Sunday, March 25, 2018

প্রতিবিম্বিত দৃশ্যগুলো
তুহিন দাস

০১
দুপুরবেলা ভ্যান গগের ব্যান্ডেজ বাঁধা কানের কথা মনে পড়ে।
তখন আমি আমার ছায়াটির দিকে তাকাই যে হতচ্ছাড়া কখনো
আমাকে ত্যাগ করে না--বাড়ি ফেরার পথে প্রায় কুকুরটিকে দেখি,
তার একটি চোখ বেড়ালের অন্যটি বাঘের, অপ্রস্তুত বোধ করি না।

০২.
আমার পকেটে কবিতালেখা ছোট্ট নোটবুকটি সবসময় থাকে,
মেয়েটি পথে কোন পালক দেখলেই কুড়িয়ে নেয়, আমি তার
প্রোট্রেট আঁকার চেষ্টা করি--কবিতার ফাঁকে ফাঁকে--একদিন আমি
তার সমস্ত পদচ্ছাপগুলো আঁকবো, সেদিন শূন্যতা বিমূঢ় হবে।

০৩.
রাস্তায় হেঁটে যেতে পরিচিত কেউ আমাকে আর দেখে না,
কাফকার কলমের নিচে লিখিত এক অবাস্তব পৃথিবীতে বাস করি,
পথে পড়ে থাকা কাঁচের টুকরোয় প্রতিবিম্বিত দৃশ্যের জীবন আমার—
দেয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডার উল্টে যাচ্ছে।

০৪.
আমার শরীর মূলত এক অতিথি, যে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে এসেছে,
সরাইখানার জানালায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি কামনা করি যেদিন তুমি ছাতা নিয়ে
বের হও না, আমি অন্য শহরে এক জুতো কারখানায় কাজ করি,
কিছুদিন পরে দেখি বাতিল কবিতার কাগজগুলো জুতোর জিহ্বা হয়ে গেছে।

০৫.
সন্ধ্যায় রাস্তায় হাঁটতে বের হলে ঝরাপাতা মুখের সামনে উড়ে বেড়ায়
স্বপ্নদৃশ্যের মতো, মনে পড়ে জীবনানন্দ বহুদিন বরিশালের আকাশের নিচে
এভাবে হেঁটে বেরিয়েছেন, তাকে দেখে সমস্ত পরিচিত মুখ চকিতে
মিলিয়ে গিয়েছে, যাপনের মধ্য থেকে প্রিয় বাক্যটি খোঁজার অভ্যাস আমার পুরনো।

No comments:

Post a Comment