Sunday, July 26, 2020

দীপ শেখর চক্রবর্তীর কবিতা 
যতটুকু নিজের কাছে থাকা

কতটুকু নিজের কাছে আছি?
কোথায় থমকাবো?
কোথায় রাখবো এ দু হাত?
কতদূর চলে যাবো আমি নিজের ভেতরে?
ধীরে ধীরে হেমন্তের ঘন দিন নেমে আসে,কোন অন্ধ বালকের বুকের ভেতর শঙ্খের মোহধ্বনি আরও আরও বড় করে তুলেছে জীবনের মানে
দিকে দিকে তালসারি,
শব্দের শেষতম পবিত্রতা লেগে থাকে
তার উত্তর দক্ষিণে হাত পেতে বসেছে আকাশ
জীবনের সামান্য রস তার চাওয়া 
এ দৃশ্য আমার হবে কি?লিখে রাখি 
এটুকু বাঁচাই এই সময়ের জন্য যথেষ্ট হয়েছে
অথচ যথেষ্ট শব্দের ডানদিকে পুরোনো ঘাসের মাঠ,বামদিকে ইস্কুল পালানো পথ শুধু ডাকে
চলে এসো সমস্ত ফেলে 
তবুও কোথায় যাবো আমি? কতদূর হেমন্তের পথ পার হয়ে গেলে দেখা যায়?
একটি ঘর,মাটির উঠোন
কাঁচপোকা টিপের মেয়েটি দু পা ভেঙে যে আলপনা দিয়েছে তা খড়ি মাটির সীমানা
আমার সীমানা চাই?যতদূর ভালোবাসা হেঁটে যেতে পারে কাঁটাফোটা পায়ে
ততদূর যেতে পারি?একা?
একটি পাতা বৃক্ষচ্যুত হয়ে যতদূর ভেসে যেতে পেরেছে হাওয়ায়
তারপর আমার জমি
কৃষকের হাত অতিক্রম করে গেছে সমস্ত চাওয়ার সীমানা
সে হাতের পাশে এক রাতে শব্দ এসে দাঁড়াতে পারে
অন্ধকারে মোমের আলোয় তার মুখ দেখি
পনেরো বছর পর মোমের আলোতে সে মুখ এসে দাঁড়িয়েছে আমার সম্মুখে
সে মুখে লেখা আছে কথা দুটি
বিছানা রয়েছে সেই অন্ধকারে পাতা
তুমি অযথা নিদ্রা হারালে।


এত শূন্য চারিদিকে

.................................

সব কথা এভাবে বলা যায়না।কথার ভেতর একটা পথ সহজভাবে চলা যায়না এভাবে।

তোমাকে যা বলি টা তোমারই কথা।তবুও তো ভুলি

একটা হওয়ার কথা বারবার লিখে রাখি

তোমাকে পাবো বলে বহুদূর বহন করে নিয়ে এসেছি ব্যথা

অরণ্যের পথের ভেতর দিয়ে যে একা একা 

অনন্তের সীমা হাতে গেছে

আমি তার গান জানি,তাই সবাই ছেড়েছে আমায়

বন্ধ করে নিয়েছি দুচোখ যখন তোমার দুচোখ দিয়ে দেখেছি

তার গান জানি আমি

যে খুলে খুলে নিয়ে প্রসাধন আমার

পায়ের তলায় জ্বলন্ত কয়লা রেখে যে শিখিয়েছিল জীবনের নৃত্য

শুন্যকে জড়িয়েছে যে বুকে সেই জানে

একদিন বাতাস ছাড়াই শাখা দোলে, বৃক্ষ জন্ম পাও তুমি

তবু এই শেষ নয়

সবে শুরু

পাখি পায়ে করে আবার নিয়ে যাবে তোমার বীজ অন্য জন্মে

তোমার একটি পাতা আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে

তার ডাক পায়

তার ডাক পেয়েছিলে বলে তুমি একা হলে,তোমার ভেতরে সৃষ্টি হলো বিশ্বব্রহ্মাণ্ড

আর জন্ম হলো এই মুহূর্তে এক ধূমকেতুর যে তোমাকে জানবে বলে ছুটে চলেছে অনন্ত আগুন মুখে নিয়ে

তাকে ফাঁকি দাও তুমি।নির্বাসন ডেকে আনো

তুমি যার কাছে ফেরো সেই তোমাকে চিহ্ন দিয়েছে

অথচ কোন চিহ্ন তে কি ধরে তোমার খেলার ইচ্ছে

অনন্ত মাঠ পড়ে আছে

এত শূন্য চারিদিকে,তবু কেন বুকের ভেতরে এই পূর্ণতা?

নত হয়েছ তুমি সামান্য ব্যথার কাছে?

তোমার এই নত হওয়া ধীরে ধীরে পাথরের মধ্যে একে গেলো রোদের পাতা, কারুকাজ

কোথায় যাবে তুমি নিজেকে দূরে রেখে?

সব কথা এভাবে বলা যায় নি

সব ভালোবাসার পথ এভাবে চলা যায় নি ধরে রেখে

তোমাকে যা বলি তা তোমারই কথা 

তুমি বিস্মিত হও,তোমার বিস্মৃতি দেখে মনে মনে ব্যথা পাই

সে ব্যথা

বাতাসের অপেক্ষা করেনা।একা একা বেজে চলেছে আজ সব পাতা,সব ডাল,এক অনন্তের গান

শুধু বেজে চলে

খেলার ডাক এসেছে অবিরাম

বারবার ফিরে ফিরে আসো,ঘর ছেড়ে নিয়ে যাবে তুমি

খেলার মধ্যে থেকে আমাদের পরিচয় উঠে আসে

পরাজয় মেনে নিই

তোমাকে পেয়েছি আমি,নিজেকে দূর থেকে দেখে

রচিত হয়েছে এভাবে

নিজেকে জানার পথ,আমি জানি এই খেলা সামান্যটুকু নয়। 

No comments:

Post a Comment