Tuesday, March 31, 2020


সুমন মল্লিকের দীর্ঘ কবিতা 



তিস্তা নদীর তীরে 
সুমন মল্লিক


মেঘলা আকাশে লেখা হয়
পুরনো দিনের কথা – তোমার কথা মনে পড়ে
পিপাসা এখনও আগেরই মতো সতেজ
শুধু আরেকটা পিপাসার সাথে তার আর আলিঙ্গন নেই
এই বালুকাবেলায় নেই কোন অন্তরালের অবগাহন
তবু ভাল লাগে স্মৃতি জাগানো বাতাসের প্রেষণা

এখন আর খুঁজে পাব না জানি
ক্ষরস্রোতা আবেগবাহার, তীরে বসে তাই
স্বপ্নতারা গুনি, একটা কমলা রঙের শাড়ি
আমাকে ঢেকে নয়, আমার শরীরে
গোধূলির রাঙা আলো নীরবে এনে দেয়
উদাসী উল্লাসের মৌনব্রত

তোমার কি আজও মনে পড়ে 
সাত সারসের সাঁতার ? আনন্দতন্দ্রার ঋদ্ধি ?
আমি নিয়তির পেছনে দাঁড়িয়ে
ছারখার করি মায়াবিতান – দশ বসন্তের
সরল শান্ত নির্বাসন আর
তোমার অবশিষ্ট হিন্দোলে রাখি যাপনের শঙ্খচূড়

নদী যেমন ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব
সেরকম কোন নদী নেই আমার 
ডাল-ভাত জুটে যায় কোনমতে, ছুটে চলে
চিতার আগুনের তেজ সারা শরীরে
একবুক বেদনায় দাঁড়িয়েও
মনে পড়ে তোমার-আমার অমেয় সংবেদনা

দোষ কখনও দিইনি তোমাকে
আমারও কি কোন ভুল ছিল ? জানি না
হয়তো বৃত্তের বাইরে আরেকটা বৃত্ত ছিলই
ভালবাসায় ধ্রূবতারা ছিল – তার ভেতরে ছিল
গ্রহণের আঁধার – আমরা বুঝিনি
আমরা ধ্বংসের মাঝেই শুয়ে ছিলাম একাকার হয়ে

গুলমার শ্যামল ছায়ায় তোমাকে
উপহার দেব তালপাতার কুঁড়েঘর – এই ইচ্ছে
ইচ্ছেই থেকে গেল, জ্যোৎস্না রাতেও তো
করা হল না একবারও বোকামিমাখা চন্দ্রস্নান
তিস্তা জানে, ব্যর্থ ছেলে আর তার প্রেমিকা
একদিন ঠিক দুই গোলার্ধে বন্দি হয়ে যায়

No comments:

Post a Comment