Tuesday, March 31, 2020

উত্তর পূর্বাঞ্চলের কবিতা 

গাছেদের রাতকথা

বিজয় ঘোষ 

আমার গাছেরা রাত জাগে।
শিশির পড়ে পাতায় পাতায়।
নগ্নগাছের পোশাক হারিয়ে গেছে উদাসীবিকেলে।

গাছের বাকলে লেখা আছে প্রিয় নাম।

গাছেদের কোনও ধর্ম নেই জেনে পাখিরাও
পারাপারে বাসা বাঁধে গাছের ডালে।

তখন নদীর দুই পারে দুটি নৌকো ভিন্ন ভিন্ন
নিশান উড়িয়ে ধর্মযাজকের পোশাক পরে নেয়।

গাছেদের পোশাক নেই।
কোনও ধর্মে দীক্ষিত নয় প্রাচীন বটগাছ।


ছায়াশরীর

কমলিকা মজুমদার

ঘুম হারা রাতে যে ছায়াশরীর
জড়ো করেছে জোছনা ফুল,
নরম আলোয় জ্বলতে দেখেছি
ঘাড়ের পাশে এক মিশকালো তিল।
অথচ এ রাত শুধু আমার ছিল,
ছিল ওই তিল আঁকা মায়াবী শরীর,
ছিল মুঠোয় ভরা ফুল পরশ।
এত আলো দূরে ফেলে রেখে আজ
বলতে পারো কেন দাঁড়িয়ে আছি
ওয়ালর‍্যাকে রাখা বাহারি মুহূর্ত হয়ে?


জনগণ

দেবলীনা সেনগুপ্ত

ওরা খাদ্য চেয়েছিল
শীত গরমে শ্রান্তি রাখার ছাউনি
জন্মের সুখ মৃত্যুর শোক
সংগমের পৌনঃপুণিকতায় ভেসে যাওয়া
গতানুগতিক সমে বাঁধা দিনকাল
এটুকু চাহিদা নিয়েই
প্রথম ও প্রধান খবর শুনতে শুনতে
আশঙ্কা এবংআশায়
দাঁত মেজে ঘুমোতে গিয়েছিল সব
ওদের দেওয়া হল
রক্ত ও মাংসের গোলক
অগ্নিময়, বরফশীতল বর্তুল
লোফালুফি খেলতে খেলতে
ওরা ভুলেই গিয়েছিল
ওরা ঠিক কি চেয়েছিল
বৃষ্টি
জীবন
অথবা রক্ত?

কিছু না বুঝেই
নয়ানজুলির ধুলোয়
মরিয়া হয়ে খুঁজেছিল আত্মচিহ্ন
এবং তারপর
ধুলো হয়ে গিয়েছিল নিজেই

ধুলোর নাম কোন তালিকায় থাকে না
যদিও, নামহীন ধুলোই শেষ পরিণতি



তৃষ্ণা 

রাজেশ চন্দ্র দেবনাথ

সমস্ত মেঘশৈলী ভেঙ্গে যায়                 
যুগযুগান্তরের রোদ্দুর পাহারায়

অলৌকিক তৃষ্ণা গুছিয়ে         
                     শ্মশান তাপে
বৃক্ষ সন্ধি প্রথায় বুনছে স্বরধর্ম


No comments:

Post a Comment