Monday, July 8, 2019



সময়ের জল 
তুহিন দাস


পথচারীরা মৃদু হাসে, অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা শীতকাল, কবিতার বইগুলো
গম্ভীর, সিনেমাগুলো ধীর, জুতোগুলো ঘরের ভুল জায়গায়, দীর্ঘ বিরতির
পর যৌনতা, কাজে যাবার তাড়া, কবুতরগুলো ওড়াওড়ি করে হিম চার্চের
ভেতরে, প্রবাসে এসবের নতুন কোন মানে নেই—তোমাকে ছাড়া।

*
একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি—প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে ডুবে গেছে একজন
একাকী মানুষ, তার চারপাশে দুঃখের শব্দ সাঁতরায়, মৃত বেড়ালের থাবা
গোঁফ থেকে ঝুলে পড়ে, কুয়াশা খেলে বেড়ায় ভূমির ওপর, ছেলেবেলায়
যে জঙ্গলে খেলা করতো তার কাছে যায়; সে সবুজ কি তাকে চিনতে পারবে?

*
প্রতি বছর শীত কোথাও না কোথাও চলে যায়, প্রতিদিন সকালে আমি
একাগ্র হয়ে ঝরাপাতাদের দেখি, প্রতিদিন আমার সমালোচকরা আমার
কল্পিত মৃতদেহ কবরে নামায়, পাখিহীন রাত্রিতে বাতাস সজোরে বয়ে যায়,
কিন্তু গাছেরা কোনো অভিশাপ দেয় না, পাতলা কাঁচ দিয়ে তৈরি আমার মাথা!

*
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা শহরটিকে খুঁড়ে তোলে আর আমাদের নিরবতা বাড়ে,
বেরিয়ে পড়ে মৃত ঈশ্বরের হাড়গোড়, আমরা তখন আরো দার্শনিক হয়ে
উঠি, ভাবি গাছগুলোর কাজ কি? তারা বনের মাঝে একা কি করে? আমি
অনেকদিন কবিতা পড়িনি; শুধু অফিসে গিয়েছি আর বাড়িতে ফিরেছি।

*
আমার শহরের পাখিগুলো কি আমাকে চিনতে পারবে? এখানে এখন অন্য
একটি শহর বয়ে যায় আমার মাথার ওপরে শ্যাম্পুর বোতলের মধ্য দিয়ে, বহু
লাইব্রেরীতে সময় কাটিয়েছি ঈশ্বরের আত্মজীবনী খুঁজে পাব বলে,
মানুষ নদীর মতো; শব্দের হাঁসেরা সাাঁতার কাটে, সময়ের জল বয়ে যায়!

No comments:

Post a Comment