খনন করিডোর এ মুখোমুখি সুবীর সরকার
আপনার একটা আলাদা পৃথিবী আছে , যেখানে আপনি বাস করেন আপনার প্রিয় কবি কবিতারা বাস করেন । যেখানে লোকগান , উত্তরজনপদ , যেখানে সাদা ঘোড়া , শস্য ভরা ধান আপনার প্রিয় এসব আছে । এটা কি খুব সচেতন ভাবে আপনি নির্মাণ করেছেন ?
সুবীর সরকারঃ
আসলে কি,আমার বেড়ে ওঠা বড় হয়ে ওঠা যে জনপদে,উত্তরের এক জঙ্গল চা-বাগান রাজবংশী ও পুর্ববঙ্গের মানুষদের ঘেরাটোপের ভিতর;সেই অপরূপ বাল্যকাল আমার জীবনে এইসব ঢুকিয়ে দিয়েছিল।বাবা জ্যাঠা পিতামহের খড়মের শব্দ ধানের গোলা কীর্তন গান ঠাকুমার পুঁথি পাঠ রাত জেগে পালাগান শোনা জঙ্গলের দিক থেকে আসা হাতির ডাক চা-বাগানের ভেতর ছুটে যাওয়া শেয়াল ও খরগোশ মথুরার হাট ভরা হাটে আদিবাসীদের নাচগান হাড়িয়ার বাথান মাহুত বন্ধুর গান এতোয়ারী এক্কা জার্মান রাভা শিবজি পাতলাখাওয়া ফরেস্টের শিকারকাহিনি শেষ রাজা ও রাজামলের মিথ ডানকান সাহেবের সফেদ ঘোড়া আঞ্চলিক নদীর ওপর ঝুকে পড়া মেঘদল ভুমিলগ্ন প্রান্তিক মানুষের সহজসরল যাপন আমাকে নেশার মতোন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছিল।আমি বুঝে গিয়েছিলাম আমার জীবন কবিতাজীবন!সন্নাসী ও সৈনিকের জীবন!আমার জীবন অভিশাপের জীবন!জন্মমরণের দিকে আবহমানের এক মানবজীবন আমাকে শিক্ষিত করেছে।পুষ্ট করেছে।মরণ অবধি এই জীবন জড়িয়েই আমি বাঁচবো।আমার কাজ করবো।সচেতনভাবে কিছুই নির্মাণ করিনি আমি।নির্মিতই হয়ে গেছে এভাবে সব!
৯ এর দশক থেকে লিখতে এসে এখন এই শূন্য পরবর্তী প্রথম দশকে এসে পৌঁছে গেছেন ? কেমন ছিল এতটা পথ ?
আমার কবিতাযাত্রা চিরকালই ভীষণ উপভোগ্য ছিলো।নানারকমের অভিজ্ঞতার ঢেউ জড়িয়ে জড়িয়ে আজ আমি এইখানে।নিজের মতন।আমার জীবন ও যাপন বেশ বর্ণময় চিরকালই।কবিতা তো আমার কাছে সব।কবিতার জন্য সারাজীবন লড়াই ও স্বপ্ন দেখা পাশাপাশী চলেছে আমার জীবনে।আজও তা জারি রয়েছে।
আজকের প্রজন্মের সঙ্গে নিজের কতটা মিল খুঁজে পান ?
আমি আজকের প্রজন্মের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে দিতে পারি সহজেই।কেননা,আমিও তো নিজেকে আজকের প্রজন্মেরই ভাবি।মনে করি।আমি চিরকাল সমকাল জড়িয়েই পথ হাঁটি।আর তরুন কবিরা তো আমার ভীষোন ভালো স্বজন।। তাদের তারুন্য আমাকে পুষ্ট করে।উস্কে দেয়।
মাঝেমাঝে নাকি আপনাকে তীব্র হতাশা গ্রাস করে , কেন এরকম হয় , কীভাবে আবার হতাশা কাটিয়ে ওঠেন ?
সেসব তো জীবনে থাকেই।কবির অন্তর্গত এক বিষাদ বলা যায়।বই,লোকগান,গঞ্জহাটের মানুষের কোলাহল,মোরগলড়াই,আর কবিতার আঙুল ধরেই আবার আমি হতাশা কাটিয়ে তীব্র এক জীবনেই ফিরি।
গদ্যে নতুন ভাষা নিয়ে এসেছেন , দীর্ঘ সময়ের কবিতা অভ্যাসই কি ভাল গদ্য লিখতে সাহায্য করে ?
কি জানি।এসবের উত্তর আমার জানা নেই।কেননা,আমি তো সবসময় ব্যাকরণ ভাঙা মানুষ।কি লেখায় কি জীবনে!কবিতা বা গদ্যে আজ পর্যন্ত কিছুই করতে পারি নি আমি!চেষ্টা মাত্র।আমি সবসময় শিখি।শিখতে চেষ্টা করি।
উত্তর ও দক্ষিণ , বাংলার ভূগোলের মত কবিতাতেও কি এর প্রভাব আছে ?
কবিতা দেশকালডিঙানো এক অভিমানী পাখি।কবিতার কোন উত্তর দক্ষিণ হয় না!কিন্তু আমি যে ভুগোলে বসবাস করি,সেই ভূগোল ও সেখানের ইতিহাস পুরাকথা মানুষজন মিথ হাটগঞ্জ তো আমার লেখায় আসবেই।আমার কবিতা ও গদ্যে তো সেসব আসেই স্বতস্ফূর্তভাবেই।স্থানিকতাকে অস্বীকার করে আমি অন্তত লিখি না।
একসঙ্গে প্রচুর কাগজে একযোগে লিখে চলেছেন , এত দুরন্ত গতি কি কখনো ক্লান্তি আনে ?
না না।আমি লেখা পড়া নিয়েই বরাবর থাকি।বাঁচি।কাজ আর কাজ আমাকে প্রবলভাবেই সতেজ রাখে।ক্লান্তি নেই আমার।আবার ক্লান্তি আছেও।
আপনার একটা আলাদা পৃথিবী আছে , যেখানে আপনি বাস করেন আপনার প্রিয় কবি কবিতারা বাস করেন । যেখানে লোকগান , উত্তরজনপদ , যেখানে সাদা ঘোড়া , শস্য ভরা ধান আপনার প্রিয় এসব আছে । এটা কি খুব সচেতন ভাবে আপনি নির্মাণ করেছেন ?
সুবীর সরকারঃ
আসলে কি,আমার বেড়ে ওঠা বড় হয়ে ওঠা যে জনপদে,উত্তরের এক জঙ্গল চা-বাগান রাজবংশী ও পুর্ববঙ্গের মানুষদের ঘেরাটোপের ভিতর;সেই অপরূপ বাল্যকাল আমার জীবনে এইসব ঢুকিয়ে দিয়েছিল।বাবা জ্যাঠা পিতামহের খড়মের শব্দ ধানের গোলা কীর্তন গান ঠাকুমার পুঁথি পাঠ রাত জেগে পালাগান শোনা জঙ্গলের দিক থেকে আসা হাতির ডাক চা-বাগানের ভেতর ছুটে যাওয়া শেয়াল ও খরগোশ মথুরার হাট ভরা হাটে আদিবাসীদের নাচগান হাড়িয়ার বাথান মাহুত বন্ধুর গান এতোয়ারী এক্কা জার্মান রাভা শিবজি পাতলাখাওয়া ফরেস্টের শিকারকাহিনি শেষ রাজা ও রাজামলের মিথ ডানকান সাহেবের সফেদ ঘোড়া আঞ্চলিক নদীর ওপর ঝুকে পড়া মেঘদল ভুমিলগ্ন প্রান্তিক মানুষের সহজসরল যাপন আমাকে নেশার মতোন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছিল।আমি বুঝে গিয়েছিলাম আমার জীবন কবিতাজীবন!সন্নাসী ও সৈনিকের জীবন!আমার জীবন অভিশাপের জীবন!জন্মমরণের দিকে আবহমানের এক মানবজীবন আমাকে শিক্ষিত করেছে।পুষ্ট করেছে।মরণ অবধি এই জীবন জড়িয়েই আমি বাঁচবো।আমার কাজ করবো।সচেতনভাবে কিছুই নির্মাণ করিনি আমি।নির্মিতই হয়ে গেছে এভাবে সব!
৯ এর দশক থেকে লিখতে এসে এখন এই শূন্য পরবর্তী প্রথম দশকে এসে পৌঁছে গেছেন ? কেমন ছিল এতটা পথ ?
আমার কবিতাযাত্রা চিরকালই ভীষণ উপভোগ্য ছিলো।নানারকমের অভিজ্ঞতার ঢেউ জড়িয়ে জড়িয়ে আজ আমি এইখানে।নিজের মতন।আমার জীবন ও যাপন বেশ বর্ণময় চিরকালই।কবিতা তো আমার কাছে সব।কবিতার জন্য সারাজীবন লড়াই ও স্বপ্ন দেখা পাশাপাশী চলেছে আমার জীবনে।আজও তা জারি রয়েছে।
আজকের প্রজন্মের সঙ্গে নিজের কতটা মিল খুঁজে পান ?
আমি আজকের প্রজন্মের সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে দিতে পারি সহজেই।কেননা,আমিও তো নিজেকে আজকের প্রজন্মেরই ভাবি।মনে করি।আমি চিরকাল সমকাল জড়িয়েই পথ হাঁটি।আর তরুন কবিরা তো আমার ভীষোন ভালো স্বজন।। তাদের তারুন্য আমাকে পুষ্ট করে।উস্কে দেয়।
মাঝেমাঝে নাকি আপনাকে তীব্র হতাশা গ্রাস করে , কেন এরকম হয় , কীভাবে আবার হতাশা কাটিয়ে ওঠেন ?
সেসব তো জীবনে থাকেই।কবির অন্তর্গত এক বিষাদ বলা যায়।বই,লোকগান,গঞ্জহাটের মানুষের কোলাহল,মোরগলড়াই,আর কবিতার আঙুল ধরেই আবার আমি হতাশা কাটিয়ে তীব্র এক জীবনেই ফিরি।
গদ্যে নতুন ভাষা নিয়ে এসেছেন , দীর্ঘ সময়ের কবিতা অভ্যাসই কি ভাল গদ্য লিখতে সাহায্য করে ?
কি জানি।এসবের উত্তর আমার জানা নেই।কেননা,আমি তো সবসময় ব্যাকরণ ভাঙা মানুষ।কি লেখায় কি জীবনে!কবিতা বা গদ্যে আজ পর্যন্ত কিছুই করতে পারি নি আমি!চেষ্টা মাত্র।আমি সবসময় শিখি।শিখতে চেষ্টা করি।
উত্তর ও দক্ষিণ , বাংলার ভূগোলের মত কবিতাতেও কি এর প্রভাব আছে ?
কবিতা দেশকালডিঙানো এক অভিমানী পাখি।কবিতার কোন উত্তর দক্ষিণ হয় না!কিন্তু আমি যে ভুগোলে বসবাস করি,সেই ভূগোল ও সেখানের ইতিহাস পুরাকথা মানুষজন মিথ হাটগঞ্জ তো আমার লেখায় আসবেই।আমার কবিতা ও গদ্যে তো সেসব আসেই স্বতস্ফূর্তভাবেই।স্থানিকতাকে অস্বীকার করে আমি অন্তত লিখি না।
একসঙ্গে প্রচুর কাগজে একযোগে লিখে চলেছেন , এত দুরন্ত গতি কি কখনো ক্লান্তি আনে ?
না না।আমি লেখা পড়া নিয়েই বরাবর থাকি।বাঁচি।কাজ আর কাজ আমাকে প্রবলভাবেই সতেজ রাখে।ক্লান্তি নেই আমার।আবার ক্লান্তি আছেও।
উপভোগ করলাম সাক্ষাৎকারটি।
ReplyDelete