রমাপ্রসাদ গোস্বামীর কবিতা
কবিতা ১৮
কি দেখেছিলে সেদিন
বসন্ত বিদায় বিকেলে
ব্যবধান দুরন্ত বিস্তর
তবুও একাকী প্রতিজ্ঞা দু'চোখে
ঝরে পরে অবিরত
পৌরুষে আমার করেছিলে
তীব্র আক্রমণ
সময় ঘনিয়েছিল অবেলা স্রোতে
নিজেকে সঁপেছিলে একান্ত নিরালায়
বাসী ফুলের গন্ধে আজও
বিভোর প্রবাসী
দুই পাড়ের দুই কুলে আষাঢ় ঘনায়।।
কবিতা ১৯
এখনও হয়নি যেন
মুগ্ধ ঋতুমাস সময়ের বেলা
প্রগলভ চাউনি কেন
মধ্য বক্ষ মাঝে অশণি সংকেত
গুড়ু গুড়ু ঝরে অবিরত
তোমাকে উন্মোচিত করে
শ্রান্ত সহবাসে
বসন্ত অবেলায় অধরাই থেকে গেলে
নব বধূগো আমার ।।
কবিতা ২০
নীল মদে চুমুক দিয়েছি সদ্য
ভুলে গেছি সব-অতীত বর্তমান
ভুলেও ভাবতে চাইনা ভবিষ্যৎ
নেশাটা ফিকে হয়ে যাবে।
হিটলার থেকে সাদ্দাম
শুধু আমিই নিয়ামক
আরো অতীতে -
নাদির থেকে রবার্ট ক্লাইভ
পলাশী থেকে সদ্য বাগদাদ
সবই নীল মদের মহিমা
তবুও পিপাসা মেটেনি
নেশাটা ক্রমশ ফিকে হয়ে আসছে
আরো আরো এবারে দিক পরিবর্তন
আঃ অসহ্য ,এখনও আমার দু'গালে
চে-ফিদেলের আঙুলের ছাপ
বুকে আমার হোচিমিনের দেয়া ক্ষত
টুপটাপ্ টুপটাপ্ এ কিসের শব্দ
ধ্যাত্ মদের স্বাদ ক্রমশ নোনতা
যাক্ চুলোয় তবুও উদ্ধত আমি
জিভে পাই নীল মদের সাথে
গরম রক্তের স্বাদ
আগ্রাসন
এবারে এশিয়া ।।
কবিতা ২১
সভ্যতা শুয়ে আছে লাসকাটা ঘরে
নেকড়ের হাতে দেখো শাণিত কৃপান
সদ্য জাত শিশুটি
স্তন খুঁজে মরে
নেকড়ের সজাগ দৃষ্টি
তারই পরে আজ
লাসকাটা ঘর থেকে গুমোট হাহাকার
ভোরের সূর্য কাঁদে মেঘের আড়ালে
ধীরে ধীরে শিশুটি
হামাগুড়ি দেয়
নিমেষে সহস্র চোখে বিদ্যুৎ খেলে
কচি রক্ত শুষে নিতে তৎপর ওরা
লকলকে জিভ দেখ সদা ঠোঁট চাটে
লাসকাটা ঘরে---।।
কবিতা ২২
আলো ঝলমলে সারি সারি
পসরার মেলা
ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘেদের আনাগোনা
প্রাসাদের শীর্ষে বসে
সেদিনের মৃণ্ময়ীর
সখের সই পাতানোর খেলা
যমুনার সাথে
তোমার মখমলে সাজানো রূপ
বেসাতি পসরা সাজায়
আমার ছেঁড়া বসনে
আগমনীর হাসি চোরা স্রোতে ।।
কবিতা ২৩
তোমাকে নিভন্ত দেখেও
আগুন জ্বালাতে পারিনি আজও
জঠরে সুতীব্র ক্ষুধা
দানা বাঁধে রোজ
শরতের কোন এক কাকভোরে
বর্ষার বিভিষিকা
আমার উনুনে কেঁদে মরে ।।
No comments:
Post a Comment