Wednesday, March 28, 2018

অনুবাদ কবিতা : মানিক সাহা 

বিজয় নাম্বিয়ানের কবিতা
(First Infinites)
অনুবাদঃ মানিক সাহা

"Hell, or a state very much llike it, does feature in Nambisan's poetic underworld, which is deep, intricate and enticing. But its attendant horrors are never indulged in for their own sake and are kept well in check by a certain wit, aa muscularity of mind,  which remind mme of a similar grace in poets as far distant in time from each oother as Robert Graves ans John Donne.
- From the Preface  by Adil Jussawall of 'First Infinities'

 বিজয়  নাম্বিয়ান  (1963   -   10 August 2017  ) ছিলেন একজন সাংবাদিক ও লেখক।  তিনি ভারতের অনেক অঞ্চলে কাজ করেছেন এবং পত্রিকায় লিখেছেন। কবি, গদ্যকার  ও কলামিস্ট হিসেবে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। কবিতার পাশাপাশি তাঁর ননফিকশনগুলিও ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয় ও আলোচিত। 'Bihar is in the Eye of the Beholder' বিহারের বাস্তব ছবি তুলে ধরে। বইটি তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে স্থাপন করে।
বিজয় নাম্বিয়ান, জিত থেয়িল এবং ডম মোরেসের (সম্পাদক) সাথে 'জেমিনি'র সহ-লেখক ছিলেন। 'জেমিনি' ছিল থেয়িল এর সঙ্গে করা তাঁর প্রথম কবিতা বই। নাম্বিয়ান পুন্ঠনম ও মেলপথুর নারায়ণ ভট্টতীরীর ভক্তিমূলক কবিতাও অনুবাদ করেছেন।
তাঁর বিখ্যাত বই 'ল্যাংগুয়েজ এ এথিক' এ, নাম্বিয়ান ভাষাগতভাবে নৈতিক ব্যবহারের জন্য সাহিত্যের লেখকদের এবং পাঠকদের উভয়ের কাছে আন্তরিকভাবে আবেদন করেছেন।

নাম্বিয়ান তাঁর প্রথম কবিতা 'মাদ্রাজ সেন্ট্রাল'র জন্য  1988 সালে সর্বকালের সর্বভারতীয় কাব্য চ্যাম্পিয়ন হন। এই কবিতাটি সমালোচকদের কাছে প্রশংসা লাভ করে এবং পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বিজয় নাম্বিয়ান মাত্র 54 বছর বয়সে মারা যান।

অনুদিত কবিতাগুলি ২০১৫ সালে প্রকাশিত 'First Infinities' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া। এই বইটিই কবির শেষ প্রকাশিত বই। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বইটি সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কবির বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান জানিয়ে এই অনুবাদগুলি তাঁকেই সমর্পণ করলাম।


মৃতপ্রায় শহর থেকে ভেসে আসা শব্দ
(সাগরির জন্য)

তৃষ্ণার্ত মানুষের জল চাওয়ার মতো
মৃতপ্রায় শহর থেকে শব্দ ভেসে আসে
আর হত্যালীলার বহু দূরে থাকা
সাদাবাড়ির দেয়াল বেয়ে উঠতে থাকে বেগলভেলিয়া।

উঁচু আলোকিত জানলার পাশে একজন বসে থাকে যেখানে
সাদা ঘুঘুপাখিগুলি তাদের অস্থির পালক আরো এলোমেলো করে নেয়।
আর মনোরম মার্চের বাতাসে বেগোনভেলিয়ায় ভ্রমরের শব্দের মতো
সে পরিস্কার শুনতে পায় মৃতপ্রায় শহর থেকে ভেসে আসা শব্দ।

গত গ্রীষ্মের এই অভিশপ্ত শহরটির কথা
জানলার পাশে থাকা লোকটি ভাবতে থাকে। সে দেখে
আকাশ জুড়ে কৃষ্ণচূড়ার লেলিহান শিখা ছড়িয়ে রয়েছে।
আর সে ভালোভাবেই জানে, যে শহরের মৃত্যু হবে তার কথা ভাবা
নিতান্তই অনর্থক।







ডায়াজেনেস
(ডায়োজেনস, ডায়োজেনস দ্য সনিক নামেও পরিচিত,  ছিলেন একজন গ্রিক দার্শনিক এবং সাইনিক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা।)

পাহাড়াদার তার আলো জ্বালিয়ে নিয়েছে।
সুরক্ষিত বাড়িগুলির বাইরে বিস্তৃত ও পরিপূর্ণ রাত।

তার লাঠির ঠক ঠক শব্দ শোনা যায়। মৃদু আঘাতের শব্দ।
অনেক পায়ে চলার পথকে সে সোজা করে চলেছে।

দিনের আলোয় তারা নিজেকে ভুলে থাকে। অন্ধকারে
তারা নিরব হতে চায়, পরাস্ত করতে চায় নিজেকে

প্রকৃত জীবন বহু দূরের এই উপলব্ধি দিয়ে।
এই প্রচেষ্টায় তারা পরিণত হয়

গুপ্তচর এবং অপরিচিত ব্যক্তিতে, ইচ্ছে না করেও প্রতারিত করে
মনকে যেন কোন কারণে সে কোথাও যাচ্ছে।

পাহাড়াদার তাকে অনুসরণ করে। খোলা রাতে
যে অভিসন্ধিগুলি খোলা পড়ে আছে তাদের ঢেকে দিয়ে
সে তার নিরপেক্ষ লাঠির ছায়ায় তাদের আড়াল করে রাখে।




এলিজাবেথ ওমানচেরি

এলিজাবেথ ওমানচেরি
বিখ্যাত কবি
রুটি কেনার জন্য
এক দোকানে গেলেন।
দোকানদার বলল, 'আচ্ছা,
আপনি এলিজাবেথ ওমানচেরি না?
বিখ্যাত কবি।"
তাই এলিজাবেথ ওমানচেরি বাড়ি ফিরে গেলেন।

এলিজাবেথ ওমানচেরি
এক সন্ধ্যায় কবিতা লিখবেন বলে
তাঁর লেখার টেবিলে বসলেন।
কবিতা জিজ্ঞেস করলো, 'আচ্ছা,
আপনি এলিজাবেথ ওমানচেরি না?
বিখ্যাত কবি।"
এলিজাবেথ ওমানচেরি
বলল, 'হ্যাঁ,'
তাই কবিতা বাড়ি ফিরে গেল।



শূন্য দেবালয়

ভগবান চলে গেছেন। তাঁর গর্ভগৃহ শূন্য হয়ে আছে।
রোদের গোপনে থাকা ছায়ায়
দলাপাকানো বাদুরগুলি ছাদ থেকে ঝুলে থাকে।
নীচে, বিছেগুলি ছোটাছুটি করে
এবং যদি কোন অশুভ কিছু হয় এই ভয়ে
ধর্মপ্রাণা মানুষেরা আর এখানে আসেনা।

মেঝের উপর পরে থাকা ফুলের ধ্বংসাবশেষে
তাঁর পায়ের ছাপ লেগে আছে।
সেগুলি দরজা দিয়ে চলে গেছে
মরীচিকাময় তপ্ত বালির দিকে।
অথচ তাঁর কন্ঠস্বর শোনা যেত। তাঁর সৌরভ একসময়
এই বদ্ধ বাতাসকে সুরভিত করে তুলতো।

তাঁর কন্ঠস্বর শোনা যেতঃ সূর্যের শাপিত এই পাহাড় ছেড়ে
প্রাচীন বাসিন্দাদের তিনি চলে যেতে বলতেন।
পুরোন বাসা ছেড়ে অবশেষে তারা  চলে গেল।
তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী তারা চলে গিয়েছিল।
যে এই পাথরগুলিকে স্তুপ করেছিল সে-ই কেবল জানে
ভগবান কখন আসেন এবং শেষমেশ কোথায় থাকেন।




অরণ্যে ভীম

ষাঁড়ের মাংস আর পাখির মাংস
আর নীলগাইয়ের মাংস
আমি খেয়েছি।

খরগোশের রক্ত, আর ভেড়ার রক্ত
আর ময়ূরের রক্ত
আমি পান করেছি।

আমাকে বলো, সেই সাপ কোথায়
যে আমাকে নষ্ট করে দেবে, সেই বাঘ কোথায়
যে আমাকে ছিঁড়ে খাবে, আমার শরীরে
সব জানোয়ার মিশে আছে, আমি তাদের জাতভাই।




No comments:

Post a Comment