Saturday, February 24, 2024

 কৌশিক দাসের গদ্য কবিতা 

মহাদেব এখন কুপোকাত


পূর্ণিমা অমাবস্যার মতো মানুষে-মানুষে যৌনতা যখন জোয়ার-ভাটা আনে, তখন আমার শিব ঠাকুর হতে ইচ্ছা হয়।
ইউফ্রেটিস-তুরানী জাতি অমরত্ব চেয়ে একসময় সর্পদেবীর পুজো করতো 
তারা কখনও চায়নি কোনওদিন ভোরের বিছানায় সর্পদেবীর পাশে শুতে।

বাসুকি সজাগ থাকলে, মহাদেব স্বস্তিতে থাকতো।
মহাদেবের ইচ্ছে হয়েছিল কখনও পার্বতীকে লুকিয়ে পদ্মার সাথে এক রাত কাটাবে।

বাসুকি এখন বিষের জ্বালা অনুভব করছে!
এখন শিব ঠাকুরের গলা থেকে নেমে এসে সে পাতাললোকে আশ্রয় নিয়েছে বোন পদ্মার ঘরে।
সমুদ্র মন্থনের দড়ির মতো আরও একবার সে আটকে রয়ে গেছে।

নমনীয়তায় ভাঁজ পড়ে যাওয়া শিরদাঁড়াটা সেখানে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো।
কৌলীন্য আর কুপ্রথায়, মহাদেব এখন রোজ খাবার খাচ্ছে রাস্তায় ভিখারীদের সাথে শাল পাতার থালায়।

পদ্মার রূপে কামাতুর শিব এখন শিশ্ন হাতে সম্ভোগ মেটাতে চাইছে।
লাস ভেগাসের দরজায় দাঁড়িয়ে সমুদ্রের মাঝে ল্যানকাং দ্বীপের দিকে তাকিয়ে রয়েছে নির্দ্বিধায়।

স্পর্শকাতর আবদারে মোহিনী পদ্মা দ্বিধাগ্রস্থ এক যেন সুইফট পাখীর মতো আকাশে উড়তে থাকা শিব ঠাকুরের ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।
পেঙ্গুইন হয়ে সে কেবল মাটিতে ভাসতে থাকে 
আর পদ্মার জনক ডাকে হেজহগ প্রাণীর মতো কিউরিয়াস মাইন্ডের সাথে শীতল হয়ে যায়।

বাসুকি মায়ের মাটির মূর্তি তখন যেন ভুরিশ্রবা সাত্যকির শিরচ্ছেদ করছে আর পদ্মা অর্জুন হয়ে জনক শিব ঠাকুরের বাহু দ্বিখণ্ডিত করে যজ্ঞ কুণ্ডতে মা গঙ্গার জল ঢালছে। 

বুকের পশ্চিমদিকে রাক্ষস-তল হ্রদকে হত্যা করে মানস সরোবরে ডুব দিতে-দিতে ভেলায় পদ্মাকে সঙ্গে নিয়ে মহাদেব গিয়ে ঠেকে শাম্বালা নগরের পর্বতের চূড়ায়।

লেমিং প্রাণীর মতো অভিমানী পার্বতী সেইবার আত্মহত্যা করেছিল ডলফিনের মতো নিশ্বাস চেপে পতি নিন্দা শুনে।
অতৃপ্ত মাদ্রীর মতো পরলোকে ভগবান শিবের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার জন্য সে স্বেচ্ছায় সহমরণে যেতেও রাজি।
রাজা কুন্তিভোজ ঠিক যেমন দুর্বাসা মুনির সেবায় পাঠিয়ে ছিলেন মানস কন্যা কুন্তীকে, তেমনি পার্বতীলোকে ভগবান শিব এনে তুললেন সর্পদেবী কন্যা পদ্মার স্বয়ং মূর্তিকে।

ক্রমশ আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়া মস্তিষ্ক
সতী এখন শিব-পদ্মার সম্পর্ক-এর মাঝে লাইমলাইটে সতীন খুঁজে বেড়াই।
ফ্রেন্স অ্যাঞ্জেল ফিশ-এর মতো ভগবান শিবের পতি-ভালবাসায় সতী অন্ধ করে দেয় পদ্মার একটি চোখ।
মানস কন্যার দুঃখে শিব ঠাকুর এখন বেলপাতা চিবোচ্ছে আর কামদেব বিষ্ণুর সাথে সলাপরামর্শ করছে, হিমালয় পর্বতের ছাদে শুয়ে।

No comments:

Post a Comment