মৃণালিনির কবিতা
আগ্রাসী অঙ্কুর সিরিজ- ৩
১
মেঘ নেমে আসুক গোলা বারুদ হয়ে
বিস্ফোরণ দুটি ঠোঁটের স্পর্শে
আগ্নেয়গিরি ফেটে পড়ুক না হয় একবার সৃষ্টির উল্লাসে
অভ্যন্তরে জমা হোক মেঘ বাস্প।
রোমকূপের ঘাসেরা দুলে দুলে মাথা নেড়ে যাক-
সবুজ শস্যদানা ধানের শিশ হয়ে
শ্যামলিমা ছড়িয়ে দিক থর মরুভুমিতে
আকাশের বুকচেরা ভালবাসা ছড়িয়ে দাও একবার ভুমিতে।
২
জঙ্গলের পশুদের নিয়ে ঠাকুরমার ঝুলি খুলে বসি
পেছনে তুমিও এসে বসো
গল্প শেষে ভেসে যাব অলকানন্দায়
পাড়ের বাঁধ ভেঙ্গে নতুন অধ্যায়।
সন্ধ্যা তারাদের নিয়ে আলপনা- আমার বসন্ত বাতাস
আদম-ইভ আসবে পিছু পিছু খোসা ছাড়া আপেল হাতে।
ওদের দেখে লজ্জায় রাঙ্গা হলে
কামরাঙ্গায় কামড় দিয়ে যেও আধখানা।
৩
মাটির নরম বিছানায় তুমি জলন্ত পলাস
আমি বৃষ্টি নিয়ে তোমার শরীরে
পলাস, পাপড়ি মেলে দেখো
এক আকাশ মেঘ জমা আমার বুকে
ঝরে পরবে শরীরে
ঝরে পরছে
ঝরে পরবে
ঝর ঝর ঝরে পরবে
তুমি আগুনরঙা থেকে তৃপ্তির গৈরিক হলেও
বৃষ্টি ঝরে পড়বে চিরকাল অঝোরে
নদীর পাড়ে হবে আমাদের বসন্তবিলাস।
৪
আনমনে বসে থাক যেন তুমি রাধিকা
সুনীল ভালবাসা তোমার জন্যে
মানুষের প্রশ্ন-উত্তর বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে
আরও জমা হয় সেই ঝলকময়ী ঝর্নার মোহময়য় আকর্ষণ
ম্যাগনেটিক টাচ-
তোমার প্রিয় গোলাপের সঙ্গে একটু বড় মাপের ব্লাউজ
লাল শাড়ির ভাঁজে পাঠিতে দিয়েছি, সান্ত্বনার রসে ভিজিয়ে
আর সংযমে বেঁধে রেখেছি নিজেকে।
তবুও মন আনচান সেই মেয়েটির জন্যে
ময়ূরাক্ষী চোখ, কাঁচা হলুদ রঙে সারা শরীরে স্তন ফুল
সুগন্ধ নাকে সারাক্ষণ তার ছোট্ট ফ্রকের ঝুল।
থেমে আছি আমি, আমার সময়, আমার মন
গহ্বরে উত্তপ্ত টগবগে ভালবাসা
তুমি এসব জেনেও উদাসিন ফ্লোরা
ফ্রকের ঝুল ছাড়িয়ে তোমাকে পরিনত করেছি নারিতে
শাড়িতে নারি তুমি, এখন বেশ আধুনিকা।
৫
কিছু কথা কানে কানে ঝাড়বাতি
ইউক্যালিপটাস
অকেজো কথার মেঘগুলো উড়িয়ে দিও পুরনো প্রেমিকার মত।
শরীরে অ্যাপেনডিস্কে অস্ত্রপচার নিষ্প্রয়োজন ভেবো না
শারিতে আধুনিক নারি হয়ে বদলে ফেলেছি রিং টোন;
চাঁদের পাড়ে বালির চিকিমিকি ফোঁটা নক্ষত্র
ক্ষীণ আলোতেও দেখবে নিজেকে বিবেকের আয়নায়
কিছু স্মৃতি মনে এলে নিভিয়ে দিও ঘরের বাতি
পরস্পরকে জড়িয়ে ধরো মিথ্যা ভালবাসার বাহানায়।
No comments:
Post a Comment