Thursday, March 29, 2018

ফিচার বা একটি লেখা 
হাত বাড়াই
সত্যম ভট্টাচার্য

শীতকালের পেছনদিকটাকে দেখি।যখন সকালের রোদে ঘন্টার পর ঘন্টা ডানা মেলে দিয়ে বসে আছে পানকৌড়ি,তাকে দেখি।দেখি কিরকম সবুজ কচুরিপানার সাথে বন্ধুত্ব তার।বহুক্ষণ একইভাবে বসে সেও কি এসবই ভাবে?ভাবে একটা শহর।তার ফাঁকা ফাঁকা পথঘাট।গাড়ির পেছনে দৌড়চ্ছে ঝরে পড়া পাতারা।কার কথা ভেবে যে ঝরে পড়া তাদের?ফুটপাথে বসে পড়লে কোলের ওপরেই এসে পড়ে।যেন প্রেমিকার ফেলে যাওয়া ওড়না।তার গন্ধ।তার নরম।তার থেকে যাওয়া।মনে হয় কোন প্রেমিকাই যেন রয়ে গেল তার খানিকটুকু নিয়ে।প্রেমিকা চলে গেছে বহুদিন।প্রেমও চলে গেছে।আমিই দায়ী।শুধু ঘুরে ঘুরে মরে স্মৃতি মনের হাজারদুয়ারিতে।আর আমি হাত বাড়াই।হাওয়া হয়।দমকা হাওয়া।কাউ কি আমাকে টেনে তুলবে এখান থেকে?খয়েরবাড়ি বনে আমরা বসতাম একটা বিশাল গাছের শিকড়ে মাঝখানে।গ্রাম পেরিয়ে ছোট নদী পেরিয়ে সেখানে বসতাম।এখোনো স্টিলের গ্লাসে জল খেতে গিয়ে মাঝেমধ্যে সেসব কথা মনে পড়ে।অনেকদিন সে পথে যাই নি।অনেকদিন হাঁটতে হাঁটতে হাঁপিয়ে গিয়ে গ্রামের কোন ঘর থেকে জল চেয়ে খাই নি।মনে পড়ে জল খেতে দাঁড়ালে গ্রামের বাচ্চাগুলো ঘিরে ধরতো আমাদের।এখন ভাবি ওদের জন্য চকোলেট নিয়ে গেলে বেশ হোতো।ওয়াচটাওয়ারে বসে আমার প্রেমিকা আমাকে শিখিয়েছিলো কিভাবে আসল চুমু খেতে হয়।আর আমি দেখছিলাম দূরে নীল আকাশে একটা জেটপ্লেন তার সাদা দাগ রেখে চলে যাচ্ছে অনন্তের দিকে।সেদিন বুঝিনি সে সাদা দাগ আসলে নীল আকাশে নয়।থেকে গেছে আমারই বুকে।এ বসন্তকালে একা একা বসে এসব কথা ভাবি।আর হলুদ পাতা ঝরে ঝরে পড়ে।বাতাসে এসময় একটা কেমন জানি মন কেমন করা গন্ধ পাওয়া যায়।প্রেমিকার বুকে মুখ রেখে কি একদিন এই গন্ধই পেয়েছিলাম?দোল চলে গেছে কিছুদিন হোল।বড় চাঁদও চলে গেছে কোথায়।শুধু মনে পড়ে ফাঁকা একটা রাস্তায় হাঁটছি।হাঁটছি ঠিক নয়।দৌড়চ্ছি।তুমুল বাতাসে ধুলো উড়ছে চারদিকে।আকাশ ফেটে পড়ছে মাঝেমধ্যে আলোতে আর গর্জনে।দূরে হাইওয়েতে সার সার ট্রাকের আলো।আমি পালাচ্ছি।পালাচ্ছি নিজের থেকে।নিজের মফস্বল থেকে।নিজের ভালোলাগার জায়গা থেকে।এমন অবস্থা যে কাউকে বলতে পারছিনা ভালো থেকো।বলতে পারছিনা দেখা হবে আবার...

1 comment:

  1. উফফ ! অপূর্ব লাগলো। পিওর অনুভূতি রয়েছে লেখায় সত্যম দা।

    ReplyDelete