দেখাশুনাগুলি
দেবাশিস মুখোপাধ্যায়
১.
হেঁটে আসছি পাড়ায়
পুকুর উঠে এলো চাঁদ নিয়ে
তার ঘোমটার ভিতর দেখা যায় না
জলে তার গা রয়ে গেছে
মেয়ে গন্ধ নিয়ে
ক্রমশ বিষয়ি হয়ে উঠছি আমি
মাঝে মাঝে পান করছি
জেনেশুনে চাঁদলাগা বিষ
২.
পড়াশুনা না জানা আকবর আর আমি
বালির প্রাসাদ বানাতে গড়ে ফেলেছি
সেখানে পাশাপাশি মন্দির মসজিদ
ভেতরে ঢুকতে গেলে
সব ছেড়ে যেতে হবে
আসা আর যাওয়ার ভিতর
নগ্নতাই ধর্ম
সত্যিকারের পরিচয়পত্র
৩.
দুপুরের পাতা নড়ছে ঝিরঝির
ঘুমিয়ে আছে জানালা বিড়াল নিয়ে
তোমার গল্পের ভিতর একটা কাক
ঘুরে দেখে গেল কতটা নোংরা
ব্যয় হয়ে গেছে পরনিন্দায়
পতঙ্গ ওড়ে বিষে ও মধু ফুলে
দৃষ্টি ছড়িয়ে যায়
৪.
তোমাকে পুকুর ভেবে
ডুবে মরতেই চাঁদ গিলে নেয়
তখন আকাশ ভেসে যায়
আর তারারা তারানা গেয়ে ওঠে
তুমি বেজে ওঠ
আমির গভীরে
৫.
শীত নিয়ে ঢুকে পড়ি তোমার
হোগলাপাতা ঘরে
এলমুনির বাসনগুলি ছড়িয়ে
মুরগিগুলিকে ডাকে
ডাকবাক্সহীন ঘরে অসংখ্য
ছেঁড়া কাগজের টুকরোয়
শাহরুখ আমির
তারা জমিনে গড়াগড়ি খেলে
৬.
কেউ সুবাসে নেই
সুভাষেও
দরজা জানালা বন্ধ করে
কল্পনা করছি কল্পনার মা
না এলে চুলা জ্বলবে না এ ঘরের
শীত বসে যাবে দেহের খাঁজে
হাই তুলতে তুলতে
তুলে নিয়ে যাবে ঘুম
অলস দিনের সাহারা
৭.
যতটা চোখের উড়ান ততটা ধানের ক্ষেত
ইটভাটা
আর বীজতলা নির্মাণ করছে মেয়েরা
অনেক গোপন অসুখ সেরে যায়
ভ্ৰমনের পাশে বসলে
৮.
প্লাটফর্মকে একলা পায় না
দু একটি শালিক
খুঁটে নেয় তোমার অবশেষ
চাঁদ ভিজিয়ে দিয়ে নরম করেছে
ততদূর যেখানে ছায়াগাছ
আলাপন সেরে নেয় নয়ানজুলির সাথে
৯.
এই যে সোয়েটার
তার উলে উলে ছড়ানো
আপনফুলের গন্ধ
গভীরে ঢুকে যায় স্মৃতির পিন
একটানা গান বেজে গেলে
স্বেদবিন্দুতে কলকাতা এসে যায়
ছেড়ে দিতে হয় কৌশলে
কিছুটা ভালোবাসার আসন
১০.
বাইক নিয়েছে মোরামের পথ
অপেক্ষায়
প্রথম দেখা
প্রতিবেশী দৃশ্যের কাছে ঋণ
ছুঁয়ে যায় হাওয়া মোরগের শির
এমন আদর
আড়াল ভেঙে দিলে
কিছু মায়াফুল অজান্তেই টেবিলে
রেখে আসি প্রতিশ্রুতির হরফে
ছাপগুলি ধূলোমেলায় না হারানোই ভালো
ভীষন ভালো লাগলো
ReplyDelete