Tuesday, June 19, 2018


মিলটন রহমানের কবিতা 

অক্ষয়


প্রশ্নাতীতভাবে যে নক্ষত্রের প্রতি আমরা অবনত
যে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আমরা সাহসী হই
তারওতো কিছু প্রাপ্তি আছে
যে বৃক্ষ ছায়া ও গুল্ম দিয়ে আমাদের প্রানীত করেছে
যে পথ আমাদের অন্তহীন হাঁটতে শিখিয়েছে
তারওতো কিছু চাওয়ার আছে
যে উর্ধ্বমুখী হাত আমাদের আকাশ দেখিয়েছে
যে কথা আমাদের যুদ্ধ জয়ে আপ্লুত করেছে
তারওতো কিছু দেখার আছে
যে বুকে জেগেছিলো বাংলার অবিনাশী গান
যে বুকে লেগেছিলো দখিনা পালের হাওয়া
তারও তো কিছু গান শুনার আছে
যে করোটি ধারণ করেছে সহ¯্র ক্ষত চিহ্ন
যে বুকে স্লোগান ছিলো একতা ও অভিন্ন
তারওতো কিছু প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন

ওই যে উর্ধ্বমুখী প্রান্তর, ওই যে সাতই মার্চ
ছাব্বিশে মার্চের নবনকশার ঘোষণা
মৃত্যুমুখী যাত্রায় যে হীমালয় অবিচল থেকেছে
তাঁর উত্তরসুরীরা বোল পাল্টাবে কি করে?
হে মুজিব, হে পিতাÑ
যারা অকৃতজ্ঞ থেকেছে তারা মুন্ডুহীন
যারা এখনো নগ্ন নকশাকার
তারাতো তোমার সন্তান নয়
অন্যকোন বীর্যনিসৃত পরগাছা
এই বাংলায় যতদিন বাতাস খেলা করবে
ততদিন তুমি বেঁচে রবে
এই বাংলায় যতদিন উদ্যান রবে
ততদিন রবে তোমার অবিনাশী গান
তুমিই আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
 

প্রিয়ভাষিণী


মাঝে মাঝে পথ ভুল করে চলে যেও পাখি
বেলা শেষে থেমে গিয়েÑ
নেমে যেও মাঝে গন্তব্যহীন কোন পথে
একদিন যেভাবে অনিচ্ছায় থেকেছো অন্ধকুপে
রেখেছো হাত কৃষ্ণাভ রাতেÑ
ওরাইতো সেদিন ঢেলেছিলো বিষ ওই দ্বৈরথে।

আমাদের জন্য রেখো না কোন শোক হাহুতাশে
যে ঋণ তুমি দিয়েছো আমাদেরÑ
রেখে গেছো অংকিত উদ্যানের শোভিত রেশে
সেই ভালো তুমি মরে যেও মাঝে শীতবৃক্ষের মতো
বিষাঘœ রাত শেষে কোন এক ভোরেÑ
আবার জেগে উঠো তুমি শঙ্খমালা আর কেশে।

চাইলে তুমি নিতে পারি হাতে হাতুড়ি-শাবল
দিতে পারো হাতে বুলেটের তুঁলিÑ
যদি তুমি ডাকো নতুন কোন যুদ্ধরণতরী
আমরাতো আছি মুটে-মজুর যার যা কিছু আছে
হাঁক দিয়ে কেবল ডাক দিলে তুমিÑ
ধনুকের মতো ক্ষীপ্রগতিতে আমরাইতো লড়ি।

কখনো কখনো পথ ভুল হলে কি আর এমন হয়
ট্রাফিক সিগনাল পথ মেলে দিলেওÑ
আর্তস্বরে তুমিইতো ডাকো হেÑÑ প্রিয় সুহাসিনী
তোমার দেহত্যাগ প্রস্তান নয় কোনো এই দাবি মানি
তোমার হাতের অক্ষররা আছেÑ
আছে বুলেটের মতো লালটিপ তোমার ওগো প্রিয়ভাষিণী।

বিরতি


কারুকর্ম কিছুকাল বন্ধ রেখে ভেবেছি অস্ত্রবাণিজ্য করবো
লক্ষ্য ঠিক করে ট্রিগার চালনার বিদ্যা আয়ত্ব করবো
কড়কড়ে নোট আর নারীগন্ধময় সময়ে লেপ্টে থাকবো
কিছুকাল আমি এভাবে আর শিল্পকর্মে থাকবো না
প্রয়োজনে পতিতালয়ে দালালি করবো
পানমত্ত পড়ে থাকবো কোন ভাগাড়ে
তবুও কিছুকাল রচিবো না কোন কিছু
প্রয়োজনে কোন নারী নেত্রীর সাথে মিছিলে যাবো
ভাড়ার বদলে আড়ালে একটু সময় চেয়ে নেবো
আমি এখন বাণিজ্যিক, চাকার সুগন্ধে পাঁড়মাতাল
আমি এমন সময়ে আর শিল্প করবো না
আমি কিছুকাল পতিত হবো
তারপর কোনকালে মৃতগন্ধ থেকে
ফুলের সুভাস নেবো
আবার কবি হয়ে উঠবো
আঙ্গুলের ডগায় ফোটাবো এটমবোমার মতো কবিতা
যে কবিতায় কেবল অগ্নিভূগ পতঙ্গের গান থাকে।

No comments:

Post a Comment