Saturday, November 30, 2019

                           
                     
                               অনুগল্প :


                                    বিল্টু
                              শোভন মণ্ডল

দামোদর ছেলেটাকে ভালো করে শিখিয়ে পড়িয়ে নিচ্ছিল।
--শোন বিল্টু, আজ তোর জন্য নতুন থান এনেছি। আগেরটার মতো অত নোংরা করলে দেব দু'ঘা বসিয়ে। পরিস্কার না হলে লোকে কিচ্ছুটি দেবেনা।
বিল্টু সুবোধ বালকের মতো মাথা নাড়লো।
এসব তার প্রত্যেকদিনের রুটিন। আজ শুধু আলাদা বলতে নতুন কাপড়। ভালো করে সেটা গায়ে জড়িয়ে নিয়ে হাতে ঝোলাটা তুলে নিল। সকালের লোকালটা আর বেশি দেরি নেই। যাবার আগে বাবা আর একবার মাথাটা টেনে এনে চুলগুলো অগোছালো করে দিল তার।
বিল্টু তাড়াতাড়ি করছিল। এসব যেন তার ভালো লাগছিলনা। হাত সরিয়ে নিয়ে চটি জোড়া খুলে রাখলো। এসব কাজে চটি পড়ে যাওয়া যায়না।
ঝোলাটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
দরমার বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে দামোদর অনেকক্ষণ ধরে ছেলের যাওয়া দেখছিল। তারপর ক্রাচদুটো একপাশে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়লো।

বিল্টু আর একটু হলে ট্রেন মিস করতো। পরের ট্রেনটায় ভিড় বেশি থাকে। বেশি ভিড় হলে তার কাজে ক্ষতি। ট্রেনটা পেয়ে এক লাফে উঠে গেল সে।
তারপর দারুণ  কায়দায় চোখে জল এনে চিৎকার করে বলতে শুরু করলো,  আমার বাবা চারদিন আগে মারা গেছে। শ্রাদ্ধের জন্য দয়া করে কিছু দিয়ে যান বাবুরা,....  দয়া করে কিছু দিয়ে যান..।
এই সব কথার মাঝখানে বিল্টু শুনতে পাচ্ছিল তার হাতে ধরা বাটিতে পয়সা পড়ার ধাতব শব্দ।

No comments:

Post a Comment