বাস্তুতন্ত্র ও অন্যান্য
নীলাদ্রি দেব
এক.
দুপুর ভর্তি কমলা বাগান
চায়ের সরঞ্জামের পাশে স্থির উত্তাপ
নেশামুক্তিকেন্দ্রের বিজ্ঞাপনের বিপরীতে
চামড়াহীন সাপলুডু
নির্দিষ্ট আয়তন ঘেমে জল গড়িয়ে যায়
কেবল কমলা বাগান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে
কাঠবেড়ালি
দুই.
একটা ছোট খাট আছে. নিচু. পাশে ওপর-নিচ লম্বাটে জানালা. ঘরে শুয়েই অনেকটা আকাশ দেখা যায়. বর্ষা ভাইরাস ইত্যাদি কারণে সব জানালাই বন্ধ রাখতাম. চোখে অন্ধকার সয়ে গেছে. আজকাল নরম ভেজা আলো দেখতে খুব লোভ হয়. আবার গরম বাড়ছে. জানালা খুলে দিয়েছি. গাছের পাতা নড়ছে না. অদ্ভূত কোণ থেকে খানিকটা দূরের কোনো অ্যান্টেনা দেখি. তীব্র একা. অথচ অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় না. কয়েক জোড়া চড়ুই দেখেছি. অনেক দিন পর খুব স্পষ্ট শুনেছি ওদের ডাক. মাকে বললাম ছাদে কিছু দানাপানি রেখে আসতে. এরই মধ্যে ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়ে থুনবার্গের কথা শুনতে শুনতে মনে হয়েছিল, আমরা বারবার অন্ধকারেই আলকাতরা ছুঁড়ে দিই. দুপুরে চোখ লেগে এল. দেখলাম, একটা আলবিনো শিঙি রঙ হারিয়ে ফেলছে. ক্রমে কালচে হয়ে এল. একে আমরা স্বাভাবিক ভাবছি. কিন্তু... হঠাৎ আঁতকে উঠলাম. এতক্ষণ চারটে তারের মাঝে সুর খেলছিল. যেন বৃষ্টির প্রার্থনা. ক্যাসেট জড়িয়ে গেছে. ঘামছি. পাখা ঘুরছে, তবু.
তিন.
বৃত্ত এঁকেছি. কেন্দ্র বলতে একটা বিন্দু. কখনও বিন্দুর থেকে নিজেকে ছোট করে নিই, বৃত্ত মনে হয়. কখনও বৃত্তকেই কেন্দ্র ভাবতে ইচ্ছে করে, মূলত ভূমিকম্পপ্রবণ শহরের গল্প বলতে সবচে উঁচু কোনো ছাদে উঠে এলে. আকার, দূরত্ব... এসবের ওপর কর্পূর ছিটিয়ে দিত মা. শুনেছি এতে নিজস্ব অধঃক্ষেপ বেড়ে যায়. কিন্তু এতো দ্রুত উবে যায় সব, বিকেল ও সন্ধের সীমান্তে আমার শ্বাসকষ্ট হয়. যদিও গাছের কাছে গাছ দাঁড়াতে পারে না, বিল্ডিং দাঁড়িয়ে যায়. যে/ যা যত দ্রুত দাঁড়ায়, শুয়ে যায় কি? এসবের কোনো সমীকরণ নেই. তাই হয়তো এক্স ধরে নিই. সীমানা প্রাচীরে যৌথ 'হ্যাঁ' লেগে আছে. দীপাবলীতে তেল চুঁইয়ে যাওয়া প্রদীপ. অতএব অঙ্কতে টেনশন ক্রিয়েট হল. সব সমস্যায় সমাধান থাকতে নেই. কিংবা থাকতে আছে. মনোক্রোম দৃশ্যের শেষে মোড়লের হুঁকো থেকে পাকিয়ে ওঠা ধোঁয়ার মতো স্থির কিছু.
এসব আজগুবি আর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে না.
অথচ কিছুতেই পাণ্ডুলিপি বদলাতে পারছি না.
No comments:
Post a Comment