অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা
ছায়াছবি
জাক দিয়ে গেছেন ঈশ্বর এখানে।
সোদা পাটের গন্ধ টের পাচ্ছি ডুব দিতেই।
ঘোলা জলে এখনো সেই ভেসে থাকা বেগুনির পরেও
তোমাকে আমার পা ছুয়ে গেল
চুল খুলতে খুলতে উঠে আসতেই বুঝলাম
এবার কলার ভেলায় ভেসে থাকার দিন এসে গেছে।
টানাটানির সংসারে আবার আগুন জ্বলবে আমাদের বাপ
মায়ের মত।
বৃদ্ধ চিত্রকর
কথা বন্ধ হয়ে গেলে আর নম্বর ক্যারি করা যায় না।
দুটো বৃষ্টিদিনের কথা শুনেছি
তার কিছুই নেমে এলো না
আমাদের আশেপাশে আজ
সবটাই বুজে যাওয়া চোখের এইমাত্র
বন্ধ মানুষের শরীরে দেখতে পাওয়া অ্যাব্রড
আমার ছুটিরদিন
তোমাদেরও
ঝুলে থাকা তাকানোর নোটিশ
সাইকেলের তালাও আর খুলতে পারছে না কেউ
পারছে না পাসওয়ার্ড ভেঙে ফেলতে
কথার ফাঁকে ফাঁকে দিনগুলোও
মুছে যাচ্ছে নম্বরের সাথে
বঙ্গবন্ধু
মানুষ একটা চরিত্র
মানুষ যখন এতটাই ঈশ্বর
আমি তাকিয়ে সেই মানচিত্রের দিকে যার প্রতিফলিত
আকাশের নিচে আঘাতে আঘাতে
জর্জরিত আরেকটা মেঘ আর মেঘের
নির্দেশ ছিঁড়ে বেরিয়ে আসছে
আমাদের বাংলাভাষা
মানুষ একটা সময়ের ইস্তাহার
বুকের দেওয়ালে দেওয়ালে লিখিতভাবে
সেই রক্তের দাগ
আমাদের কাঙ্ক্ষিত মিছিলের উপর চড়াও হওয়া
ব্যভিচারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ
মানুষ একটা দেশ
দেশের মাটিতেই ঘাতকের নির্মমতা
আপনি আমাদের বন্ধু
আপনি আমাদের প্রিয়
আপনি আমাদের গঙ্গা যমুনায়
ভেসে থাকা রং এর জন্য
একটা চিঠি
আরেকটা উড়তে থাকা পতাকার
দিকবিদিক
স্বাধীনতা এঁকে রাখা আমার শৈশব
আমার মা বাবার প্রিয় মাতৃভূমি
সব ঝুট হ্যায়
হত্যার এই দৃশ্যে মুখিয়ে আছি
কেউ কেউ সরিয়ে রাখছে প্রার্থনা
ঘুমিয়ে থাকা গাছেদের জন্য
এক টুকরো সাহস উড়ে এলো
একটা গ্রাম তখন প্রসবের আশায় কিছুটা দূরের শোনা
পতাকা র গোত্র বদলে দিলেন মা
তার হেঁটে আসা আলতার নিচে
সুরের দুইদিকে ভাঁজ খুলছে ভাগ্যের ছোঁয়া
গলতে গলতে আমাদের চেনা জনপদ
সকলেই হারিয়ে গেছে
সবাই স্বাধীনতা পড়ে নিলো দিবস হারানোর
দু এক লাইন
ভেতর থেকে অরণ্য আসছে
আর তুমি ভেসে যাচ্ছো কোন ইতি না রেখে
দেওয়ালের ফাঁকায় কোন বাড়তি নেই
কোন আঁচড়ও নেই খুবলে নেবার
তবু ওরা পার্বণ সেরে তাকিয়ে থাকে
স্বীকার করে নেয় ঈশ্বরের জমায়েত
চূঁড়া থেকে নেমে আসছে মিছিল আর দীর্ঘ
নিঃশ্বাসের
জবানবন্দি
স্বাস্থ্যবীমায় নতুন সংযোজন
কেউ চাইলেই ছায়া কিনে নিতে পারবে
কেউ চাইলে মরেও যেতে পারবে ঠাকুরের ইচ্ছে মত
নিজের জন্য
ধিক্কারের আরো কিছু নতুন শব্দ চাই
থুতু যতটা গিলেছি এতদিন উগড়ে দিই সারা শরীরে
যখন
কোথাও ঈশ্বরের বাচ্চারা
মানুষ লুকোচ্ছে নতুন মুন্সিয়ানায়
সকাল হলেই আবার কত কত মানুষ
ঘামে ভিজচ্ছে যারা অজানা চুরির গন্ধে
আকাশ পুড়ছে
মাটির কিছুটা ওপরে তখন
নীচে সেইসব লিখিত কর্মকাণ্ড
তথ্যানুযায়ী ক্লাসরুম খুলে যাচ্ছে প্রসবের
বেওয়ারিশ ঠিকানায়
মাতৃত্বকালীন ছুটি চেয়ে নিতে।
একটা সাদা কাগজও নতুন করে কোথাও পৌঁছে দিতে
পরমহংস
এখনো তাকে তো দেখলাম না। না নদীর তাকিয়াতেও না।
পরিকল্পনা মাফিক সবটাই ওড়ানো। আর ওই রংগুলো।
মেঘেরা তো এলো না আর এই অধঃপতন সামলাতে। একটা
দুটো পায়ের শব্দও...
এই বুননের ছায়ায় কিভাবে যেন এসেই যায় কেউ নৌকো
ডোবাতে।
আর বাতাসের বাঁক ক্রমশ মায়েদের চেনা আড়তের
দরজায়।
ভেতরে সংক্রামিত তুলিদের বনেদিপনা।
একটু তাকিয়ে থাকলে কোন দোষের নয়।
মুখটা ঢেকে দিলেও কিছু একটা রপ্ত হতে থাকে
উচ্ছন্ন সমেত।
অসঙ্গতি
নিজের সাক্ষাৎকার নিজেই নিতে দেখি রাত হয়ে এলে
রাস্তায় হাজার হাজার কালো গাড়ি লাইট ডিম করে হেঁটে যাচ্ছে আর খয়েরি ছোপওয়ালা একটা
গাড়িগুলোকে নখের আঁচড় দিতে দিতে করে তুলছে আরো হাজার হাজার খয়েরি ছোপওয়ালা বেড়াল।
অসাধারণ এই দৃশ্য দেখছি সংগোপনের এক অনন্ত দিয়ে। ছিটকে বেরিয়ে আসা পোড়া কপাল দিয়ে।
পাশ ফিরতেই গ্রন্থ কেমন যেন তাবু হয়ে উঠলো। কেউ
কেউ তাদের নরম স্তন ভেবে ঠান্ডা জলে ডুব দিলো আলাদা কোন স্বাদের জন্য। নেড়েচেড়ে
দেখার জন্য। আমি সেই তাবুর ভেতর কাউকে কিছু না বলেই ঢুকে পড়তেই আকাশে বৃষ্টির পা
থেকে শুরু হচ্ছে এবং
এই বং যদি নখের বংশ পরিচয় দিতে পারতো তাহলে
ঈশ্বর লিখেছিলেন কালো বেড়ালগুলোর মালিকানা অর্জন এর যে অধিকার জন্মাবে তাকে কোলাহল
থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে আর বেশি সময় লাগবে না।
আপাতত পশ্চিমপ্রান্তে এই দোষ এর ভিজে যাওয়া
ডিভাইডার। যাকে টপকাতে পারছি না কিছুতেই। কালো খয়েরি ছোপওয়ালা গাড়িগুলি হেঁটেই
যাচ্ছে।
আর বেড়ালটা হাসছে আমার উৎসর্গের মত। জিভ দিয়ে
চেটে দিচ্ছে মাথা কিছু একটা বেরোবে বলে....
No comments:
Post a Comment