Wednesday, February 28, 2018

                 
গল্প :

 হাঁটু সংক্রান্ত অব্যক্ত ছায়া 

আফজল আলি 

         


যে স্বপ্নের কথা বলব ভেবেছিলাম সে সব আজ থাক।আজ মাখনের কথা বলি আর খুনিদের চিহ্নিত করার কিছু কারুকাজ । তোমরা জানলে খুশি হবে এরকম শনিবারেই আমি লিকার চা খাই  ও গল্পের স্থানান্তর করতে করতে অজানা তথ্যের উপর নির্ভর করি বেশি । এমন দিনে সত্যিই মেঘলা করে কিনা তা জানি না । উপর থেকে দেখলে মনে হবে মানুষগুলো এখনও ঘুমাইনি এবং তাদের পরিকল্পনাগুলো অনেকটাই সফল। ঠিক কী কী কারণে আজ অনেকেই বাড়ির বাইরে আসেনি তাও বোঝা যাচ্ছে না । কাল কিছুটা প্যাচপেচে আবহাওয়া ছিল । গুমোট আর প্রচন্ড গরমে অস্থির গাড়ির টায়ারগুলো।


কদিন ধরেই দেখছি আমি গল্পের ফাঁকগুলো নিয়ে বেশ চিন্তিত এবং শেষমেশ আমাকে মেনে নিতে ই হল আমার তীব্র কল্পনাশক্তির চেয়ে ওই ময়লাফেলার দৃশ্য কম সুন্দর নয় । আসুন এইবার একটু ডানদিকে ঢুকি। কাল যে দু জন এখানে রোমান্স করছিল তাদের পুলিশের লোক ধরে নিয়ে গেছে ।

বৈধ কাগজপত্র দেখা জন্য । কিন্তু কাগজপত্র কী দেখাবে । আসলে কিছু মাল্লু চায় । চলুন বিনুনিখোলা মেয়েটিকে দেখে আসি ।তাহলে সঠিক বুঝতে পারবেন এই রাস্তা দিয়ে আর কী কী যানবাহন চলতে পারে । এতক্ষণ ভাবছিলাম সেই সিনেমার দৃশ্যে কোথাও বিজ্ঞাপন বিরতি ছিল না ।


     প্রথমত ছবিটা ছিল কয়েকটি রগরগে যৌনছাপের  ,  দ্বিতীয়ত প্রেমিকির চুল সোনালি রঙের এবং তৃতীয়ত শেষ দৃশ্যে তারা ফাটলগুলো বোজাতে চাইছিল । এর বাইরে আর যে সব ঠিক  ,  বেঠিকভাবে সাজানো ছিল সেগুলো নিতান্তই দুর্বল । অর্থাত্ আজ আমি গল্পের কিছু ফাঁক তোমাদের বলব।


পশ্চিম দিকেই মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল ছাগলগুলো । ওরা জানতো ওদের পরমায়ু নিঃশব্দে জাবর কাটছে । ঠিক সেই সময় মেয়েটি হাঁফাতে হাঁফাতে এলো। চোখ দুটো ঈষৎ লাল । চুল উল্টোদিকে ছায়ায় ঘন হয়ে গেছে । কিছু একটা ভাবনা ভিতরে প্রথিত হতেই দেখল ছেলেটি চলে এসেছে কাছে । মাংসের দোকান,   তেলেভাজার স্টল ও মোবাইল কর্নার পাশাপাশি । শব্দ বিন্যাসের আগেই ও বলে উঠল

      -  ঘরে মা বোন নাই ?  শয়তান ছোটলোক

       -  না নাই

        -  সেই জন্য তো দরদ বুঝিস না । আর থাকলেও বুঝতিস না । লোফার জানোয়ার

ছেলেটি মেয়েটিকে বোধহয় তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বন্দুক ঠেকিয়ে । কিন্তু এত লোকের মাঝে  । তাজ্জব  !!


         ঠিক এ সময় একটি পুলিশের ভ্যান এসে দাঁড়াল । অসহায় মেয়েটিকে আর কেউ বাঁচাতে চায় নিয়ে তবু এ যাত্রায় রক্ষা ।


উদ্যোগ সামনে চলে আসছে । ঠিক এ সময় আমার চোখ দুটো লাল। ধক ধক শব্দে হৃদয় মোটরবাইকের সমান কিনা । মস্তিষ্ক তার ক্ষরণ সম্পর্কে সন্দিহান ছিল   জাদুবাস্তবতার উপরে ডানদিক । আর একটু সরে এসে দরজাটা খুললাম। গুমোট আবহাওয়ায় এত মনকেমন কী করে আসছে জানি না,   তবে প্রকৃতপক্ষে আমি লুকিয়ে রাখতে চাইছি কিছু । মেয়েটি এসে পৌঁছাল । আত্মীয় পরিজন নাই ,  বন্ধু বান্ধব নাই । তবু একাকিত্ব থেকে আমি মাথাকে বাঁচাতে চাইছি। দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ করা হল।

  -  আচ্ছা সে দিনের পর আজ কিছু হয়নি

  - কোন দিনের পর

  - কেন সেই যে মস্তান মার্কা ছেলেটি তাড়া করতে করতে তোমাকে ধরে ফেলেছিল আর পাশাপাশি মানুষগুলো সব হ্যাঁ করে দেখছিল,   প্রতিরোধ করার পরিবর্তে ।

 -  হা হা হা  । আমি তো ভুলেই গেছি। হ্যাঁ বেশ কয়েকবার আমার পিছু নিয়েছিল । কিন্তু একদিন রাগে ওকে আমি খুন করে দিয়েছি। ওহ্ সে কী অবস্থা । কিন্তু খুনের এখনো কোনো কিনারা হয়নি এতেই রেহাই ।

   -  সে কী । তাজ্জব ব্যাপার । পুলিশ এ রিপোর্ট হয়নি  ?

  -  হয়েছে । সব কিছু ই । তবে এখনও ধোঁয়াশা আছে । আর আমি তো স্বেচ্ছায় শুধু শুধু খুন করিনি । সেদিন ছুরিটা ভাগ্যিস আমার কাছে ছিল তাই । আচ্ছা আপনি কি এখন এই ঘরেই থাকবেন ?

  -  আরে আমার ঘরে তো আমিই থাকব

  - হ্যাঁ তা ঠিক । তবে আমি একটা গল্পের প্লট তৈরি করতে চাইছি যার জন্য আমার কিছুটা নিরিবিলি দরকার । আমার আগের বিষয়বস্তু থেকে আলাদা । কিছুটা মেঘ ধরে ধরে ছুরি দিয়ে কাটার মতো ।

 -  বুঝলাম না

 -  বুঝতে হবে না  । আমি এখন আসছি ok

সীমানা বরাবর ভেদরেখাগুলি এইভাবে চলবে। বিন্দুমাত্র সংশয় নেই । ঠিক একই কারণে লোকগুলোকে জড়ো হতে দেখলাম এবং উচ্চস্বরে কথা তারা বলছিল একে অপরের দিকে । যারা একটি একটি তান্ডবের পিছনে ধাওয়া করছিল তারাও হাজির  ;  কমসেকম  বিতর্ক কিছু ঘটবে।বিপদ বুঝে রেটিনা  ঠিক থাকতে পারছে না । আমি পাশবালিশটিকে ধরলাম । হঠাৎ ই মেয়েটি আবার ঢুকল হাঁফাতে হাঁফাতে । দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বলল

-  চুপ করুন  কোনো আওয়াজ করবেন না । ওরা আমায় ধাওয়া করেছে

   -   কারা ?

-    পুলিশ

 -  কী করে ঢের পেল

-  জানি না

শুনুন আমি খাটের নীচে শুয়ে পড়ছি  । বাকিটা আপনি সামলে দেবেন।

 -  খাটের নীচে নিরাপদ নয় । এই বিছানায় তোষকের কিছুটা তুলে শুয়ে পড়ো। আমি পাশে স্বাভাবিক ভাবে শুয়ে থাকি।

 -  আচ্ছা তাই


কাগজের পৃষ্ঠা ভরানোর জন্য আমি লিখছিলাম অন্য একটি গল্পের উপসংহার ।

বন্ধুকবাজদের দখলে  চলে যাচ্ছিল এলাকাটা । বাসের হর্ন ও যেন অতটা নেতিবাচক নয় । বেচারা পলিটিক্যাল নেতৃত্ব   ও  পুলিশ  -  দু পক্ষই । কৃষ্ণপক্ষের শুরুর অন্ধকার । ব্রিজ মেরামত করতে যে লোকগুলো এসেছিল তারা খুব পজিটিভ । কোনও ইসু যাতে না হয় -   চারপাশটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে স্বপক্ষের পেশাদারিত্বে শান দিচ্ছিল। এমনিতেই এলাকাটা বেশ জনবহুল ।

     পরশু একটি মিছিলে কত রকম স্লোগান উঠেছে । এখনও দেখছি কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও বলছে।


বেপরোয়াভাবে মোটরবাইকটি । আরোহী তিনটি তরতাজা ছেলে । অনেকটা নিজেদের দোষে তারা গেল । আমি বিচ্ছিন্ন হতে চাইছি বুঝে কলম গুটিয়ে রাখলাম ।

দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ

 - খুলুন

 - হ্যাঁ বলুন

 -  এখানে একজন মেয়ে আসেনি  ?  খুব বেশি বয়স নয় । জিন্স পরা

 - না না এখানে কেন আসবে । এটা তো আমার শোয়ার ঘর । এসে থাকলে আমি তো জানব ই । না হলে আপনারা একটু দেখুন ।

সন্দেহের দৃষ্টি যেন কীরকম ফিকে হয়ে গেল ।

 -  আচ্ছা  ok


ওহ্  বুকেও থার্ড ডিগ্রি হয় জানলাম

- এই যে এইবার বেরিয়ে এসো

 - খুব বাঁচালেন । আর একটু থাকি । তারপর বেরিয়ে যাব । এক কাপ চা খাওয়াবেন ?  ঠিক আছে আপনি বসুন আমিই তৈরি করে খাওয়াচ্ছি । সুযোগ দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।


সেই নিরুপায়ের দৈর্ঘ বরাবর যে মানুষগুলো জড়ো হয়েছিল তারা ফাঁকা হতে লাগলো একে একে । অনেক দূরে মাইকের আওয়াজ । আমি কয়েকটি সাবানের কথা ভাবছিলাম । পরশু ফেসবুক এ একটি status দেওয়া হয়েছিল একটি সদ্যজাত শিশুর ছবি সমেত  -   আকুল আকুতি সেই ময়লাফেলার ড্রামে ফেলে রেখে যাওয়া শিশুটির মায়ের স্মৃতি । দয়া করে যেন নিয়ে যান শুধু শিশুটির মুখ চেয়ে ,  সেই নিষ্পাপ শিশুটি যেন মাতৃত্বের স্বাদ না হারায় । প্রয়োজনে সমস্ত খরচ দেওয়া হবে মা কে অথবা আত্মীয়দের ।


আমার সাবানের ভাবনার সাথে এই ভাবনাটি এই ভাবনাটি মিলল না কারণ একটি খুব তুচ্ছ এবং অন্যটি মহৎ। শিশুটি আপাতত থানায় রাখা আছে । পরে হোমে পাঠানো হবে ।

 -  চা নিন

  - ফাইন। আচ্ছা এত চাপের মধ্যে কীভাবে চা করলে

 -  আরে চাপ তো আপনি সামলালেন । আমি তো শুয়ে ছিলাম ভয়ে ভয়ে ।

 -  খুব অদ্ভুত লাগছে

 -  তাই ?

 -   হ্যাঁ । কিন্তু আজ হোক কাল ওরা তো ধরবেই। তারচেয়ে বরং নিজেই ধরা দাও । বলো তোমাকে রেপ বা মার্ডার করতে চেয়ে ছিল ওরা। আত্মরক্ষার তাগিদে হয়ে গেছে । অনিচ্ছাকৃত  ।

 -  না  আপনি জানেন না । আমি খুন ই করতে চেয়েছিলাম । আচ্ছা আমি তাহলে আসি । খুব  উপকার করলেন ।
হাওয়াতে ছায়া মিলিয়ে গেল না । কিন্তু মেয়েটি মিলিয়ে গেল। এর পরের অংশটা শুরু হয়েছিল ঠিক সাতদিন পরে এবং আমি নিজেও খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ে ছিলাম আমার ব্যক্তিগত কিছু কাজে তাই শেষমেশ ঠিক  কী হয়েছিল বলা যাচ্ছে না । গত দশ পনেরো দিন পুলিশের গতিবিধি আমি নজর রাখিনি । আমার রাখার কথা নয় । কিন্তু কাগজে একটি খবর দেখে চমকে উঠলাম  -   যুবক খুনে গ্রেফতার যুবতী । তথ্য প্রমাণের অভাবে পরে জামিনে মুক্তি ।

     বিস্মৃত হলাম । কীভাবে ই বা খুন করল যার কোনও প্রমাণ নেই । পেশাদার খুনি হলেও ধরা পড়ে । তাহলে কি ও খুন করেনি । বা অন্য কিছু


জানালার পাল্লাগুলো খোলা আছে । রাস্তা দিয়ে যতদূর দেখা যায়  আজ একটু ফাঁকা । আখের রস বিক্রেতা,   পল্টুর পানের দোকান  ,  ঝিলমদির এগরোল স্যস মাখানো সব ই তো ঠিক আছে । তাই গল্পটা একটু বাঁ দিকে সরতে চাইছে । ওদিকে সন্ধে নামলে টর্চের আলো ফেলতে ফেলতে এগিয়ে আসেন বিশ্বরামবাবু। বিশ্বরামবাবুর চোখ নিশিতে পায় । তখন কোমর পর্যন্ত ধুয়ে নিয়ে সবিতা বৌদি । টিভি তে যে খবরগুলো কভারেজ পায় না তা হল খুব শান্তিতে থাকতে চাওয়া মানুষজনের দৈনিক লিপি ,  মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ,   হেটেরোজিনিয়াস টেনশন । ঘড়িতে এগারোটা দশ । আমি ঘুমাতে যাব কিনা । এখন তিন ধরনের  option থাকতে পারে ।

1 : ঘুম না হতে পারে

 2 : গাঢ় ঘুমে উল্টোপাল্টা স্বপ্ন দেখতে পারি।

 3 : মেয়েটি ফিরে আসতে পারে আবার


মনের বিকল্পে যে মুখ এগিয়ে আসছে তা ওই মেয়েটির নয় ,  পুলিশগুলোর নয় ,  জবাই হওয়া ছাগলের নয় । তা হল আমার হাঁটু সংক্রান্ত অব্যক্ত ছায়া ।


সুধী পাঠকগণ,   এই sms টি সংরক্ষণযোগ্য হলে রেখে দেবেন -

যা এই মাত্র এল আমার মোবাইল এ

-   আজ তিনদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছি। প্রচন্ড ঝড়ে সব তছনছ । নিজস্ব আলাপচারিতায় ঢেউগুলো পাথর । কাছে টাকাকড়ি বেশি নেই । যদি আবার বনধ হয় তাহলে দুর্ভোগের শেষ থাকবে না । ফিরে যাওয়া ও দূরস্থ -


অচেনা নাম্বার । যা বাব্বা !  এভাবে whatsapp  এ কে  sms পাঠালো। কিছুক্ষণ ভেবে সাব্যস্ত করলাম  এ  রং নাম্বারে ঢুকে গেছে । হয় এরকম । ok no problem.  চলো


আবার sms tone   আর একটি  sms ঢুকল -   সেই নাম্বার !

    -   খুনের কিনারা কিছু পেলেন  ?  ও সরি  ,  আপনি তো ভুলেই গেছেন । পুলিশ কিছু খুঁজে পায়নি । আমি আপাতত মুক্ত ।

-   -      -                -          -           -       -


একটি স্বপ্নের মালিকানা আমি কাকে দিয়ে যাব  ভাবতে ভাবতে দেখছি আমার ঘরে কোনো ছায়া পড়ছে না । স্বপ্নের পিছন দিকটা অন্ধকার । আমি বাঁ দিকে ঢুকলাম


No comments:

Post a Comment