একটি ব্যক্তিগত গদ্য ও নিশিযাপন
বিকাশ দাস(বিল্টু)
এখন মাঝরাত। মাথার ওপরে চাঁদ। মেঘ-ছায়া, আলো-ছায়ার লুকোচুরি খেলা চলছে। আকাশে। মননে। আমি চুপটি করে বসে বাড়ির সামনে। আমাদের খলানে।
এখানেই বাবা বাজার থেকে ফিরে রাতের খাবার খেয়ে কিংবা কোনোদিন না খেয়েই আনমনে গভীর রাত অব্দি বসে থাকতেন। একাই। কি জানি কি ভাবতেন তন্ময় হয়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা। কি ভাবতেন? কেন বসতেন? কি দেখতেন? জানিনা!
যদিও এখন অনেকটাই বুঝেছি বাবা কেন এভাবে কাটিয়ে দিতেন ঘন্টার পর ঘন্টা। বিড়ি শেষ না হতেই কেন আবার ধরাতেন বিড়ি। বিড়ির পর বিড়ি।
নিস্তব্ধতার বেড়া জাল ডিঙিয়ে একটি হুইসেল আমার চেতনায় আঘাত হানে। থেমে গেলাম কিছুক্ষন।
মাঠে চাষ করা ট্রাক্টরটি লাল আলো জ্বালিয়ে পাশ কেটে গেল আমার। আমায় ডিঙিয়ে বাঁশেরমাচা লাগোয়া পথটি ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বড়ো রাস্তার পথে। ক্রমে আড়াল হচ্ছে আলো।
ততক্ষনে বিষাদের কপালে লেপে দিল চাঁদের আলো। ধানখেতের জলে উপচে পড়ছে রূপালী চাঁদ। কেঁপে কেঁপে উঠছে সে আলো। ধরলার বাতাস চুম্বন করছে আমায়। কাদামাটির সোঁদা ঘ্রাণে বিভোর হয়ে মায়াবী সংসারের মায়ায় আরও জড়িয়ে পড়ছি অধিকতর গাঢ় হয়ে।
চাঁদ এখন মেঘের আড়ালে। ঘরে ফেরার পালা। মা ডেকেই চলছেন : ' বাবা ঘরে আয়। আর কত!'
যদিও তখনও মৃদু বাতাসে কেঁপেই চলছে আমার হাতে বপন করা সদ্য ধানের চারা।
No comments:
Post a Comment