সিনেমা :
ট্রেনের কামরায় চোখ রেখে শুভঙ্কর পালের চোখে স্বপ্নের নায়ক
যতদূর জানি মানুষটা শুধুই সিনেমা পাগল তা নয় । হতে পারেন গদ্যকার । দিনের শেষে গদ্যকারও তো মানুষ । আর অভিনয়টা যখন মানুষকে দিয়েই করানো হয় তখন তার তুল্যমূল্য বিচারও মানুষকেই করতে হয় বইকি ! শম্ভু মিত্রের বিভাব নাটকের কথা প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পরে গেলো , উপকরণ থাক বা না থাক ভঙ্গিমার মধ্য দিয়েই নাটকের ভাব ভাবনাকে ফুটিয়ে তোলার এক উত্তম প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় । আর দর্শক সেই অভিনয় তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে যায় । সাদা কালো সিনেমার যুগে কতবার নায়ক বা নায়িকাকে দেখেছি চাঁদের আলোয় একটি গাছের ডাল ধরেই প্রেম বিনিময় শেষ করলেও কেও বিরক্ত হলো না ।
সিনেমায় চরিত্রকে অনেকবেশি পারফেক্ট করে তোলার পেছনে কণ্ঠ ব্যবহার যেমন জরুরী তেমনি জরুরী চোখের ভূমিকাও । মুখ যতটা বলে চোখ তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বলে । উত্তমকুমারের ' নায়ক ' সিনেমা না দেখলে তা বলে বোঝানো বেশ কঠিন । সিনেমা দেখতে দেখতে কখন যে এক মেয়ের উনানে তরকারি পুড়তে থাকে সে ভুলেই যায় । যখন সেই পোড়া গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরে ততক্ষণে নায়ক ডুবতে থাকে । নায়কের অরিন্দম কী অদ্ভুতভাবেই শংকরদার চিতার আগুন নেভার আগেই বদলে নেয় তার জীবনদর্শন । একটা ব্রিলিয়ান্ট ফিউচার আর ঝলমলে দিনের জন্য শংকরদার ওই থিয়েটার তত্ত্বকে সে অনায়াসে উপেক্ষা করতে পারে । হয়তো ওই উপেক্ষার আড়ালে তার সাবকনসান্স মনে একটা দ্বন্দ্ব থেকেই যায় । আর তা যে রয়ে গিয়েছিলো তা পরিচালক ও লেখক ফ্রয়েডের স্বপ্ন তত্ত্ব মেনেই ফুটিয়ে তুলেছেন । চারদিকে টাকার পাহাড় আর খ্যাতির বিড়ম্বনার মধ্যে একদিন না একদিন নায়ককে হারিয়ে যেতেই হয় । সে যেনো এক অশনি সংকেত ধ্বনি শুনতে পায় । আঁচ করতে থাকে সেই আগুন তাঁকেও পুড়িয়ে মারছে । শংকরদাও সেখান থেকে তাকে টেনে তুলতে পারে না । হয়তো সে অরিন্দমের ওই মূর্খামি সে মেনে নিতে পারেনি ।
আসলে পরপর তিনটি সিনেমা ফ্লপ মানেই যে এতোকালের সাফল্যের শীর্ষে থাকা নায়কের সৌধমিনার তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে পারে অরিন্দম সেটা বোঝে । কিন্তু তার মনের সেই সংঘাত বা সংবেদন কাওকে বলে মনটা হালকা করবে সেই মানুষটির বড়ো অভাব । তার নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হিসেবে ঘুমের বড়ি কিম্বা মদ্যপান করে ভুলে থাকবার একটা অভিনয় তাকে নিজের সঙ্গে নিজেকেই করতে হয় । মুকুন্দবাবুর ব্যার্থ জীবনে সামান্য একটা কাজ দিতে না চাওয়ার মধ্যে হয়তো প্রথমদিনের অপমানটা ভুলতে না পারার কারণটাও প্রচ্ছন্নভাবে ছিলো । সব হারিয়ে আবার শূন্যে নেমে এসে এক সাধারণের মাধ্যে নিজেকে এনে দাঁড় করাবার সে কিছুতেই সে মেনে নিতে চায়না । হতাশার কালো মেঘ যখন তাকে ঘিরে ধরতে চায় তখনি নায়িক সদৃশ সেই মেয়েটি ইন্টারভিউ না ছেপে মনে রেখে দেবার কথা শোনায় । কোথাও যেনো আবারো একটা উত্তরণের সিঁড়ি নায়কের চোখে ধরা পরে । এই কাহিনির নায়িকাও নায়কের ক্ষণিক প্রেমের ঝিলিক সহজেই উপেক্ষা করে ভিড়ের মধ্যে এগিয়ে যেতে পারে । এদিকে অরিন্দমের রঙিন চশমা ঢাকা চোখ দর্শকদের চোখকে ফাঁকি দিয়েই নায়িকার দিকে চোখ ফেরাতে সাহায্য করে । চোখ কতটা দেখলো দর্শকরা শুধু মনের চোখ দিয়েই পরিমাপ করতে থাকে । এই দীর্ঘ রেলযাত্রা যেনো তার দীর্ঘ অভিনয় জীবনের পথ চলা । তাতে ঘাত অভিঘাত বাঁক বদল সবই ধরা আছে । স্মৃতির সরণি বেয়ে এক থিয়েটারওয়ালার নায়ক হয়ে ওঠার উপাখ্যান দর্শকরা চিরকাল মনে রাখবে । মনে রাখবে বলেই উত্তমকুমার এক বিস্ময় ও মহানায়ক ।
ট্রেনের কামরায় চোখ রেখে শুভঙ্কর পালের চোখে স্বপ্নের নায়ক
যতদূর জানি মানুষটা শুধুই সিনেমা পাগল তা নয় । হতে পারেন গদ্যকার । দিনের শেষে গদ্যকারও তো মানুষ । আর অভিনয়টা যখন মানুষকে দিয়েই করানো হয় তখন তার তুল্যমূল্য বিচারও মানুষকেই করতে হয় বইকি ! শম্ভু মিত্রের বিভাব নাটকের কথা প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পরে গেলো , উপকরণ থাক বা না থাক ভঙ্গিমার মধ্য দিয়েই নাটকের ভাব ভাবনাকে ফুটিয়ে তোলার এক উত্তম প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় । আর দর্শক সেই অভিনয় তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে যায় । সাদা কালো সিনেমার যুগে কতবার নায়ক বা নায়িকাকে দেখেছি চাঁদের আলোয় একটি গাছের ডাল ধরেই প্রেম বিনিময় শেষ করলেও কেও বিরক্ত হলো না ।
সিনেমায় চরিত্রকে অনেকবেশি পারফেক্ট করে তোলার পেছনে কণ্ঠ ব্যবহার যেমন জরুরী তেমনি জরুরী চোখের ভূমিকাও । মুখ যতটা বলে চোখ তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বলে । উত্তমকুমারের ' নায়ক ' সিনেমা না দেখলে তা বলে বোঝানো বেশ কঠিন । সিনেমা দেখতে দেখতে কখন যে এক মেয়ের উনানে তরকারি পুড়তে থাকে সে ভুলেই যায় । যখন সেই পোড়া গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরে ততক্ষণে নায়ক ডুবতে থাকে । নায়কের অরিন্দম কী অদ্ভুতভাবেই শংকরদার চিতার আগুন নেভার আগেই বদলে নেয় তার জীবনদর্শন । একটা ব্রিলিয়ান্ট ফিউচার আর ঝলমলে দিনের জন্য শংকরদার ওই থিয়েটার তত্ত্বকে সে অনায়াসে উপেক্ষা করতে পারে । হয়তো ওই উপেক্ষার আড়ালে তার সাবকনসান্স মনে একটা দ্বন্দ্ব থেকেই যায় । আর তা যে রয়ে গিয়েছিলো তা পরিচালক ও লেখক ফ্রয়েডের স্বপ্ন তত্ত্ব মেনেই ফুটিয়ে তুলেছেন । চারদিকে টাকার পাহাড় আর খ্যাতির বিড়ম্বনার মধ্যে একদিন না একদিন নায়ককে হারিয়ে যেতেই হয় । সে যেনো এক অশনি সংকেত ধ্বনি শুনতে পায় । আঁচ করতে থাকে সেই আগুন তাঁকেও পুড়িয়ে মারছে । শংকরদাও সেখান থেকে তাকে টেনে তুলতে পারে না । হয়তো সে অরিন্দমের ওই মূর্খামি সে মেনে নিতে পারেনি ।
আসলে পরপর তিনটি সিনেমা ফ্লপ মানেই যে এতোকালের সাফল্যের শীর্ষে থাকা নায়কের সৌধমিনার তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে পারে অরিন্দম সেটা বোঝে । কিন্তু তার মনের সেই সংঘাত বা সংবেদন কাওকে বলে মনটা হালকা করবে সেই মানুষটির বড়ো অভাব । তার নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হিসেবে ঘুমের বড়ি কিম্বা মদ্যপান করে ভুলে থাকবার একটা অভিনয় তাকে নিজের সঙ্গে নিজেকেই করতে হয় । মুকুন্দবাবুর ব্যার্থ জীবনে সামান্য একটা কাজ দিতে না চাওয়ার মধ্যে হয়তো প্রথমদিনের অপমানটা ভুলতে না পারার কারণটাও প্রচ্ছন্নভাবে ছিলো । সব হারিয়ে আবার শূন্যে নেমে এসে এক সাধারণের মাধ্যে নিজেকে এনে দাঁড় করাবার সে কিছুতেই সে মেনে নিতে চায়না । হতাশার কালো মেঘ যখন তাকে ঘিরে ধরতে চায় তখনি নায়িক সদৃশ সেই মেয়েটি ইন্টারভিউ না ছেপে মনে রেখে দেবার কথা শোনায় । কোথাও যেনো আবারো একটা উত্তরণের সিঁড়ি নায়কের চোখে ধরা পরে । এই কাহিনির নায়িকাও নায়কের ক্ষণিক প্রেমের ঝিলিক সহজেই উপেক্ষা করে ভিড়ের মধ্যে এগিয়ে যেতে পারে । এদিকে অরিন্দমের রঙিন চশমা ঢাকা চোখ দর্শকদের চোখকে ফাঁকি দিয়েই নায়িকার দিকে চোখ ফেরাতে সাহায্য করে । চোখ কতটা দেখলো দর্শকরা শুধু মনের চোখ দিয়েই পরিমাপ করতে থাকে । এই দীর্ঘ রেলযাত্রা যেনো তার দীর্ঘ অভিনয় জীবনের পথ চলা । তাতে ঘাত অভিঘাত বাঁক বদল সবই ধরা আছে । স্মৃতির সরণি বেয়ে এক থিয়েটারওয়ালার নায়ক হয়ে ওঠার উপাখ্যান দর্শকরা চিরকাল মনে রাখবে । মনে রাখবে বলেই উত্তমকুমার এক বিস্ময় ও মহানায়ক ।
ছবিটা আমিও দেখেছি। ভালো লিখেছো।
ReplyDeleteছবিটা আমিও দেখেছি। ভালো লিখেছো।
ReplyDeleteছবিটা আমিও দেখেছি। ভালো লিখেছো।
ReplyDeleteভালো লাগলো দাদা। খুব ভালো লিখেছেন।লেখাটা পড়ে সিনেমাটার প্রেমে পড়ে গেলাম। আজই দেখে নেব।
ReplyDelete