অবরোধবাসিনী
কণিকা দাস
সেই কবে বিষবৃক্ষতলে এয়োস্ত্রী হয়ে ওঠা
তারপর কেটে গেছে কত যুগ
রক্তাক্ত সিঁথিতে চোখ পড়লেই মনে পড়ে
একদিন স্বাধীনতা চেয়েছিলাম
মুক্ত বিহঙ্গ ডানায় উড়তে চেয়েছিলাম।
আজও ডানা মেলে উড়তে পারি
ঘুড়ির মতো---
সুতোটায় বড্ড বেশি ধার, রক্তাক্ত হই,
পিছুটান তাড়া করে বারংবার
লঙ্ঘনের পথ খুঁজিনি কখনো
জানি সে পথও শ্বাপদ মুক্ত নয়।
সেই কবে অগ্নি শপথ করে আত্মবলিদান।
অনন্ত তৃষা
কতদিন সাঁতার কাটিনি একসাথে
কতদিন অনন্ত জিজ্ঞাসার মুখোমুখি হইনি
কতদিন নৌকার গলুইয়ে বসে সন্ধ্যায় তারা গুনিনি
ছাদের কার্ণিশে বসে অলিক ভাবনায়
জীবনকে উজাড় করিনি।
তোমার রূপোলি ভবিষ্যতে আমি ব্রাত্য
আজ বড় ইচ্ছে করে গঙ্গার বুকে
ভাসিয়ে দিই নিজেকে
অনন্ত শয্যায় শুয়ে সূর্যের উদয়াস্ত দেখি
গোধূলি পেরিয়ে গেলে চাঁদের সাথে কথা বলি
জানি এই জীবন শুধু একান্তই আমার
অলিগলি পেরিয়ে ঢোকেনা কোন আলো
চেনা পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকে না কেউ
মাঝে মাঝে শূন্যতায় ভরে থাকে মনের চৌহদ্দি
দোদুল্যমান জীবন প্রবাহে কান্ডারীবিহীন নৌকা
পাঁক খেতে থাকে মাঝ নদীতে
আর কতকাল জীবন চলবে স্রোতের বিপরীতে!
কেউ কথা রাখে না, রাখতে জানেনা
হতাশার অতলে জ্বলে না দীপের আলো
ফুল ফোটেনা আগের মতো
সময় নিয়ে যায় সবকিছু চুরি করে
বাঁচতে চাই--কথাটা আর ব্যথা জাগায় না
এভাবেই একদিন সব ঋণ শোধ করে
চলে যাবো অনন্ত পারাবারে
তখন একফোঁটা চোখের জল ঝরবে কি
পুরনো দিনের কথা মনে করে.…..
No comments:
Post a Comment