে

চুল খুলে দিল শালবন

জল থেকে উঠে আসা স্মিতি

জমজ লালরং আর

সাদা দেয়ালে নাকমতি আগুন

 

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড+

সরলতার  ব্ল্যাকহোল

তাঁর ভেতরেও অভিসন থাকতে পারে

সেই সন্ধ্যাকাটাকুটি খেলা

চারটি পা

একটি চলচ্চিত্র

কালকের আফিস

যোগবিয়োগের শক্তিক্ষেত্র

দু-দুবার দশের ঘাড়ে এগার

এক-পা দু-পা করে পিছপা হচ্ছে আয়ু

ফ্ল্যাশলাইটের মত নামছে

 


শুভময় দত্ত।জন্ম 31 মার্চ 1994।আলিপুরদুয়ার।ইতিহাসে সাম্মানিকসহ স্নাতক।স্নাতকোত্তরে  অর্থনৈতিক ভারতের ইতিহাস নিয়ে বিশেষ পড়াশুনো।  অনুসন্ধিত্সু গবেষক,প্রাবন্ধিক, কবি,সংবাদপত্রের বিভাগীয় লেখক ও সামাজিক সংগঠক।বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বহু গবেষণাধর্মী লেখা প্রকাশ হয়েছে।প্রথম বই রবীন্দ্রনাথ:সৃজনের বহুবর্ণ।


অপেক্ষা     

                         অপেক্ষা আর অপেক্ষায় থাকবে না
দূরের বন্ধু কবে কি আশ্বাস দিয়েছিল ঘোরতর স্বপ্নের মাঝে-
অনির্দিষ্ট স্মৃতির মোরাম বিছানো পথে এখনো কি তুমি অন্যের হাত ধরে ,চোখ রেখে হাটো-
হারিয়ে যাও কৃষ্ণচূড়ায়।

ভোরের স্বপ্নে কালঘাম মুছে নিতে পারিনা তখন বড়ো নিষ্ঠুর মনে হয়।
সাত শতাব্দী পর দেখা হলে হেসে উঠবে,আমি তখন সময় চাইব না মাথা রেখে প্রশান্তি নিতে।
এইজন্মের সহস্র সংলাপ তখনও বুকে বাজবে স্রোতের মতো।                         বেমানান উর্দুর শায়েরিতে ডুবে থাকা বিষাক্ত রাত আমার,আশ্রয়হীন নেশাতুর কবিতারা।
ওপারে ফুলের উপর তোমার ঘুম নীল পদ্মের অঙ্গীকার করবে।
দেখা হলে পরখ করে নেবো তোমায় সেই তুমি আমার আছ নাকি? বিদায়ের 
পালকি এসে বুকে দাঁড়ালে আপসহীন চোখে চেয়ে থাকি।ফুরিয়েছে যা সব................


স্বাতী গুপ্ত জন্ম মালবাজার, প্রকৃতির কোলে শৈশব কৈশোর কেটেছে পিতার কর্মসূত্রে রানিচেড়া চা বাগানে। একটি কুঁড়ি দুটি পাতার কোলে বেড়ে ওঠা। ভূগোল  অনার্স সহ স্নাতক, প্রকৃতির টানে। দীর্ঘ হোস্টেল এর জীবন মানুষ এর ভিতরে প্রবেশ করার আগ্রহ জাগায়। বিবাহ পরবর্তী কালে কালচিনি আটিয়াবাড়ি চা বাগান । দীর্ঘ দশ বছরের শিক্ষকতা আর এর পর স্বাস্থ্য বিভাগে চাকুরি ।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ  "চৌকাঠে পা" প্রকাশিত 2017 সালে। সবুজ প্রকৃতির নির্জনতা জীবনের অনুভূতির শব্দ মালা কবিতা লেখার প্রেরণা।







2 comments:

  1. দুর্দান্ত, কবিতা করিডোরের জন্য একরাশ শুভেচ্ছা

    ReplyDelete
  2. দারুন কাজ। আলিপুরদুয়ার জেলার শূন্য পরবর্তী সকল কবি'র জন্য অনেক শুভ কামনা। সবাব কবিতা পড়লাম। ভালো লাগলো। তবে, আকাঙ্ক্ষা বেড়ে গেলো। প্রত্যেক কবির অনন্ত তিন থেকে পাঁচটি কবিতা পাঠ করতে চাই ভবিষ্যতে। আশা করি কবিতার করিডোর অচিরেই সেই সুযোগ করে দিবেন।

    ReplyDelete