প্রায়স্তব্ধ শ্বাসমূলের কবিতা
নীলাদ্রি দেব
জয়ের প্রতীক আঁকা পতাকার ছায়া
বারবার মিশে গেছে সাগরের জলে
চেনা ছায়া দীর্ঘ হয়
ক্রমে আলোর অভাব তীব্র থেকে তীব্রতর হলে
ঢেকে যায় মানুষের মুখ
যে মুখে মুখোশ জড়িয়েছিল অবিচ্ছেদ্য ভাবে
ছায়াপথ ঘুরে এসে খুঁজে নেয় সময় অসুখ
সময়ের দিকে দোষ!
দোষ আর কত দেবে?
যে সময়ে নত হওয়া, স্তব্ধতা...
খানিকটাও জরুরি ছিল,
উবে গেছে স্মৃতিচিহ্ন থেকে
ওদিকে মৃত সব মাছের শরীর
কাঁটা আর আঁশের দোহাই
মাটি নয়, দেশ নয়,
আজন্ম উঠে আসা চিৎকারে
অন্তত পৃথিবীকে প্রাণের পিণ্ড বলে ভেবো
যেদিন ঐ সমুদ্রের তীরে আলান কুর্দির শেষ কান্না
শুনেছিল লাল কাকড়ার ছোট শিশুটি
শুনেছিল শেষ প্রশ্বাসের শব্দ
সেদিনই বার্তা রটে গেছে
রটে গেছে সূর্য শিবিরে
যেদিন যশোরের এতগুলো গাছ
মৃত্যুভয়ে প্রতিটি শ্বাসের মাঝে
জুড়ে নিল ফুসফুসের ডাক
পত্ররন্ধ খুলে দিল রাত নটা আটান্নয়
যেদিন সন্ধ্যার আগে হঠাৎ বেড়ে গেল বাষ্পমোচন
তুমি কান্না বলে ভাবনি তো
ভাবেনি তো কেউ
তাই এই গোপন স্বীকারোক্তি
যার সাথে নাভিমূল, জুড়ে আছে সূর্য শিবিরে
এত এত অভিযোগ, স্তূপ
জ্যোৎস্না ঘেঁটে ভিড়ের ভেতর
কোনো এক সূত্র উঠে আসে
ফেলে আসা পথে
স্পর্শ আর দাগ বেয়ে স্তব্ধ রেস মাঠ
ইঁদুরের গর্তের ওপর সাজানো পলির স্তর
ঘাসে ঘাসে শিশিরের দানা
মেঘেদের শেষতম আর্দ্র ভাগফল
এতসব বয়ে চলা মানুষ শরীর
উবু, আরও উবু হয়ে আসে
নুব্জ তো হতে হয় বয়সের ভারে!
তবে কেন মৃত্যুপরোয়ানা... মেনে নিতে এত ভয়?
আত্মসমর্পণের আগে বাকরুদ্ধ, নতজানু আজ
সময়েরই কাছে
যুদ্ধ!
যতটা যুদ্ধ ভেবেছ তুমি
হয়তো বা ক্ষমার প্রলেপ
এত বড় হৃদযন্ত্র নিয়ে ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ছে একা
ঘন এক কুয়াশার মতো
শীতরাতে মায়ের চাদর
যার নিচে আমাদের ত্রস্ত হামাগুড়ি, অন্ধ চিৎকার
সমস্ত দৌড়ের শেষে শুধু শ্বাসবায়ু ঘনীভূত হয়
শুধরোবার শেষ ইচ্ছেগুলো
কিছুটা বরফ গলিয়ে জল
বাঁচার শর্ত সব নদীর মতো
মানুষ বয়েই চলে
স্রোতে স্রোতে আলোর খিদে, আগামীর গান
No comments:
Post a Comment