উত্তর পূর্বাঞ্চলের কবিতা
বাজার
কমলিকা মজুমদার
আপেল বনে ছেয়েছে অজানা দীর্ঘশ্বাস
পোকা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে পেলব আগুন বুক
অথচ, ছায়াবন জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে এক
মন খারাপের মানবহীন নৈঃশব্দ্য বিকেল।
কয়েক হাজার মাইলফলক পেরিয়ে এলে
প্রতি হাটবার বিক্রি হয় ঝুড়িভর্তি ডাঁসা ফল
হাতে হাতে ঘুরে বেড়ায় অভিশপ্ত ফলেরা
দোকানির অভিজ্ঞ চোখ শুধু জানে রহস্য,
জানে, কোথায় কাটলে পচন ধরা পড়ে যায়।
হাইকু
শিবাশিস চট্টোপাধ্যায়
১
দেখতে এসো
চোখের জলের বাড়ি
২) ভিতরনারী
-----------------
মাস্তুল নেই
দাঁড় বেয়েছি একা
৩) হঠাৎ দেখা
----------------
স্নানের জন্য
তোমার গানে নামার
৪) কথা ছিল...
-----------------
কেবল ফাঁকি
আমন ধানে ঢাকি
৫) অতীত ঋতু
-------------------
চড়ুই পাখি
কোথায় তোমায় রাখি
৬) ভাবছি বসে
--------------
দিনের শেষে
তুমিই না হয় লিখো
মুক ডায়েরি
নাবিক
নীলাদ্রি ভট্টাচার্য
নাবিকের সহবাসে ব্যবহৃত পুষ্পরস
জন্ম নিলো তোমার বুক অব্দি জল
নিংড়ানো ঈষৎ অভ্যাস আঁকড়ে ধরো
ঠোঁটের নিজস্ব প্রস্থান
আমি পথমাড়ানো ছায়ায় মাধুকরি বীর্যের
ছুড়ে ফেলা ব্যার্থ তৃপ্তি
ঘরছাড়া ঘাসে নিশিপালন সিঁদুর
আমি তার প্রসব আছড়ানো শব্দ হাসিমুখে মুছতে থাকি
অবেলায়........বেলায় বেলায়......অবেলায় ।
সভা
অমলকান্তি চন্দ
বেনু পুকুরে সভা চলতে থাকে
পেছন সারিতে কানাঘুষো চলে অবিরত
বিনোদন সভা ছেড়ে চলে গেলে
ইতর কুকুরগুলো আরো কেমন লম্পট হয়ে উঠে।
সভার পেছনের সারিতে
তারও ঠিক পেছনে
খাওয়া ও শৌচের আগে পরে
দেশীয় সাবানের কথা, দেওয়াল লিখন।
মাঝ বয়সী ভদ্র মহিলা তারই ডেমু দেখিয়ে যান …
ডেমুতে কিছু হলুদের রং
পোক্ত কাঁচা লঙ্কার জ্বাল
সুযোগ সন্ধানী কিছু পুরুষ আতর
ম ম গন্ধ ছড়ায় …
সভা চলতে থাকে দীর্ঘক্ষণ…..
বিয়োগান্তক
নবীনকিশোর রায়
একটানা অভিনয়,
দীর্ঘ রজনী শেষে পিছনের দরজায়
টোকা পড়ে,
ক্রমশ ম্লান হয়ে আসে মঞ্চে আলো
যাবতীয় রচনা যবনিকাতে এসে দাঁড়ায়।
আলো-অন্ধকার মায়া সন্মুখে
আবহে অট্টহাসি, থেমে থেমে বিরহ সংগীত
সকল দৃশ্যান্তর মুছে
মঞ্চের পর্দা টেনে দেয়...
সাদা-থানে ঢাকা যাত্রপথ
অনন্ত রেখা বরাবর এগিয়ে চলে
ব্যতিক্রমি ধারাবিরণীতে ঘোষণা হয়ে যায়,
অবসম্ভাবি - - - এক বিয়োগান্তক দৃশ্য!
তাকে আমি চিনি
তমা বর্মন
নিভু নিভু মশালের নীচে লোকটি,
বুকে শাদা কাফন তাতে আজন্মের স্লোগান—
এ দেশ সুমহান
ঘাম-পিঠ খিদের বাষ্প হয়ে জমে আঙুলের ডগায়
দুধসাদা ভাত ছড়িয়ে ঘন সরের মতো স্বপ্ন
রেগার কাজে একশত টাকা
দু-শো মিলবে নির্বাচনীর নিগূঢ় রহস্যে,
ফালাফালা একমাথা হাইব্রিড রোদ
ধাবমান ট্রাকে চড়ে লোকটি যাচ্ছে সভাপতির ভাষণে
পাক খেয়ে মরে আসা আলোয় ভিড়ের মধ্যে চষে বেড়াচ্ছে
লোকটির সন্তানসন্ততি, ভালোবাসা-স্বপ্ন বিষাদসিন্ধু
মোড়ের দোকান থেকে চেয়ে নেয়া ফিরতিপথে ঠোঁটে সস্তার সিগারেট
লোকটি মহা জ্ঞানপাপী,
হানিকারক বাতাসে টেনে যাচ্ছে শ্বাস
বাজার
কমলিকা মজুমদার
আপেল বনে ছেয়েছে অজানা দীর্ঘশ্বাস
পোকা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে পেলব আগুন বুক
অথচ, ছায়াবন জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে এক
মন খারাপের মানবহীন নৈঃশব্দ্য বিকেল।
কয়েক হাজার মাইলফলক পেরিয়ে এলে
প্রতি হাটবার বিক্রি হয় ঝুড়িভর্তি ডাঁসা ফল
হাতে হাতে ঘুরে বেড়ায় অভিশপ্ত ফলেরা
দোকানির অভিজ্ঞ চোখ শুধু জানে রহস্য,
জানে, কোথায় কাটলে পচন ধরা পড়ে যায়।
হাইকু
শিবাশিস চট্টোপাধ্যায়
১
দেখতে এসো
চোখের জলের বাড়ি
২) ভিতরনারী
-----------------
মাস্তুল নেই
দাঁড় বেয়েছি একা
৩) হঠাৎ দেখা
----------------
স্নানের জন্য
তোমার গানে নামার
৪) কথা ছিল...
-----------------
কেবল ফাঁকি
আমন ধানে ঢাকি
৫) অতীত ঋতু
-------------------
চড়ুই পাখি
কোথায় তোমায় রাখি
৬) ভাবছি বসে
--------------
দিনের শেষে
তুমিই না হয় লিখো
মুক ডায়েরি
নাবিক
নীলাদ্রি ভট্টাচার্য
নাবিকের সহবাসে ব্যবহৃত পুষ্পরস
জন্ম নিলো তোমার বুক অব্দি জল
নিংড়ানো ঈষৎ অভ্যাস আঁকড়ে ধরো
ঠোঁটের নিজস্ব প্রস্থান
আমি পথমাড়ানো ছায়ায় মাধুকরি বীর্যের
ছুড়ে ফেলা ব্যার্থ তৃপ্তি
ঘরছাড়া ঘাসে নিশিপালন সিঁদুর
আমি তার প্রসব আছড়ানো শব্দ হাসিমুখে মুছতে থাকি
অবেলায়........বেলায় বেলায়......অবেলায় ।
সভা
অমলকান্তি চন্দ
বেনু পুকুরে সভা চলতে থাকে
পেছন সারিতে কানাঘুষো চলে অবিরত
বিনোদন সভা ছেড়ে চলে গেলে
ইতর কুকুরগুলো আরো কেমন লম্পট হয়ে উঠে।
সভার পেছনের সারিতে
তারও ঠিক পেছনে
খাওয়া ও শৌচের আগে পরে
দেশীয় সাবানের কথা, দেওয়াল লিখন।
মাঝ বয়সী ভদ্র মহিলা তারই ডেমু দেখিয়ে যান …
ডেমুতে কিছু হলুদের রং
পোক্ত কাঁচা লঙ্কার জ্বাল
সুযোগ সন্ধানী কিছু পুরুষ আতর
ম ম গন্ধ ছড়ায় …
সভা চলতে থাকে দীর্ঘক্ষণ…..
বিয়োগান্তক
নবীনকিশোর রায়
একটানা অভিনয়,
দীর্ঘ রজনী শেষে পিছনের দরজায়
টোকা পড়ে,
ক্রমশ ম্লান হয়ে আসে মঞ্চে আলো
যাবতীয় রচনা যবনিকাতে এসে দাঁড়ায়।
আলো-অন্ধকার মায়া সন্মুখে
আবহে অট্টহাসি, থেমে থেমে বিরহ সংগীত
সকল দৃশ্যান্তর মুছে
মঞ্চের পর্দা টেনে দেয়...
সাদা-থানে ঢাকা যাত্রপথ
অনন্ত রেখা বরাবর এগিয়ে চলে
ব্যতিক্রমি ধারাবিরণীতে ঘোষণা হয়ে যায়,
অবসম্ভাবি - - - এক বিয়োগান্তক দৃশ্য!
তাকে আমি চিনি
তমা বর্মন
নিভু নিভু মশালের নীচে লোকটি,
বুকে শাদা কাফন তাতে আজন্মের স্লোগান—
এ দেশ সুমহান
ঘাম-পিঠ খিদের বাষ্প হয়ে জমে আঙুলের ডগায়
দুধসাদা ভাত ছড়িয়ে ঘন সরের মতো স্বপ্ন
রেগার কাজে একশত টাকা
দু-শো মিলবে নির্বাচনীর নিগূঢ় রহস্যে,
ফালাফালা একমাথা হাইব্রিড রোদ
ধাবমান ট্রাকে চড়ে লোকটি যাচ্ছে সভাপতির ভাষণে
পাক খেয়ে মরে আসা আলোয় ভিড়ের মধ্যে চষে বেড়াচ্ছে
লোকটির সন্তানসন্ততি, ভালোবাসা-স্বপ্ন বিষাদসিন্ধু
মোড়ের দোকান থেকে চেয়ে নেয়া ফিরতিপথে ঠোঁটে সস্তার সিগারেট
লোকটি মহা জ্ঞানপাপী,
হানিকারক বাতাসে টেনে যাচ্ছে শ্বাস
No comments:
Post a Comment