মানসপুর
দেবাশিস মুখোপাধ্যায়
কালো পাথরের কাছে স্তদ্ধবাক
বিয়োগের পাশে বিয়োগজন্ম লিখে
পেরোই মায়াসরোবর
পিলসুজ জ্বালিয়ে পাহারা বসিয়ে
অলৌকিক আলোয় মাধবীকুঞ্জে
শ্যাম জেগে ওঠে শ্যামকল্যাণে
অশ্রুলিপি লেখে রাধা আলপনা
সারা উঠোনময় সান্ধ্য অক্ষরে
সবুজ কলাপাতার ছায়া
যেন আশ্চর্য বধূর উন্মোচন
আত্মসঞ্চয়ের সেই জলাশয়
হঠাৎ অন্ধত্ব কেটে
আলোজলে ফুটে ওঠে
আলোচাল উদ্ভাসে
প্রতি অঙ্গ কানু-ক্ষুধাতুর
২.
হারামি কবিতা
২.
মনুর শরীরে ক্ষুধার্ত কুকুরের জিভ
তীব্র মশালাগন্ধ সারা ভোজসভায়
কয়েদিখানা খুলে গেলে নীরবতা ভাঙে
যেন কত জন্মের অন্ধকার স্রোত ফিরে
কাঁসরে সানাই এ মাটিগর্তমুখ খুলে
সঙ্গমের আহবান
শয্যায় তান্ত্রিকের রক্তিম বস্ত্রে
মৃতজঙ্গল জাগে
নির্জলা একাদশী শেষে
পথ এক জেনেও গ্রাস মুদ্রায় সব গিলে
বেপথু পড়ে আছি
৩.
নেগেটিভ
একটা বাঘ দুপুর
ক্ষুধার্ত বসে আছে
আর ডোরাকাটা হয়ে
চেটে যাচ্ছি থাবার রক্ত
ছবিটা স্পষ্ট অথবা নয়
কিন্তু রোদকে অস্বীকার
করতে পারছে না
আলোর একটা গর্জন
চাপা থাকছে না কিছুতেই
৪.
রূপ
সাজ সাজ । দেবী পাল্টে যায় । গরীব মেয়েটি । দু হাতে নতুন জামা ধরে আয়নাকে দেখায় । ঈর্ষা জাগে । ঠোঁটের হাসিতে বেশ মুক্তা মুক্তা ভাব
ভাজা ভাতের গায়ে মাংস আর আলু । দেবীর গভীরে ক্ষুধা । ভূলোকে ও দ্যুলোকে । সেখানে প্রবেশ করে সে ছোঁড়ে তীর । চুর চুর হয়ে ভেঙে পড়ে দিনের খোয়াব
এই যে ক্ষ্যাপা বাতাসের তেজ । সেও প্রার্থনায় ছিল । রূপং দেহি । তার রূপে ঘুরে পড়ে তাহাদের চালা
দেবীর গলায় মালা । মাথায় মুকুট । কিন্তু ঐশ্বর্য ভাবে । মা নেই । গাছ কাটা মাঠে । বন বিবির
পালা
৫.
অক্ষর লিপি
স্বাধীনতা । তার হাত ফসকে । কে ছিনিয়ে নিলো । লোকটা অবাক
একটা আকাশ হাতড়ায়
সারাবছর । রঙছাড়া জীবন । বনছাড়া ভোজন । জন থেকে সরে
যাচ্ছে আপন আর নীড়
নীরবতা । তাকে পালন করতে হয় ।
খাঁড়া ঝুলতে থাকে রাষ্ট্রশক্তির । তীর
সমাজের আর সংসারের তর্জনী
পালাতে দেয় না । না কবিতা থেকে ।
নিম বা ক্ষুধার্ত । আঁকড়াতে আঁকড়াতে সে ক্রমশ অপর
পরজীবি হয়ে বাঁচতে বাঁচতে সে
ভুলে যায় অর্থ বাঁচার
No comments:
Post a Comment