Wednesday, October 2, 2019

সত্যম ভট্টাচার্যের গল্প 



জাল
  সত্যম ভট্টাচার্য

  গ্যারেজের চাবিটা  হাতে নিয়ে সিড়ি দিয়ে দুদ্দাড়িয়ে নামছিলাম।মাথায় ছক কষা চলছিলো যে আজ কোন কোন ক্লায়েন্ট মিট করতে হবে,কোন প্রিমিয়ামের টাকা দিতে হবে,কোন লোনের টাকা দিতে হবে,কিভাবে অফিসে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে ওপরে ওঠার পথ সুগম করতে হবে, কাকে কড়কে দিতে হবে কথা বেশী বলার জন্য।আবার ভাবছিলাম শুধু এসব করলেই তো হবে না,জায়গামতো তৈলমর্দনও করতে হবে।আমার তো লক্ষ্য শুধু এই অফিস বা এই এরিয়ার বস হওয়া নয়।আমার লক্ষ্য আরো অনেক অনেক উপরে।তাই এই সেক্টরে নাম করতে হলে এসব করতেই হবে।কম্পিটিশনে টিকে থাকতে গেলে এটাই এখন পথ।
  গেট দিয়ে বের হয়ে যখন রাস্তায় নামলাম মেয়ে উপরের ব্যালকনি থেকে ডেকে বললো-বাবা বাবা,তারে বসা মাছরাঙাটাকে দেখো।আমি চট করে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে একঝলক মাছরাঙাটাকে দেখে নিয়ে ও ওকে হাত দেখিয়েই ছুটতে লাগলাম গ্যারেজের দিকে।গ্যারেজটা আমার একটু এগিয়ে একটা বড় ফ্ল্যাটের নিচে।বাবা পুকুরের ধারে কানাগলিতে এই ছোট্ট এপার্টমেন্টে ফ্ল্যাটটা নিয়েছিলেন নির্জন দেখে।তখন আমাদের গাড়ি ছিলো না।জানালার পাশে বসে সারাদিন পুকুরের মাছরাঙা দেখতাম।মেয়েটার কথায় এসব মনে পড়ে গেলো।কিন্তু আমাকে তো এ নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না।
  ছুটতে ছুটতে গ্যারেজে পৌঁছে তালাদুটো খুলে যেই না ভেতরে ঢুকেছি ওমনি একটা ঘন ভারী কালো মাকড়সার জাল ছাদ থেকে আমার ওপরে ঝপ করে নেমে এলো।নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো আমার ধীরে ধীরে। 

1 comment: