Sunday, August 5, 2018

সব্যসাচী ঘোষ এর চোখে....

শ্রী রমাপদ চৌধুরী (১৯২২-২০১৮)
৪০র দশক থেকে যিনি লিখে চলেছিলেন। ১৯৬০এ যিনি মাত্র ৩৭ বছর বয়সে গ্রামীণ বাংলার  “বনপলাশির পদাবলী” শেষ করে ফেলেছেন আবার সেই তিনিই চরম রুক্ষ শীতার্ত কলকাতার অমানবিক মুখ দেখিয়েছিলেন খারিজে। সেই রমাপদ চৌধুরী মশাই দীর্ঘকাল আনন্দবাজারের রবিবাসরীয় বিভাগেরও সম্পাদক ছিলেন। সাগরময় ঘোষ দেশ পত্রিকার সম্পাদনার জন্যে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে নিজে কলম ধরার সময়টুকুই পান নি। যারা সাগরময় ঘোষের একমাত্র উপন্যাস “একটি পেরেকের কাহিনী” পড়েছেন তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন একজন সম্পাদক কতটা লিখিয়ে নিয়েছিলেন কিন্তু লিখিয়ে নেবার তাগাদার কারণে নিজের লেখার স্বার্থ চিরকালের জন্যে ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাকে। ভাববার চেষ্টা করে দেখুন সেইকালের রবিবাসরীয় সম্পাদনার কাজের জন্যে নিজের লেখালিখিতে কি চরম বেগ পেতে হয়েছিল শ্রীচৌধুরীকে! আজকের কাগজের সম্পাদকদের পেড়ে ফেলতে যেসব ছকবাজ লেখক কবিরা ছোটাছুটিতে লেগে রয়েছেন সেই সময়েও নিশ্চয়ই সেই ছকবাজদের পূর্বসূরিরা চৌধুরী বাবুর সামনে যে কত ভাঁড় তেল ছিটিয়ে গেছেন তার হিসাব আন্দাজ করা যেতে পারে মাত্র। কিন্তু তিনি থাকতে সুবিধা যে আদায় হয় নি সেকারণেই সম্মান জানাচ্ছি গত শতাব্দীর এই ঋজু মানুষটিকে। ৯৬এ তিনি গত হয়েছেন কিন্তু আমার কাছে ওনার তিনটি বয়স ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ২৫, ৪৫ ও ৮৯। ২৫এ তিনি স্বাধীনতা দেখেছেন। ৪৫এ তিনি ৭৭এর বামজমানার শুরুবাত দেখলেন আর ৮৯তে সেই বামেদের সরিয়ে মমতার আবির্ভাবও দেখেছেন। শুধুই দেখেছেন আর দেখেছেন আজকের নির্লজ্জ কবি লেখকদের মত তো তিনি নিজের ভেতরের নদীটিকে তো কোন পাল্টে যাওয়া সরকারের পথে বইয়ে দেন নি। লেখক কি পারতেন না যৌবনে স্বাধীনতার পর ডান আর মধ্যবয়সে গিয়ে বাম এবং বার্ধক্যে এসে মমতাময়ীর হাত ধরতে। কোনদিন দেখি নি তো!





No comments:

Post a Comment