কবিতার নির্জনতা
প্রবীর রায়
নীরবতা যখন মুখর তখনই তাকে চেনা যায়,যাকে চিনতে চাওয়া বারবার।
বাগানের কোনের লিচুগাছটা চুপচাপই থাকে,তবু তাকে মুখর হতে দেখা যায়, যখন বাতাস এসে কথা বলতে চায় কিংবা ঝড় এসে শুইয়ে দিতে চায় তাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় অসম লড়াই।
গাছকে পাখিও বলে কথা বলতে,কিন্তু তখন সে শুধু শ্রোতা হয়ে থাকতে চায়।
তবুও ঝির ঝির শব্দে তার আবেগ নির্ভরতা মানুষকে প্রভাবিত করে। অবাক মানুষের নীরবতা তৈরী হতে থাকে ক্রমশ ।
মানুষের এই দোষ।কথা বলতে চায়। দুদন্ড চুপচাপ থাকতে পারেনা। যদিও বা থাকে, তাকে বিষণ্ণতার প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে।আনন্দের মুহূর্তে তার নম্র উল্লাস নীরবতা ভঙ্গ করে।
রাত কি শব্দহীন থাকে আদৌ, না , ঠিক তখনই মুখর হয়ে ওঠে চারিপাশ।দিনের আলোয় ঢাকা শব্দেরা জেগে ওঠে। নানা ছবিধ্বনি আছন্নকে স্বপ্ন দেখায়।
অনেকে নীরব কেউ কেউ শান্ত।কিন্তু শব্দহীনতা কখনই গ্রাস করে ফেলতে পারেনা তাকে।
এসময়ে শিল্পীর তুলি মুখর হয়ে ওঠে। রঙের ভাষা আর তুলির টানে ফুটে উঠতে থাকে আঁচড়ের দাগ। কবিকেও ডুবে যেতে হয় মনের গভীরে যেখানে কোলাহল আকৃতি পেয়েছে বর্নমালায়।
এরপর কবিও মুখর হন তাঁর রচনায় যা সে পেয়েছে ভাষাহীনতা আর স্তব্ধতার পৃথিবী থেকে।
কবি কি নির্জনতার হতে পারেন কখনও? মনে হয় না।বিশুদ্ধ কবিতার প্রচারকেরা মনে করেন কবিতার সাথে জীবনযাপনের কোনও সম্পর্ক নেই।আবার সমকালীন কবিতা চর্চায় সমাজ প্রকৃতি আর মানব সম্পর্কের পরিবর্তনের বাঁকগুলির অনুসন্ধান আছে।
জীবনান্দ দাশকে বুদ্ধদেব বসু বলেছিলেন নির্জনতার কবি। জীবনানন্দ নিজে নির্জনতা বিশেষনটি মেনে নিতে পারেন নি।কিন্তু প্রকৃতির কবি, অবচেতনার কবি, নিশ্চেতনার কবি এমন নানান আখ্যায় ভূষিত করা হলেও তিনি নিজে এ সমস্তকেই আংশিক সত্য বলে মনে করেছিলেন।
নৈঃশব্দের ভূমিকা কবিতা কিংবা কবির কাছে কী,এই ভাবনায় মনে হয় কোনও কবির ক্ষেত্রেই নির্জনতা বিশেষনটি খাটেনা। কবিকে তার চারিপাশ যা দেখায় তাকে যে ভাবে ভাবায় তাকে গভীরে নিতে কবির ধ্যানময়তার প্রয়োজন আছে।তার জন্য কবিকে নিজের মখোমুখি বসতে হয়।এটা কবির একান্ত নিজসব সময়।এজন্য কখনই তিনি নীরবতায় থাকেন না।বরং চেতনে অবচেতনে কিংবা অতিচেতনায় সেখানে শব্দছবির কোলাহল। বাইরের মুখর জগতের থেকে তিনি আপাত বিচ্ছিন্ন থাকেন।
পাঠের সময় সমকালীন কোনও কবিকেই নৈঃশব্দের ছবি আঁকতে দেখিনি। বরং তাঁর জীবনযাপন আশাভঙ্গ মানবিক বিপর্যয়গুলি কোলাহলের ভিতর এক শান্ত কেন্দ্রবিন্দুতে
শব্দ ও ধ্বনির নতুন শরীর আবিস্কারে মগ্ন রেখেছে।
প্রবীর রায়
নীরবতা যখন মুখর তখনই তাকে চেনা যায়,যাকে চিনতে চাওয়া বারবার।
বাগানের কোনের লিচুগাছটা চুপচাপই থাকে,তবু তাকে মুখর হতে দেখা যায়, যখন বাতাস এসে কথা বলতে চায় কিংবা ঝড় এসে শুইয়ে দিতে চায় তাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় অসম লড়াই।
গাছকে পাখিও বলে কথা বলতে,কিন্তু তখন সে শুধু শ্রোতা হয়ে থাকতে চায়।
তবুও ঝির ঝির শব্দে তার আবেগ নির্ভরতা মানুষকে প্রভাবিত করে। অবাক মানুষের নীরবতা তৈরী হতে থাকে ক্রমশ ।
মানুষের এই দোষ।কথা বলতে চায়। দুদন্ড চুপচাপ থাকতে পারেনা। যদিও বা থাকে, তাকে বিষণ্ণতার প্রতিক্রিয়া বলা যেতে পারে।আনন্দের মুহূর্তে তার নম্র উল্লাস নীরবতা ভঙ্গ করে।
রাত কি শব্দহীন থাকে আদৌ, না , ঠিক তখনই মুখর হয়ে ওঠে চারিপাশ।দিনের আলোয় ঢাকা শব্দেরা জেগে ওঠে। নানা ছবিধ্বনি আছন্নকে স্বপ্ন দেখায়।
অনেকে নীরব কেউ কেউ শান্ত।কিন্তু শব্দহীনতা কখনই গ্রাস করে ফেলতে পারেনা তাকে।
এসময়ে শিল্পীর তুলি মুখর হয়ে ওঠে। রঙের ভাষা আর তুলির টানে ফুটে উঠতে থাকে আঁচড়ের দাগ। কবিকেও ডুবে যেতে হয় মনের গভীরে যেখানে কোলাহল আকৃতি পেয়েছে বর্নমালায়।
এরপর কবিও মুখর হন তাঁর রচনায় যা সে পেয়েছে ভাষাহীনতা আর স্তব্ধতার পৃথিবী থেকে।
কবি কি নির্জনতার হতে পারেন কখনও? মনে হয় না।বিশুদ্ধ কবিতার প্রচারকেরা মনে করেন কবিতার সাথে জীবনযাপনের কোনও সম্পর্ক নেই।আবার সমকালীন কবিতা চর্চায় সমাজ প্রকৃতি আর মানব সম্পর্কের পরিবর্তনের বাঁকগুলির অনুসন্ধান আছে।
জীবনান্দ দাশকে বুদ্ধদেব বসু বলেছিলেন নির্জনতার কবি। জীবনানন্দ নিজে নির্জনতা বিশেষনটি মেনে নিতে পারেন নি।কিন্তু প্রকৃতির কবি, অবচেতনার কবি, নিশ্চেতনার কবি এমন নানান আখ্যায় ভূষিত করা হলেও তিনি নিজে এ সমস্তকেই আংশিক সত্য বলে মনে করেছিলেন।
নৈঃশব্দের ভূমিকা কবিতা কিংবা কবির কাছে কী,এই ভাবনায় মনে হয় কোনও কবির ক্ষেত্রেই নির্জনতা বিশেষনটি খাটেনা। কবিকে তার চারিপাশ যা দেখায় তাকে যে ভাবে ভাবায় তাকে গভীরে নিতে কবির ধ্যানময়তার প্রয়োজন আছে।তার জন্য কবিকে নিজের মখোমুখি বসতে হয়।এটা কবির একান্ত নিজসব সময়।এজন্য কখনই তিনি নীরবতায় থাকেন না।বরং চেতনে অবচেতনে কিংবা অতিচেতনায় সেখানে শব্দছবির কোলাহল। বাইরের মুখর জগতের থেকে তিনি আপাত বিচ্ছিন্ন থাকেন।
পাঠের সময় সমকালীন কোনও কবিকেই নৈঃশব্দের ছবি আঁকতে দেখিনি। বরং তাঁর জীবনযাপন আশাভঙ্গ মানবিক বিপর্যয়গুলি কোলাহলের ভিতর এক শান্ত কেন্দ্রবিন্দুতে
শব্দ ও ধ্বনির নতুন শরীর আবিস্কারে মগ্ন রেখেছে।
No comments:
Post a Comment