Wednesday, March 28, 2018


                             ফেরা
                   মৌসুমী মণ্ডল দেবনাথ

জম্পুই হিলের এই শীতলতম শিখরটি ভীষণ রকমের অলীক আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। এখান থেকে অনেক নীচে পিচ্ছিল খাদে পাইন গাছের জঙ্গলে, মায়াবী ফার্ণের ঘন সবুজে কৃসেন্থামাম্ কুসুম মেঘেরা সংসার পেতে রেখেছে। ওয়াচ্ টাওয়ারে উঠে নীচে তাকালেই মনে হয়, দিই একটা সাঁতারু জাম্প। ছুঁয়ে আসি ওদের সবাইকে। দু 'হাত ভরে নির্জন মেঘ মাখি সব গহীন গোলাপী ক্ষতস্হানে। গলায়, মাথায়, বাহুতে পরি গোলাপী সাদা রাংপু অর্কিডের গহনা। দু একখানা চেরিফুল স্টোলের বৃন্তে।  মাথার একঘেয়ে বাদামি ক্লাচটা খুলে ট্রগোন পাখির লালচে পালক গুঁজি ঋষভী খোঁপায়। কপালের টিপে সুন্দরী জেজাবেন প্রজাপতির ডানা থেকে চুরি করা রঙ। সন্ধ্যে হলেই আকাশের গা চুঁইয়ে ঝিমঝিম্ কুয়াশা নামতে থাকে পাহাড়ের শরীরে, মনের কোটরে। রূপোর চাঁদও আধফালি হয়ে জ্যাকসন্ পায়ে হেঁটে যায় গিরিখাতের দিকে। খাদের গভীর থেকে কপু ফুলের লতা জড়ানো বৃক্ষরা তাকায় আমার দিকে তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে। মারবো কি চড়কির মতো এক মরনঝাঁপ! একবার শেষবার কমলালেবু বাগানের উড়ে আসা গন্ধে মাতাল হয়ে ছোঁব কি পাহাড়ের অতলান্ত হৃদয়!
হঠাৎ জুম্ ক্ষেত ছুঁয়ে আসা বৃষ্টি ধুয়ে দিতে লাগলো অনেকদিনের বাসি মনখানা। মনে হলো মা চোখে জলের ঝাপটা মারলো। পাগলের মতো কি করতে যাচ্ছিলাম!  বেতলাংশিপ্ বেয়ে নামতে লাগলাম দৌড়ে দৌড়ে প্রচন্ড এক দাপুটে ঝরনার মতো। এখান থেকে বাড়ি অনেক দূর, তবু সকালের আগে পৌঁছাতেই হবে বাড়িতে। রুবিক কিউবটা ব্রেন থেকে হারিয়ে গেছে।

       
               

No comments:

Post a Comment