গুঁড়ো পাকস্থলী
রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
অন্ধকার স্রোতে সারা শরীর ক্রমে দড়ির মত পাকিয়ে যাচ্ছে, ওদের ৷
প্রতি রাতে উপোসী চাঁদ আর কাঙাল নদীটা মাধুকরী করে৷
ছাল ওঠা মাটির বুক থেকে সব অমৃত শুকিয়ে গেছে ৷
নিভন্ত চুল্লীর ছাই থেকে হাহাকার উঠে আসছে ৷
ভাতের দানাগুলোয় দুঃস্বপ্নরা মাখামাখি হচ্ছে ৷
রক্তের স্রোত ক্রমে জলের মত পাতলা হচ্ছে ৷
শ্মশানের শূণ্যতা মেখে জনপথ, ক্ষেত, ঘরবাড়ি ৷
বুভুক্ষু মানুষেরা একে একে সীমানা পেরোচ্ছে ৷
ওদের দুদিকের ডানা পুড়ছে, পুড়ছে হৃৎপিন্ড, ফুসফুস ৷
নিরন্ন পাকস্থলীগুলো ক্রমে গুঁড়ো হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর বুকে,
একদল পরজীবী তা চেটেপুটে খাচ্ছে ৷
যুগ যুগ ধরে ওরা এইভাবেই বেঁচে আছে-
উপবাসী মানুষের পাকস্থলী, অস্থি, মজ্জা চিবিয়ে খেয়ে ৷
ভবিষ্যতেও বাঁচবে, সভ্যতার শেষদিন পর্যন্ত বাঁচবে, এই ভাবেই ৷
আর অনাহারী মানুষগুলো, পেটে গামছা বেঁধে যুগযুগ ধরে ওদের খাদ্য হয়ে উঠবে প্রতিনিয়ত ৷
No comments:
Post a Comment