Tuesday, January 5, 2021

 অরুণ পাঠকের গুচ্ছ কবিতা



দুর্ঘটনা


এখনও উত্তপ্ত দুহাতে ফুটন্ত গোলাপ তুলে ধরে

বয়সের প্রত্যন্ত ভার তুমি গোপন করে যাও

আকাশ তোমার দেহে গুলে গেছে রং

প্রহরী পেরিয়ে গিয়ে সামান্য বাগান মাত্র গেছি 

সেখানেই গরীয়সী বহুলাংশে আমার হয়েছ

মায়ের আসল রূপ মাটিতে বা মেঘে একই বৃষ্টির

কারসাজি 

যোনি প্রবাহিত হয়ে আলোর দরজায় 

উপগত আমি যোনিতে প্রবেশ করে আবার জন্মাই

স্বয়ম্ভু শক্তির গায়ে এমন রূপের মাটি

তোমাকে মণ্ডপে আনে কিংবা বিছানায় 

আমি বাইরের লোক; আমার নকল ঘরে

তোমাকে পেয়েছি, যে ঘর বিমূর্ত ছিল সূর্যাংশের

আগে

যখন ধারনা ছিল, অনুভূতিযোগ্য কোনও 

মেধাবী নারীর জন্য সূর্যতারকারও একটা

দুর্ঘটনা দরকার... 




দেহ


যা-দেখছি তা-সত্য নয়, মর্ম খুব শ্লথ

বেঁচে থাকার মহত্ত্বে আমরা তো বিশ্বাস করি 

এই ধবল সাধুতা সমান্তরালভাবে বইছে দেহটি 

মাথাটি গণক আর মধ্যমার চিরায়ত ভুল 

জীবন তো মৃত্যুর উঠোন, ভাই-বোন আত্মার বিভেদ

সব এক হয়ে চলে আসে প্রথম সারিতে

আমার রক্তের রং আমাকে বিশ্বস্ত করে

অথবা সে চিন্তার পাহাড়, যা অন্নের অভিমুখ

প্রকাশিত করে, কখন যে শুরু হবে

দেহ তার কিছুই বোঝে না, ভাগ্যের ক্রীড়ণক নয়

এই দেখো জিহ্বা স্বাধীন, বাক্ও স্বতস্ফূর্ত 

শুধু আলোকে অসীম করে দাও, সহ্য করো

প্রতিবিম্ব তার, কলের লাঙল থেকে মেধার কলমদানি 

প্রযুক্তি আমার কাছে আদিমতা চায় প্রথমত



অর্জন 


আমি কোনও বস্তুনাম এ জিভে নেব না

দেহের ভেতরে যে অনন্তের খেলা, তরঙ্গসুলভ

তাকে প্রাকারের নিচে রেখে শাসন করব

কখনও কখনও তুমিও উদ্বায়ু একটা বিশ্বের মতো

ফুটে উঠবে আমারই নিয়ন্ত্রণে 

তুমি, জগতের সংযোগ সাধিকা

একমাত্র আত্মপরায়ণ আমাকে বিশ্বলগ্ন করেছ

তাই, তুমি সঙ্গে থাকবে আর অধীর নিয়োগপত্র হাতে

পরমার্থের গতিকে স্তব্ধ করবে ধূলায় ধূলায় 

উচ্চ ধীশক্তি ও আত্মসচেতন 

এক মানুষ, তাকে এক নির্জন নদীর মধ্যে রেখে

আমার এই হাওয়া মোরগের কারখানা 

হাওয়া বিষাদগ্রস্ত হলে

আমার কিছু যায় আসে না 

আমার নির্ণয় নিয়ে মর্তুকামী মানুষেরা নাচে গায়

উদাত্ত এ গ্রহবর্ম আঁটা শেখান স্বার্থের লোকজন 

ব্যাধিগ্রস্ত দৃষ্টিতে তোমাকে চায়

তুমি সাধন নিয়ন্ত্রা 

রক্ষিতা শব্দের 

স্বনাম অর্জন করে এসো


পাত্র


এ পাত্রে গোছানো আছে হিরণ্ময় আলোটি উজ্জ্বল 

বিশ্বাসে ও বীজ আলোর রক্ত পুড়িয়ে দিচ্ছে কোষ

এইখানে মরণ অভ্যাস আলোকিত মঞ্চের ওপর

দুপুর গড়িয়ে আসে, তবু সে প্রভাত হতে চায় সবিশেষ


অনন্ত শব্দের ক্ষোভ অভ্যাস ঝাঁকিয়ে দিতে চায় 

ধরে রাখি ফুলের প্রদীপ, প্রজ্জ্বলিত হাতে হাতে 

একা ফুল উৎসে টেনে নেয় সকারণ জীবন বিদ্বেষ 

শেকড় আলোকে টানে মাটির গভীরে, সেখানে উদ্ধার


কালো রাস্তা, ভালো রাস্তা, ছিল, আছে আছে

প্রকাশ্য সংগত সেই দিনের হিসাবে মেঘান্ধ আকাশ 


No comments:

Post a Comment