Wednesday, February 28, 2018

শুভ্রদীপ রায় 

কবিঃ আমার নিজস্ব হ্যালুসিনেশন

কবি চরিত্রটা একটা hallucinatory object. আমার নিজস্ব delirium থেকে সৃষ্ট Mr. Jekyl. তাকে কেউ দেখেনি আগে, কেউ চেনেনি কোনোদিন। তবু চতুর্দিকে তার উপস্থিতির সুবাস। আমার যাবতীয় anti-matter পুঞ্জীভূত হয়েই তার অবয়ব ধারন। যেই যেই মুহূর্তে আমি অন্ধের অভিনয় করি, ঠিক সেইক্ষনে সে চক্ষুস্মান হয়ে ওঠে। মাঝে মাঝে ভাবি, সে আমারই alter-ego -- ইষৎ crooked. খুব গুঢ় কৌশলে আমার উপস্থিতিটাকে দখল করতে চাইছে নিজের সর্বজনগ্রাহ্য appearance দিয়ে। ধীরে ধীরে জড়িয়ে যাচ্ছি তার বিছানো চ্যাটচ্যাটে জালে-- অষ্টপদ বিস্তার করে কবি দ্রুত এগিয়ে আসছে আমার অস্তিত্ব আত্মসাৎ করতে।

আমার ঘর সংসার,বন্ধু বান্ধবী, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-- সবার প্রতি তার অদম্য ঘৃণা। পরিচিত প্রতিজনকে বেছে বেছে সে বন্ধুত্বের কুহক হাতছানি পাঠায়। তারপর একএকটা possessed সত্তার মত তারা ওর অঙ্গুলিহেলনে চলতে শুরু করে। আমি আজকাল অনেকটা দূরত্ব বজায় রেখে চলি কবির থেকে। তবুও কোনো এক গোপন সূত্রে আমার সমস্ত খুঁটিনাটি ওর নখদর্পণে।

আমার প্রেমিকার বেজায় পছন্দ কবির অর্ধ-উন্মিলীত চাউনির মাদকতা। অর্ধস্ফুট শব্দের সাহায্যে প্রকাশ্য- অপ্রকাশ্য যাবতীয় কথা জাগলারীর প্রতি তার অদম্য আকর্ষণ।আমি বহুদূর থেকে টের পাই আমার প্রেমিকাকে চুমু খায় কবি,আমারই মত করে, আর তার নাম দেয় শিল্প। প্রেমিকার শরীরের ১০৮ টা রহস্যস্থলে সে অধিকার জমায়। অক্লেশে হাত বাড়িয়ে তুলে নেয় তার যৌবনের লুক্কায়িত জলপদ্ম টিকে।আমি সবই দেখি, কিন্তু কবির মায়াজালে আটকা পড়ে থাকি,তারই শরীরের ভেতর। তার সৃষ্ট কৃষ্ণগহ্বরে এক এক করে টেনে নিতে থাকে আমার পরিচয়,আহ্লাদ,উৎফুল্লতা। শুধু অপবাদ,কুৎসা, কেচ্ছা-- এগুলোই রেখে যায় আমার সাভিংস অ্যাকাউন্টে।

যে মুহূর্তে আমাদের মাঝে বিবাদের ফুলকি উঠতে থাকে সেই মুহূর্তে কবি আমাকে একা রেখে পালিয়ে যায় নিশ্চিত hibernation এ। আর আমি দাঁত নখ বের করে চরম আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়ি প্রেমিকার ওপর-- তার নরম মাংসে আমূল গেঁথে দিই আমার বিতৃষ্ণার ছুরিটাকে। দমকে দমকে রক্ত বেড়িয়ে আসে সম্পর্ক নামের সেই ক্ষতস্থান থেকে। কবি দূর থেকে সবই দ্যাখে অথচ আমার অমানুষিক ক্রোধজালে আটকে যায় তার সৎ প্রচেষ্টা। অবশ্য খানিকক্ষন বাদেই কবি ফিরে আসে নিজের স্থানে। যাবতীয় যুক্তিসহ বোঝাতে থাকে ভাঙা স্থানে weilding এর উপায়,অথচ একটা অপচ্ছায়া আমাদের মাঝে ঘনান্ধকার দেওয়াল তুলে দেয়। হঠাৎ T.V তে গেয়ে ওঠেন আনুশাহ--- " সে আর লালন একসাথে রয়,মাঝে লক্ষ যোজন ফাঁক রে..."

তারপর আমি cold bloodedly খুন করি কবিকে। প্রতিবারের মত; আর আমি নতুন করে আবার লিখে ফেলি-- " কবি চরিত্রটা একটা hallucinatory object..."

নির্বাণ


ঝরে পড়ছে বোধ ও অনুভব
এক একটা উচ্চারন প্রজাপতি হয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছে
সমস্ত অবিদ্যা কে, আর জন্ম নিচ্ছে লাইটহাউস।
কিছু মানসিক বিকলাঙ্গদের জালে ধরা পড়ছে অহং
কারন প্রজাপতিরাও ভয় পায় সেইসব সূর্যশিশিরদের
যারা বোঝেনা, যে অস্মিতা প্রজ্ঞার তা তো আলোকবর্তী হবেই।

একটা পিন ও পতনের সুযোগ পাচ্ছেনা
প্রত্যেকে আবেশিত হয়ে আছে চৌম্বকীয় সম্মোহনেঃ
কেউ খুঁটে নিচ্ছে অসামান্য বিশ্লেষন
কেউ কুঁড়িয়ে নিচ্ছে অসুস্থতার অশ্রুতপূর্ব সংজ্ঞা!
কোথাও দর্শন এসে হাত বুলিয়ে যায় সাহিত্যের ব্যাখ্যাতীত পিঠে
কোথাও বা কবিতা শান্ত করছে দার্শনিক প্রক্ষোভ।

এভাবেই আমার পাঁকদহে বসত গড়লেন বুদ্ধ
বন্ধুর মন্দ্র মন্ত্রোচ্চারনে--
    " দত্তা।  দয়দ্ধম। দময়িতা। "

No comments:

Post a Comment